নব নির্মিত চীনের রাজধানী বিমানবন্দের ৩ নম্বর টার্মিনালভবন ২৯ ফেব্রুয়ারী চালু হয়েছে । জানা গেছে , এ ভবন চালু হওয়ার পর রাজধানী বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী সংখ্যা বার্ষিক ৩.৬ কোটি থেকে ৭.৬ কোটি হবে এবং আগামী আগষ্ট মাসের অলিম্পিক গেমসের সময় যাত্রী পরিবহনের চাহিদা মেটানো সম্ভবহবে । বিমানবন্দরের এ নতুন ভবনের বৈশিষ্ট্য ও যাত্রীদের অভিজ্ঞতার তথ্য সংগ্রহের জন্য আমাদের সংবাদদাতা লি লিন রাজধানী বিমানবন্দর থেকে সরেজমিন রিপোর্ট করেছেন
২৯ ফেব্রুয়ারী সকাল আটটা ৫০ মিনিটে রাজধানী বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনাল ভবন চালুর পর পূর্ব চীনের চিনান শহর থেকে পেইচিং আসা প্রথমফ্লাইটের যাত্রীরা এ নতুন ভবনে আসেন । এ ফ্লাইটের যাত্রী চান তুয়ো ছিং প্রথমবারের মতো নতুন ভবন দেখলেন । তিনি বলেন , নতুন ভবনটি বড় , ভবনের ব্যবস্থাগুলো আধুনিক এবং যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক । সুইজারল্যান্ড থেকে আসা মনিকা নতুন ভবন থেকে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইসের ফ্লাইটে লন্ডনে যাচ্ছিলেন । তিনি আগে ভাগেই বিমানবন্দরে এসে যাত্রীদের বিশ্রামাগারের ঢোকার আগে ভবনের নতুন ব্যবস্থাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলেন । তিনি বলেন , পেইচিংয়ের রাজধানী বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালভবন খুব সুন্দর একটি স্থাপত্য। এটা আমার মনে অনেক দিন গেঁথে থাকবে । ভবনটি বড় হলেও বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা- চিহ্ন স্পষ্ট, এতে যাত্রীদের বেশ সুবিধা হবে ।
রাজধানী বিমানবন্দর চীনের সবচেয়ে ব্যস্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর । গত বছর এই বিমানবন্দরে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা পাঁচ কোটি ছাড়িয়েছে । এটা বিমানবন্দরটির সামর্থ্যের চেয়েও অনেক বেশি । এ বছরের অলিম্পিক গেমসের সময়ের পরিবহন চাহিদা মেটানোর জন্য ২০০৪ সাল থেকে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প শুরু হয় । বন্দরের নতুন ভবন নির্মাণের সময় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে । যেমন নবনির্মিত ৩ নম্বর টার্মিটালভবনে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত পথ-নির্দেশক ব্যবস্থা বসানো হয়েছে । এ ব্যবস্থার কল্যানে প্রতিকূল আবহাওয়ার সময়ও বিমান অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে। ফলে প্রতিকূলআবহাওয়ার কারণে বিমান বিলম্বিত হওয়ার আশংকা অনেক কমে যাবে ।
নবনির্মিত ৩ নম্বর টার্মিনালভবনের আয়তন ৯' লাখ বর্গমিটারের বেশি । এ ভবন চালুর পর আরো ৯৯টি বিমান বিমানবন্দরে অবস্থান করতে পারবে । নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের নেতৃস্থানীয় গ্রুপের প্রধান চান কো পাও বলেন , রাজধানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প চীনে চালু হওয়া প্রথম অলিম্পিক গেমস প্রকল্প। অলিম্পিক গেমসের জন্য নির্মিত সব প্রকল্পের মধ্যে এ প্রকল্পের ব্যয় সবচেয়ে বেশি । তিনি বলেন , ৩ নম্বর ভবন চালু হওয়ার পর চীনের রাজধানী বিমানবন্দর এশিয়ার প্রথম আধুনিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে , যার তিনটি ভবন ও তিনটি রানওয়ে একই সময় কাজ করবে । প্রতি বছর এ বিমানবন্দর থেকে ৭.৬ কোটি যাত্রী আসা-যাওয়া করতে করবে , ১৮ লাখ টন মাল খালাস ও বোঝাই করা যাবে এবং বিমান ৫.৮ লাখ বার অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে । রাজধানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গেসম্পন্ন ও চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে সফল অলিম্পিক গেমসের অনুষ্ঠান নিশ্চিত হবে এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য বাড়বে ।
জানা গেছে , লাগেজ নিয়ে যাত্রীদের বিমানবন্দরে হাঁটার কষ্ট কমানোর জন্য নতুন ভবনে স্কেলেটরের দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী ও নবজাত শিশুর জন্য আলাদা বাথরুম করা হয়েছে । এ ছাড়া নতুন ভবনে চীনের দশটি প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি সাজানো হয়েছে , যাতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রীরা চীনের রাজধানী বিমানবন্দর এসেই চীনের বৈশিষ্ট্যময় সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারেন ।
|