v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-03 14:01:01    
প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের ঐতিহাসিক ইরাক সফর

cri
    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহামাদিনেজাদ ২ মার্চ সকালে বাগদাদ পৌঁছে তাঁর ইরাক সফর শুরু করেছেন । ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর এটা ইরাকে কোনো ইরানি প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। বাগদাদ পৌঁছানোর পর আহমাদিনেজাদকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। ইরান-ইরাক সর্ম্পক এবং ইরান ও ইরাকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সব সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি আলোচিত বিষয়। এজন্য মাহমুদ আহামাদিনেজাদের এবারকার ইরাক সফর বিশ্ব সম্প্রদায়ে কৌতূহলী । তিনি তাঁর এ সফরকে প্রতিবেশী দুটি মুসলিম দেশের ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ককে গভীর করার একটি বড় পদক্ষেপ বলে অভিহিত অভিহিত করেছেন ।

    মাহমুদ আহামাদিনেজাদ ইরাকের প্রেসিডেন্ট জালাল টালাবানি ও প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকির সঙ্গে বৈঠক করেছেন । বৈঠকের পর মাহমুদ আহামাদিনেজাদ বলেন, একটি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ ইরাক এই অঞ্চলের সকল দেশের স্বার্থের জন্য ভালো । জালাল তালাবানি বলেন, দু'দেশের মধ্যে ধারাবাহিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে । এ ছাড়া ইরাক ইরানের সরকার-বিরোধি বিদ্রোহিদেরকে সে দেশ থেকে বহিষ্কার করবে ।

   বিশ্লেষকদের ধারণা , ইরাকের সফরে মাহমুদ আহামাদিনেজাদের গুরুত্বপূর্ণ যেন কিছু উদ্দেশ্য আছে । প্রাথমিকভাবে তাঁর এই উদ্দেশ্যও বাস্তবায়িত হয়েছে । ইসলামী বিপ্লবের পর ইরাক সফররত প্রথম ইরানি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু'দেশের সম্পর্ককে একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত করা মাহমুদ আহামাদিনেজাদের প্রথম উদ্দেশ্য ।প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আট বছরব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয় । ওই যুদ্ধে দু'দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০০৩ সালে সাদ্দাম প্রশাসন উত্খাতন করা হয় এবং এর পরই দু'দেশের সম্পর্কের উন্নতির সুযোগ দেখা দেয় । আহমুদ আহামাদিনেজাদের এবারের সফর নিঃসন্দেহে দু'দেশের সম্পর্কের জন্য একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে ।

    এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব আরও বাড়ানো মাহমুদ আহামাদিনেজাদের এবারের ইরাক সফরের দ্বিতীয় লক্ষ্য। গত বছরের শেষের দিক থেকে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতর হয়ে উঠেছে । গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে প্রথম বিদেশী নেতা হিসেবে মাহমুদ আহামাদিনেজাদ উপ সাগরীয় আরব দেশগুলোর সহযোগিতা কমিশনের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন । চলতি বছর জানুয়ারী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ সংযুক্ত আরব আমিরাত , বাহরাইন , কুয়েত ও সৌদি আরব সফর করেন । সফরকালে তিনি বারবার " ইরানের হুঁমকি হয়ে ওঠার তত্ত্ব" স্মরণ করিয়ে দেন । ইরানকে এক ঘরে করে রাখাই প্রেসিডেন্ট বুশের উদ্দেশ্য।

    আহমাদিনেজাদের তৃতীয় লক্ষ্য হলো, তিনি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্য পাশ্চাত্য দেশগুলোরকে বোঝাতে চান যে ইরাক ইস্যুতে ইরান ভূমিকা পালন করতে পারে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে মার্কিন-বিরোধি শিয়া সম্প্রদায়কে ইরানের সামরিক সহায়তা প্রদানের সমালোচনা করে আসছে । কিন্তু ইরান এর সত্যতা অস্বীকার করে । গত বছর বাগদাদে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় দফা বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যায় ।গত ফেব্রুয়ারী মাসে চতুর্থ দফা বৈঠকের কথা ছিল । কিন্তু ইরান সেই বৈঠক স্থগিত করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে মাহমুদ আহামাদিনেজাদ ইরাক সফর করছেন । এতে ইরাক ইস্যুতে ইরানের গুরুত্বই প্রতিফলিত হয়েছে ।

    ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা তাঁর সফরের আরেকটি উদ্দেশ্য। চলতি মাসে ইরানে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে । এই ভোটকে তাঁর ক্ষমতাসীন হওয়ার এক বছরের ওপর একটি পরীক্ষা বলে গণ্য করা হচ্ছে। দেশে সমর্থকের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাঁর অবস্থান সুসংবদ্ধ করার জন্য মাহমুদ আহামাদিনেজাদ এ সময় ইরাক সফর করছেন । বিশ্লেষকরা মনে করেন, তাঁর চারটি উদ্দেশ্য মোটামুটি বাস্তবায়িত হয়েছে । তবে এ কথা সত্যি যে, বতর্মানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক মোটেই উন্নত হয়নি ।সুতরাং তাঁর এবারের সফর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনাসঙ্কুল সম্পর্ক আদৌ যে প্রশমিত করবে না সেটা মোটামুটি পরিস্কার ।