v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-10 15:36:56    
চীনের নিং সিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সুষম শিক্ষার নতুন উপায় খুঁজে বের করছে

cri
    লিউ পাং শান মাধ্যমিক স্কুল উত্তর-পশ্চিম চীনের নিং সিয়া হুই জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী ইন ছুয়ান শহরে অবস্থিত । পাহাড়ের দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটি একটি আধা অবৈতনিক স্কুল। একে বিশেষভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এই মাধ্যমিক স্কুল হচ্ছে নিং সিয়া সরকার সুষম শিক্ষার উপায় খুঁজে বের করার একটি সফল দৃষ্টান্ত।

    স্থানীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় লিউ পাং শান মাধ্যমিক স্কুল ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই স্কুল নিং সিয়া হুই জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নয়টি দরিদ্র জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফি মওকুফ করার পাশাপাশি গ্রাম থেকে আসা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে প্রতি বছর এক হাজার ইউয়ান করে আবাসিক ভাতা দেয়। এ পর্যন্ত এই নয়টি দরিদ্র এলাকার প্রায় তিন হাজার ছাত্র-ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ হুই জাতির ছাত্র-ছাত্রী। এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ৮০ শতাংশ এসেছে গ্রাম থেকে ।

    নিং সিয়া হুই জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ছাই কুও ইং মনে করেন, সরকারের উদ্যোগে এই স্কুল গড়ে তোলার মাধ্যমে পাহাড়ের দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদেরকে অবৈতনিক শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য হচ্ছে দরিদ্র এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের সুষম শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেয়া। তিনি বলেন

    এর আগে আমরা বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। যেমন অধিবাসীদের বাসস্থান পরিবর্তন ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে উন্নয়ন ইত্যাদি । এসব উপায়ের মাধ্যমে কিছু সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যেই হয়েছে। তবে এ সমস্যা পুরপুরি সমাধানের জন্য নাগরিকদের গুণাবলী আরো উন্নত করা দরকার। এই স্কুল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হলো দরিদ্র এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নত এলাকায় আরো ভালো শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া। এসব ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো শিক্ষা গ্রহণের দ্বারা মৌলিকভাবে দারিদ্র্য বিমোচন বাস্তবায়ন করতে পারবে। আমরা মনে করি, এই উপায়ের মাধ্যমে দরিদ্র এলাকার পশ্চাত্পদ অবস্থার মৌলিক পরিবর্তন করা সম্ভব।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার দরিদ্র এলাকার শিক্ষা ক্ষেত্রে দারিদ্র্য বিমোচন কাজ জোরদার করছে, বিশেষ করে, সংখ্যালঘু জাতি এলাকার শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে চীন সরকারের নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রতি বছর ৫০ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করে দু'কোটি ছাত্র-ছাত্রীকে সাহায্য করা হয়। নিং সিয়া হুই জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়ক কার্যালয়ের উপপরিচালক চাং সিউ মনে করেন, দরিদ্র এলাকায় আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত করা এবং দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ দেয়া হল দরিদ্র লোকদের গুণাগত মান উন্নত করার প্রধান উপায়। চাং সিউ বলেছেন,

    শিক্ষা হচ্ছে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের মৌলিক উপায়। জনগণের গুণগত মান উন্নত করতে পারলেই কেবল কৃষকরা পাহাড় থেকে বাইরে এসে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং সমাজের প্রতিযোগিতায় সমানভাবে যোগ দিতে পারবে।

    মা সেং হচ্ছে লিউ পাং শান মাধ্যমিক স্কুলের একজন ছাত্র। তিনি ২০০৬ সালে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাঁর পরিবারটি খুবই দরিদ্র। সুতরাং এই স্কুলের ছাত্র হিসেবে লেখাপড়া করতে পেরে সে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করে। সে বলেছে,

    স্কুলের তুলনায় আগের স্কুলের শিক্ষকের মান বা শিক্ষার সাজ-সরজ্ঞামের এবিরাট ব্যবধান রয়েছে। এই স্কুলের শিক্ষকরা আমাদের জীবন ও লেখাপড়া ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেন। আমরা এই পরিবেশকে সযত্নে রাখছি।

    বর্তমানে লিউ পাং শান মাধ্যমিক স্কুল নিং সিয়ার দশটি দৃষ্টান্তমূলক স্কুলের একটিতে পরিণত হয়েছে। ২০০৬ সালে এই স্কুলের প্রথম দফার ছাত্র-ছাত্রীরা সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ৬০৪জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১৪জন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। ২০০৭ সালে স্কুলের ১০০৮জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৪৫জন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছে। ওয়াং ইয়ান নিং হচ্ছে স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর একজন ছাত্রী। সে আমাদের সাংবাদিককে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছে, সে পেইচিং বৈদেশিক আর্থ-বাণিজ্যিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়। সে বলেছে,

    আমার বাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এ স্কুল আমাকে শিক্ষা গ্রহণের ভালো সুযোগ দিয়েছে। আমি পেইচিং বৈদেশিক আর্থ-বাণিজ্যিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর নিজের লব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ করে আমাদের বাড়িসহ এলাকার আরো ভালো উন্নয়ন সাহায্য করতে পারবো।