বন্ধুরা, মধ্য চীনের ছাংশা শহরের সরকারী ভবনে প্রতি দিনই একজন বিদেশীকে দেখা যায়। তিনি হলেন ছাংশা শহর সরকারের প্রথম বিদেশী ক্যান্ডার লী জংতায়ে। তিনি ছাংশা শহরের ব্যবসার ক্ষেত্রে ও পুঁজি সংগ্রহ ও বিনিয়োগের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের তার সম্পর্কে কিছু কথা জানাবো।
লী জংতায়ের বয়স ৬০ বছরেরও বেশি। তিনি অবসর নেয়ার আগে দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি গ্রুপের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৫ বছর আগে তিনি এলজির একটি বিনিয়োগ পরিকল্পনার জন্য ছাংশায় এগিছিলেন। তিনি বলেন,
(রে ১)
'১৯৯৩ সালের আগষ্ট মাসে দক্ষিণ কোরিয়া ও হুনান প্রদেশের মধ্যে একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতার লক্ষ্যে আমি প্রথম বারের মত ছাংশায় আসি। আমি ছাংশায় এলজি শুকুয়াং কোম্পানির উপ অর্থ পরিচালক ও এলজি রসায়ন শাস্ত্রের ফ্লারেসেন্ট উপকরণ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করি।'
তিন বছর আগে অবসরপ্রাপ্ত হওয়া লী জংতায়ে ছাংশা শহরের সরকারের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ও বিদেশী শিল্প-প্রতিষ্ঠান সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি বলেন,
(রে ২)
'আমি কাজকে অনেক পছন্দ করি। আমি মনে করি, সঠিক কাজ হল সত্যিকারের কাজ। আমি চীনে আমার প্রিয় কাজ খুঁজে পেয়েছি। এ কাজ আমার জন্য তাত্পর্যপূর্ণ সুগভীর।'
লী জংতায়ে বলেন, তাঁর কাজ হল বিদেশী ব্যবসায়ী ও ছাংশা শহরের সরকারের মধ্যে একটি যোগাযোগের সেতু নির্মাণ করা। সমিতির শিল্প-প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ছেন ওয়ে বলেন, লী জংতায়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রচুর কার্যকর ব্যবস্থা নেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
(রে ৩)
'আমরা সুষ্ঠু পরিবেশে উত্কৃষ্ট সেবা দিয়ে কোনো কোনো বিরাট শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে গড়েতুলি। আমরা ছাংশার বিনিয়োগের পরিবেশের আরো উন্নয়ন করবো। আমাদের সমিতির সদস্য শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ব্যবসা ক্ষেত্রে পরিচালনার প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যায় পড়ে যায়, তাহলে আমরা তাদের সেসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি।'
লী জংতায়ের একজন বিদেশী হিসেবে অনেক সুবিধা রয়েছে। তিনি ছাংশায় বহু বছর ধরে আছেন ও তাঁর বিদেশী শিল্প-প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেজন্য তিনি স্থানীয় পুঁজি-বিনিয়োগের পরিবেশ, বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা সম্পর্কে অনেক জানেন। তিনি বিদেশী ব্যবসায়ীদের মনোভাব ও বুঝতে পারেন। তিনি বলেন,
(রে ৪)
'দক্ষিণ কোরিয়ার এক প্রবাদ বাক্য রয়েছে, একই রঙ অনেক সহজ। আমি চীনে একজন বিদেশী হিসেবে বিদেশী মানুষএর সঙ্গে যোগাযোগকে সহজ করি। আমি ছাংশায় বহু বছর ধরে আছি। আমি ছাংশার পরিবেশ সম্পর্কেঅনেক জানি। বিদেশী শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবিনিয়োগের সময় আমি তাদের সার্বিক পথ নির্কেশনাও দেবো।'
লী জংতায়ের প্রথম দায়িত্ব হল বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে ছাংশার কথা বর্ণনা করা। তাঁর যোগাযোগের সামর্থ্য রয়েছে। তার বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালনের এক সপ্তাহের মধ্যেই ছাংশার জন্য এক ১কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়।
ছাংশা মধ্য চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে তার পুঁজিবিনিয়োগের বিরাট সুপ্তশক্তি রয়েছে। লী জংতায়ে মনে করেন, ছাংশার ব্যবসায়ী সংগ্রহ ও ভূমি ব্যবহারের নীতি স্থিতিশীল হয়েছে। সেজন্য বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়াও, সুষ্ঠু ও সুন্দর বসবাসের পরিবেশ হল ছাংশার একটি বিশেষ সুবিধা। তিনি বলেন,
(রে ৫)
'বিদেশী ব্যবসায়ীরা এখানে বসবাসের পরিবেশ বিবেচনা করবে। যেমন শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ। ছাংশা শহরের পরিবেশ অনেক সুবিধাজনক।'
তিনি আরো বলেন, ছাংশা শহরের সরকারের বিশ্বমূখী উন্মুক্ত হওয়ার মনোভাব প্রবল। ছাংশার উন্নয়নের লক্ষ্য হল শহরটিকে একটি আন্তর্জাতিক শহরে পরিবর্তন করা। কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়, ছাংশার নাগরিকদের উচিত আরো চেষ্টা করা। তিনি বলেন,
(রে ৬)
'যেমন টেক্সি ভাড়া। বিদেশীরা প্রথমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। যদি টেক্সি অনেক পরিষ্থন্ন ও টেক্সি ভাড়ার সেবা সুষ্ঠু হয়, তাহলে বিদেশীরা ভাল অনুভাব করবে। এটি হল পুঁজিবিনিয়োগ পরিবেশের একটি অংশ।'
যদি বিদেশী ব্যবসায়ীরা ছাংশায় পুঁজিবিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সমিতি তাকে সুষ্ঠু সেবা সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দেবে। লী জংতায়ে মনে করেন, সুষ্ঠু সেবা সমিতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি অন্যান্য বিদেশী শিল্প-প্রতিষ্ঠানের ছাংশায় পুঁজিবিনিয়োগে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন,
(রে ৭)
'আমাদের উচিত বর্তমান পুঁজিবিনিয়োগকারী শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়া। বিদেশী ব্যবসায়ীরা পরিবেশ বিবেচনার সময় পুঁজি বিনিয়োগকারী শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নের পরিস্থিতি ও স্থানীয় সরকারের মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেবে। যদি এসব শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন ভাল হয়, তাহলে নতুন বিদেশী ব্যবসায়ী সংগ্রহ করা সহজ হবে।'
বিদেশী ব্যবসায়ীদেরকে পরিচালনা ও ছাংশা সরকারকে বিদেশী ব্যবসায়ী সংগ্রহে সহয়তা করা ছাড়াও লী জংতায়ে সবসময় পর্যটন ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও উন্নয়নের প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ছাংশা এখন দ্রুত উন্নত হচ্ছে। তিনি ছাংশা উন্নয়নের জন্য অবদান রাখতে ইচ্ছুক। তিনি আরো বলেন,
(রে ৮)
'১৯৯৩ সালে ছাংশা বিশ্বমূখী উন্মুক্ত হওয়ার শুরুতে আমি প্রথম বারের মত ছাংশার আসি। আমি ছাংশার ১৪ বছরের পরিবর্তন দেখেছি। আমি ছাংশার উন্নয়ন সম্পর্কেঅনেক জানি। ছাংশা শহরের অনেক উন্নতি হচ্ছে। এখন এ শহরের জীবনযাত্রা অনেক সুবিধাজনক।'
এর আগে তার দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু এখন ছাংশা থেকে সিউলে সরাসরি বিমান চালু হয়েছে। তিনি সকালে ছাংশা থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুরে সিউলে পৌঁছতে পারেন। তিনি এ সম্পর্কে বলেন,
(রে ১০)
'এখন ছাংশা থেকে সিউল ও সিউল থেকে বুশান যাওয়ার সময় মোটামোটি একই। আমি অনুভব করি, চীনের হুনান বিদেশে অবস্থিত নয়, কিন্তু নিজের প্রতিবেশীর মত।'
ছাংশার বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হচ্ছে এবং লী জংতায়ের সঙ্গেও ছাংশা শহরের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। তাঁর কাছে ছাংশা হল তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান।
লী জংতায়ের মত বিদেশী ক্যাপার হুনান প্রদেশ আরো অনেকই আছেন। পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ১ হাজারেরও বেশি বিখ্যাত্ ব্যক্তি হুনান প্রদেশের ব্যবসায়ী সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করছেন। উন্মুক্ত হুনানের দ্রুতভাবে আন্তর্জাতিকায়ন হচ্ছে।
|