২০০৭ সালের ৩১ মে তুষার শহরের প্রাচীন স্থাপত্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত হবার পর, অনেক দেশী-বিদেশী পর্যটক সেখানে গেছেন। প্রতি দিন পুতালা ভবনের তুষার শহরের ফটক থেকে অনেক মানুষকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে দেখা যায়। টিকিট অফিসের কর্মী ছি রেন আনন্দের সঙ্গে সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন—
প্রতি দিন কয়েকশ' মানুষের পাশাপাশি অনেক ইউনিট, বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয় দল বেধে পরিদর্শনের জন্য যোগাযোগ করে। তিব্বতে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ভেতরের ও বাইরের পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি।
এখন তুষার শহরের প্রাচীন স্থাপত্য লাসার নতুন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এটি এখন তিব্বতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রদর্শনের নতুন জানালা। পর্যটকরা সেখানকার গতিবিধি, প্রদর্শনী এলাকায় তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, থাং কা, মাটির ভাস্কর্য ও উঁচু পার্বত্যাঞ্চলের বার্লি থেকে মদ তৈরীর প্রক্রিয়া দেখতে পারেন। এতে গভীর ও প্রাণবন্তভাবে তিব্বতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বোঝা যায়। এছাড়াও তুষার শহরে যে সব দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলো হচ্ছেঃ স্যুয়ে বা লিয়ে খোং। এটি প্রাচীন তিব্বতের স্থানীয় সরকারের কার্যালয়। তুষার শহরের কারাগার। তা ছিল পুরনো তিব্বতের স্থানীয় সরকার কর্তৃক বন্দীদেরকে আটক করে রাখার ও বধ করার স্থান। পুরনো তিব্বতের স্থানীয় সরকারের মুদ্রা তৈরির স্থান। সেখান থেকে প্রাচীন তিব্বতের আর্থিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কেও ধারণা করা যায়। খান সু ঘর ও লোং সিয়া ঘর ছিল পুরোহিত কর্মকর্তা ও অভিজাত মানুষের বাড়ি। ক্লান্ত হয়ে পড়লে পর্যটকরা ছিয়াং ছাং নামের একটি মদঘরে বসতে পারেন। খ্রিস্টাব্দ ১৭ শতাব্দীর শেষ দিকে পুতালা ভবন পুনর্গঠনের সময় এই মদ ঘর নির্মিত হয়। এখন এটিকে বার্লি মদ তৈরীর প্রক্রিয়া প্রদর্শনের জায়গায় রূপান্তর করা হয়েছে। পর্যটকরা স্থানীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ছোট ছোট দরবারী যন্ত্র সঙ্গীত পরিবেশনা উপভোগ করতে পারেন। পেইচিং থেকে আসা পর্যটক ওয়াং লি সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন, তুষার শহর পরিদর্শন করে তিনি তিব্বতের কয়েক দশকের উন্নয়ন ও পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পেরেছেন। তিনি বলেছেন—
তুষার শহর পরিদর্শনের পর, পুতালা ভবনের প্রতি আমার উপলব্ধি আরো গভীর হয়েছে। আমি একটি পূর্ণ, বাস্তবসম্মত ও ঐতিহাসিক পুতালা ভবন দেখতে পেয়েছি।
বন্ধুরা, নতুনভাবে উন্মুক্ত তুষার শহরের দর্শনীয় স্থানে 'তিব্বতের সাধারণ অবস্থা', 'স্থানীয় মুদ্রা', 'স্থাপত্য', 'পুতালা ভবন সংরক্ষণ', 'তিব্বতের ক্যালিগ্রাফি বা হস্তলিখন শিল্প' এবং 'তিব্বতী ভাষা লেখার জিনিস'-এই ৬টি বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। তুষার শহরে পর্যটকরা নিজে থেকেই তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য আহরণ করতে পারেন। তুষার শহরের টাকশালে মানুষ তিব্বতীয় মুদ্রার পরিবর্তনের ইতিহাসও দেখতে পারেন। বি সি, খান সু, থোং বো ও লোং সিয়া চারটি সরকারী বাসভবন খুলে দেওয়ার কারণে, পর্যটকরা সুশৃঙ্খলভাবে তিব্বতের পুরনো জীবন পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারবেন এবং তিব্বত-হান জাতির সাংস্কৃতিক যোগাযোগও বুঝতে পারবেন।
বন্ধুরা, এখন আমি তুষার শহরে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আপনাদেরকে কয়েকটি টিপস দিচ্ছি। তুষার শহর পুতালা ভবন খুব কাছে। আপনারা পুতালা ভবনে বেড়াতে গেলে অবশ্যই জায়গাটি দেখে আসবেন। তুষার শহরের টিকিটের দাম ৩০ ইউয়ান। টিকিট অফিসটা পুতালা ভবনের দক্ষিণ ফটকে অবস্থিত। আপনারা পর্যটক সেবা কেন্দ্রে হাই-ডেফিনিশন প্রামান্যচিত্রে ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে পুতালা ভবনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেখতে পারবেন। একই সময় প্রায় ১শ' মানুষ এই কেন্দ্রে বসতে পারে। বর্তমানে পর্যটক সেবা কেন্দ্র খোলা থাকে সকাল সাড়ে ৮টা থকে বিকালে ৪টা পর্যন্ত।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানটি এখানই শেষ করছি। শোনার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আগামীতে আবার দেখা হবে অন্য কোন দর্শনীয় স্থান থেকে।
|