২০০৭ সালের ২৭ নভেম্বর, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট মধ্য-প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত অ্যানেপোলিস সম্মেলনে বলেছিলেন, ইসরাইল--ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় দু'পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চুক্তি, জাতিসংঘ প্রস্তাব এবং মধ্য-প্রাচ্যের শান্তির রোড ম্যাপকে ভিত্তি হিসেবে নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে সকল বিষয়ে আলোচনা হবে।
২০০৩ সালের ৩০ এপ্রিল জাতিসংঘ, ইইউ, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ সমাধানে মধ্যপ্রাচ্য শান্তির রোডম্যাপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
রোড-ম্যাপে প্রধানত তিনটি ধাপ অন্তর্ভূক্ত করা হয়ঃ প্রথম ধাপে (পরিকল্পনা প্রকাশের দিন থেকে মে মাস পর্যন্ত) ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হবে। এ ছাড়া ফিলিস্তিন সন্ত্রাসবাদের ওপর আঘাত হানা ছাড়াও, সার্বিক রাজনৈতিক সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইসরাইলের সঙ্গে সহযোগিতা করবে। ইসরাইল ২০০০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের পর অধিকৃত ফিলিস্তিনী ভূ-ভাগ থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নেবে। ইহুদী বসতি এলাকার নির্মাণ কাজ বন্ধ করা এবং ২০০১ সালের মার্চ মাসের পর নির্মিত ইহুদি বসতি এলাকা ভেঙে ফেলা এবং ফিলিস্তিনীদের স্বাভাবিক জীবন পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবে ইসরাইল। দ্বিতীয় ধাপে (২০০৩ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত) অন্তর্বর্তীকালীণ সময়ের জন্য ২০০৩ সালের শেষ নাগাদ একটি অস্থায়ী সীমান্ত নির্ধারন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এর পর থেকে দুই বছর সময়কাল হচ্ছে তৃতীয় ধাপ। এ পর্যন্ত রয়েছে ২০০৫ সালে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের চূড়ান্ত অবস্থান সংক্রান্ত আলোচনা শেষ করা এবং চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
রোড-ম্যাপ পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্য, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শীর্ষ নেতারা বার বার বৈঠক করেছেন। ফিলিস্তিনের চরমপন্থী সংস্থাও যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলো। কিন্তু ইসরাইল কট্টর নীতিতে অবিচল থাকার কারণে আবারো ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষ শুরু হয় এবং শান্তি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি বৈঠক বন্ধ হয়ে যায় এবং 'রোড-ম্যাপ' কর্মসূচী স্থগিত করা হয়।
এর পর ইসরাইল তার একতরফা পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০০৫ সালের আগস্ট মাস থেকে গাজা এলাকা থেকে প্রত্যাহার করলেও একতরফা শান্তির 'রোড-ম্যাপ'-এর সঙ্গে এর প্রায় কোনো সম্পর্কই নেই।
|