যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সিমফনি দল --- নিউইয়র্ক ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রা ২৬ ফেব্রুয়ারী উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ং ইয়ংয়ের পূর্ব পিয়ং ইয়ং প্রধান থিয়েটার হলে তাদের ঐতিহাসিক পরিবেশনা করেছে। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোরিয়া গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর এটি হচ্ছে মার্কিন সিমফনি দলের প্রথম ঐতিহাসিক সফর। পরিবেশনাটি বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। এখন শুনুন আমাদের সংবাদদাতা চিন চিন চে ও চাং মিনের উত্তর কোরিয়া থেকে পাঠানো এ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন।
১৫০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন থিয়েটারটি দর্শকে পরিপূর্ণ। দর্শকদের তুমুল করতালির আওয়াজে বিখ্যাত নিউইয়র্ক ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রার পরিচালক লোরিন মাজেলসহ কালো রংয়ের সান্ধ্যকালীন পোশাক পড়া শিল্পীরা মঞ্চে আসেন। মঞ্চের বামদিকে উত্তর কোরিয়ার জাতীয় পতাকা উড়ছে। সিমফনি দলটি প্রথমে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে শোনায়।
তারপর লোরিন মাজেলের পরিচালনায় সিমফনি দল পর পর জার্মান সুরকার রিচার্ড ওয়াগনারের সৃষ্ট গীতিনাট্য 'লোহেনগ্রিন', চেক প্রজাতন্ত্রের সুরকার অ্যানটোনিন ভোরাকের সৃষ্ট 'নয় নম্বর সিমফনি ---নতুন পৃথিবী থেকে আসা' এবং মার্কিন সুরকার জর্জ গার্শভিনের 'প্যারিসে একজন মার্কিনী' পরিবেশন করে।
'প্যারিসে একজন মার্কিনী' পরিবেশনের আগে পরিচালক লোরিন মাজেল বলেছেন, "এখন আমরা আপনাদের জন্য বিখ্যাত মার্কিন সুরকার গার্শভিনের জনপ্রিয় সৃষ্টি 'প্যারিসে একজন মার্কিনী' পরিবেশন করবো। আশা করি, ভবিষ্যতে 'পিয়ং ইয়ংয়ে একজন মার্কিনি' নামক একটি সংগীত রচিত হবে।"
দেঢ় ঘন্টা ব্যাপী পরিবেশিত এ অনুষ্ঠানে শিল্পীরা তাদের পরিবেশনায় নিবিষ্ট ছিলেন। প্রতিটি সংগীত বাজানোর পর দর্শকরা দীর্ঘ সময় ধরে করতালি দিয়ে তাদের সম্মান জানায়। আনুষ্ঠানিক পরিবেশনার পর দর্শকদের স্থায়ী ও তুমুল করতালির আওয়াজের অনুরোধে সিমফনি দলটি আরো তিনটি অতিরিক্ত সিমফনি পরিবেশন করে। সর্বশেষ পরিবেশনাটি ছিল কোরিয় জাতির জনপ্রিয় লোকসংগীত 'আরিরাং।
'আরিরাং' এর মনোরম ও করুণ সুর দর্শকদের হৃদয়-মন স্পর্শ করে যায়। এর মাধ্যমে এবারে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রথম বারের মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক বিনিময় তত্পরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সুরকার হান সুং পরিবেশনা উপভোগের পর বলেছেন, 'আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফিলহারমোনিক অর্কেস্ট্রার পরিবেশনা দেখে আমরা খুব খুশি। প্রতিটি সংগীতের মাধ্যমে তারা শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তির কৌশল দেখিয়েছেন। পরিবেশনা সত্যিই চমত্কার।'
এবারের পরিবেশনা দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য মাধ্যমগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ুনহাপ বার্তা সংস্থার ২৬ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত একটি ভাষ্যে বলা হয়েছে, এবারের ঐতিহাসিক পরিবেশনার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া বিশ্বের কাছে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
|