v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-02-12 19:12:49    
চীনের অষ্টম নাট্য ও সংগীত উত্সব হুপেই প্রদেশে শেষ হয়েছে

cri
    চীনের অষ্টম নাট্য ও সংগীত উত্সব সম্প্রতি মধ্য চীনের হু পেই প্রদেশে শেষ হয়েছে । এ উত্সবে সমগ্র চীনের মঞ্চনাটক ও নানা ধরনের অপেরা পরিবেশিত হয়েছে ।

    ৫ নভেম্বর থেকে হু পেই প্রদেশের ৩০টিরও বেশি থিয়েটারে চীনের বিভিন্ন জায়গার অপেরা পরিবেশন শুরু হয় । এ সব অপেরা চীনের মঞ্চনাটক ও অপেরার সর্বোচ্চ পুরস্কার ' উন হুয়া ' পুরষ্কার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে ।

    ছুয়ান অপেরা হল পশ্চিম চীনের সি ছুয়ান প্রদেশে প্রচলিত স্থানীয় অপেরা । উত্সবে চেন তু প্রদেশের ছুয়ান অপেরা থিয়েটার বিদেশের একটি মঞ্চনাটকের ভিত্তিতে ছুয়ান অপেরায় রুপান্তরিত করে মঞ্চস্থ করেছে । এ অপেরার নামঃ 'ইয়োহাই খুয়ান ছাও'। এ অপেরার কাহিনী হলঃ প্রাচীন চীনের একটি ধনী পরিবারে লোভী বাবা পাই লাও থৌ নিজের ছেলেকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করে অনেক সম্পদ সঞ্চয় করে । পরে বাবা আবার একটি সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে আরেকটি ছেলে পায় । সে আশা করে তার ছোট ছেলে তার উত্তরাধিকারী হবে । এ অপেরায় ধনসম্পত্তি নিয়ে পরিবার-পরিজনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিরোধ পুরোপুরিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে । যদিও এ অপেরার কাহিনী প্রাচীনকালের , তবে আধুনিক সমাজে এ ধরনের দ্বন্দ্বও বিরোধ কম নয় । এ অপেরা দর্শকদের আন্তরিক প্রশংসা পেয়েছে । ছিংচাও নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এই প্রথমবার ছুয়ান অপেরা দেখল । তার জন্মস্থান হোনান প্রদেশ , তিনি হুপেই প্রদেশে পড়াশুনা করছেন । তিনি বলেন , যদিও অপেরাটি তার জন্মস্থানের ইয়ু অপেরার স্টাইলের মতো নয় , তবে এ অপেরায় শিল্পীর অভিনয় ও কথাগুলো আমি পছন্দ করি । অপেরাটি উপভোগের সময় আমি বার বার হেসেছি , তবে কোনো কোনো কথা শুনে আমার কান্নাও পেয়েছিল । তিনি বলেন , এ অপেরার কাহিনী ও কথাগুলো হাস্যকর । দেখার সময় আমি অনেকবার হেসেছি । তবে কাহিনীটি বিয়োগান্তক । অপেরা শেষে অনেক দর্শকই কেঁদেছেন । এ অপেরার মঞ্চসজ্জা ও আলোকসজ্জাও ভালো । এতে কিছু উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়েছে ।

    ছিনচাও আরো বলেন , এবার আমি বেশ কয়েকটি অপেরা দেখেছি । আমার ধারণা ছিল ঐতিহ্যিক অপেরা দেখতে বেশি সময় লাগে , অভিনেতা-অভিনেত্রীর অভিনয় নিস্তেজ , তাই আমি পছন্দ করতাম না । এবার আমি লক্ষ্য করেছি ঐতিহ্যিক অপেরায় শিল্পীর অভিনয় উন্নত হয়েছে , মঞ্চের আলো , শিল্পীর জামা -কাপড় বেশ সুন্দর । তাই ঐতিহ্যিক অপেরা সম্পর্কে আমার ধারণা পাল্টে গেছে ।

    অল্পবয়সী দর্শকদের আকর্ষণ করা এবং যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য সৃষ্টির জন্য এ উত্সবে পরিবেশিত স্থানীয় ঐতিহ্যিক অপেরার অনেক পরিবর্তন হয়েছে । ছু অপেরা হু পেই প্রদেশের একটি প্রধান অপেরা । এ অপেরার দেড় শ' বছরের ইতিহাস রয়েছে । যুব দর্শকদের মধ্যে ঐতিহ্যিক অপেরাগুলোর প্রভাব বজায় রাখা ঐতিহ্যিক অপেরাগুলো প্রসারেরএকটি অভিন্ন সমস্যা । হু পেই প্রদেশের উ হান ছু অপেরা থিয়েটার যুবক-যুবতীদের চাহিদা অনুসারে ' সান ইউয়ে ছা সিয়ান ' নামে একটি ছু অপেরা তৈরী করে । এ অপেরায় গত শতাব্দীর ত্রিশ ও চল্লিশ দশকের একটি গ্রামীন মেয়ের প্রেমের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে । এ মেয়ে নিজের জন্মস্থান থেকে চা নিয়ে উ হান শহরে তার প্রেমিক থিয়েন ছেনকে দেখতে যান । মেয়েটি আশা করে প্রেমিককে বিয়ে করবে । শহরে গিয়ে সে জানতে পারল তার প্রেমিক আর তাকে ভালোবাসে না । সে টাকা ও পদের জন্য নিজের সততা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে খারাপ কাজ করতে দ্বিধা করছে না । সে এক লোভীব্যবসায়ী হয়েছে । এ অপেরার পরিচালক ছেন উয়ে বলেন , স্থানীয় বৈশিষ্ট্য , সুন্দর সংগীত , ও বাস্তব তাত্পর্যসম্পন্ন কাহিনী দর্শকদের এ অপেরা পছন্দ ও প্রশংসা করার কারণ । তিনি বলেন , এ অপেরায় দর্শকরা পুরনো হান খৌ শহরের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে । দর্শকরা মঞ্চ থেকে কয়েক যুগ আগে হান খৌ শহরের নদীর তীরের জাহাজ ঘাটা , স্টীমার ও রাস্তাঘাট দেখতে পারেন । এ অপেরায় স্থানীয় অপেরার বৈশিষ্ট্য দেখানোর পাশাপাশি কিছু গীতিনাট্যের উপাদানও মেশানো হয়েছে। অপেরার সংগীত শ্রুতিমধুর ।

    ছেন উয়ে আরো বলেন , দর্শকদের চাহিদা মেটানোর জন্য ঐতিহ্যিক অপেরার স্টাইলের কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন । ৭০ বছর বয়সী সুরকার হু সিং বলেন , যদি একজন সুরকার সবসময় নিজের স্টাইলে অটল থেকে সুরের কিছু পরিবর্তন না করে , তাহলে শ্রোতা সংখ্যা কমে যাবে । বেশির ভাগ দর্শক ও শ্রোতা নতুন কিছু জিনিস অপেরায় বা নাটকে দেখতে চায় । আধুনিক যুগের দর্শকরা মনে করেন সৌন্দর্য উপভোগ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । তাই আমাদের উচিত ঐতিহ্যিক অপেরায় কিছু নতুন উপাদান মেশানো হবে ।

    চীনের বিভিন্ন স্থানের সংস্কৃতি তুলে ধরা এবং শিল্পী দলগুলোর প্রসার তরান্বিত করা বর্তমান উত্সবের উদ্দেশ্য । চীনের অষ্টম নাট্য ও সংগীত উত্সবে নাটক , অপেরা ও গীতিনাট্যসহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে ।

    সিংচিয়ান স্বায়তশাসিত অঞ্চলের গীতিনাট্য দল ২০০৪ সালের শেষ দিকে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ' পিনসান শানতে লেইখো '-এর ভিত্তিতে রচিত একটি গীতিনাট্য পরিবেশন করেছে । এ গীতিনাট্যে মঞ্চের সুন্দর সুন্দর লোকনৃত্য উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে ' ফুল এত সুন্দর কেন ' ও ' সহযোদ্ধার স্মরণের' মতো দশর্কদের পরিচিত সংগীত শুনে দশর্করা শিল্পীদের সঙ্গে গাইতে শুরু করেন । এ গীতিনাট্যের এক শ'টি পরিবেশনা সম্পন্ন হয়েছে । এ থিয়েটারের প্রধান নাসলেট ওয়াজিদি বলেন , পশ্চিম ইউরোপের গীতিনাট্যের তুলনায় চীনের গীতিনাট্যের নিজের বৈশিষ্ট্য রয়েছে । চীনের গীতিনাট্যের বৈশিষ্ট্য হলো বিষয়গুলো দশর্কদের পরিচিত এবং সহজেই বোধগম্য । তিনি আরো বলেন , ঐতিহ্যিক অপেরার তুলনায় গীতিনাট্য আরো আধুনিক , এটা দশর্কদের সৌন্দর্য উপভোগের আগ্রহ মেটাতে পারে । আমি মনে করি উত্কৃষ্ট ঐতিহ্যিক অপেরার ভিত্তিতে রচিত গীতিনাট্য দশর্করা পছন্দ করবে ।