v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-02-13 20:52:00    
পেইচিং অলিম্পিকের জন্যে তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণদের প্রত্যাশা

cri

    কিছুদিন আগে তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের ৪ শ'রও বেশি তরুণ-তরুণী চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে সমবেত হয়েছে । তারা পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পরীক্ষামূলক প্রতিযোগিতার স্টেডিয়াম , পাতালিং মহাপ্রাচীর ও ইউয়ান মিং ইউয়ান পার্কের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন করেছে । তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীরা পেইচিং অলিম্পিক গেমসে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে চায় ।

     টেবিল টেনিস হচ্ছে চীনের জাতীয় খেলা বলে পরিচিত । অধিকাংশ তরুণ-তরুণী এ খেলাকে পছন্দ করে । একদিন একটি বিশেষ ধরণের প্রতিযোগিতা চলছিল ।

    জোর করে আঁকড়ে ধরো । তুমি টেবিলের আর একটু কাছে দাঁড়াও । তোমার হাত একটু উঁচুতে রাখো । আচ্ছা , একটু চেষ্টা করো । ঠিক আছে , তুমি বুঝতে পেরেছো । ২০০৮ সালে পেইচিংয়ে আসার জন্যে তোমাকে স্বাগত জানাচ্ছি । বাড়িতে ফিরে আরো ভালো করে চর্চা করো । তুমি পেইচিংয়ের প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে পারবে । কারণ এ গেমসে টেবিল টেনিস থাকবে ।

    এসব কথা বলেছেন চীনের প্রখ্যাত টেবিল টেনিস খেলোয়াড় তেং ইয়া পিং । তিনি একটানা দুবার অলিম্পিক গেমসের টেবিল টেনিসের এককে শিরোপা অর্জন করেছেন । বর্তমানে তিনি পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির বাজার উন্নয়ন বিভাগে কাজ করেন । এদিন যার সংগে তিনি খেলছিলেন , সে কোনো শক্তিশালী খেলোয়ার ছিল না । সে তাইওয়ান প্রদেশ থেকে আসা একজন প্রতিবন্ধী ছেলে । নাম তার হু সিয়াং ছুন ।

    এদিন হু সিয়াং ছুন চীনের বিখ্যাত খেলোয়াড় তেং ইয়া পিংয়ের সংগে খেলায় নামল । প্রথম দিকে সে একটু অপ্রস্তুত ছিল । তার হাতও কাঁপছিল । সে শুধু ভাবতে লাগল , কেমন করে তেং ইয়া পিংয়ের মোকাবিলা করবে । তবে তেং ইয়াং পিংয়ের মধুর হাসি ও আশেপাশের তরুণদের অনুপ্রেরণায় সে হাল্কাভাবে তেং ইয়া পিংয়ের বল বিপরীত দিকে ঠেলে দিল । সংগে সংগে করতালি ও হর্ষধ্বনি উঠেছিল খেলার হলে । হু সিয়াং ছুনও মহা খুশীতে আত্মহারা হয়ে গেল । সে বলেছে ,

    আমি খুব আনন্দিত হয়েছি । । বিখ্যাত টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ের সংগে খেলতে পেরে আমি গর্ব বোধ করছি। আমি আশা করি , আমি পেইচিং প্রতিবন্ধী গেমসে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবো ।

    তরুণ-তরুণীদের জন্যে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের সাক্ষাত পাওয়া সত্যিই আনন্দের ব্যাপার । অবশ্যই এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে । তেং ইয়া পিংয়ের স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্যে সবাই তার চার পাশে ভীড় জমাল । এক পর্যায়ে তাদের খাতায় নাম লেখার আর জায়গা ছিল না । তারা তেং ইয়া পিংয়ের কাছে নিজেদের টি-শার্টে স্বাক্ষর দেয়ার অনুরোধ করল । এ স্বাক্ষর সংগ্রহের মধ্য দিয়ে তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীদের ব্যবধান অনেক লাঘব হয়েছে ।

    পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চাং ফোং আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন , সে এখন ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের একজন স্বেচ্ছাসেবক হয়েছে । অলিম্পিক গেমস চলার সময় সে চিকিত্সা সংক্রান্ত ইংরেজী অনুবাদের সেবা প্রদান করবে । এর আগেও সে বেশ কয়েকবার তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীদের আদান-প্রদানের তত্পরতায় অংশ নিয়েছে । প্রতিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরার পর সে সবসময় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পুরনো ও নতুন বন্ধুদের সংগে কথাবার্তা বলেছে । সে বলেছে ,

    প্রতিবার আমি তাইওয়ান প্রদেশ থেকে আসা বন্ধুদের সংগে গল্প গুজব করি । কারণ আমরা সবাই যুবক । অবশ্য আমাদের মধ্যে ভিন্ন ধারণা থাকতে পারে । তাতে কিছু যায় আসে না । আমি এ ধরণের অভিজ্ঞতা পছন্দ করি । এসব তত্পরতার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে ।

    পেইচিংয়ে অবস্থানকালে চীনের অলিম্পিক কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ওই চি চুং ও পেইচিং অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চিয়াং সিয়াও ইয়ু তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীদের কাছে অলিম্পিক গেমসে চীনের যোগ দেয়ার ইতিহাস , অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক দেশ হওয়ার জন্যে চীনের প্রচেষ্টার গতিধারা এবং পেইচিং অলিম্পক গেমসের জন্যে চীনের প্রস্তুতির অগ্রগতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন । তারা পেইচিংয়ে নির্মিয়মান বিভিন্ন স্টেডিয়ামও পরিদর্শন করেছে । নিজেদের মাতৃভূমিতে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের সুযোগ পাওয়া তাইওয়ান প্রণালীর তরুণ-তরুণীদের জন্যে সত্যিই একটি গৌরবের বিষয় । তারা পেইচিং এসে প্রথম কিস্তিতে অলিম্পিক গেমসের স্টেডিয়াম পরিদর্শন করার সুযোগ পেয়ে আরো আনন্দিত । একদিন তারা উ খে সুং স্টেডিয়ামে অলিম্পিক বেস বল পরীক্ষামূলক প্রতিযোগিতা উপভোগ করে । মূলভূখন্ডের ছাত্রছাত্রীরা বেস বল সম্পর্কে বেশি জানে না । তাইওয়ান প্রদেশ থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা উত্সাহের সংগে তাদের জন্যে ব্যাখ্যা করে । তারা মিলিতকন্ঠে চীনা দলের খেলোয়াড়দেরকে উত্সাহ দেয় ।

    পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্বেচ্ছাসেবক হওয়া অনেক তরুণ-তরুণীর আকাংক্ষা । তাইওয়ান প্রদেশের ছাত্রী চেং সু ইয়া এখন পেইচিং চীনা চিকিত্সা ও ওষুধ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে । পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্বেচ্ছাসেবক হতে না পেরে সে দু:খ প্রকাশ করেছে । সে বলেছে ,

    বস্তুত আমি দেরীতে খবর পেয়েছি । পরে আমি হংকং , ম্যাকাও ও তাইওয়ান কার্যালয়ে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্যে দরখাস্ত করেছি । তবে আমি সফল হই নি ।

    দীর্ঘদিন ধরে মূলভূখন্ডের তরুণ-তরুণীরা টেলিভিশনের মাধ্যমে তাইওয়ানের নানা ধরণের তথ্য পেয়ে থাকে । এবার তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীরা সামনাসামনে বসে আলাপ করার সুযোগ পেয়েছে । মেলামেশার মধ্য দিয়ে ব্যবধান সত্বেও অল্প দিনের মধ্যে তারা কাছাকাছি আসতে পেরেছে ।

    মাতৃভূমিতে আসার পর তাইওয়ান প্রদেশ থেকে আসা যুবক-যুবতীরা মূলভূন্ডের উন্নয়ন তাদের দৃষ্টিকে প্রসারিত করেছে । তাইওয়ান শিল্পকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য বিভাগের তরুণ অধ্যাপিকা মাদাম লিউ হুয়া বলেছেন ,

    আমি আশা করি , আমাদের দুই পারের মধ্যে নাট্য সংস্কৃতির বিনিময় হবে । আমি নাটক পড়েছি । এখন নাটক পরিচালনা করি । পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও আমার গভীর আগ্রহ রয়েছে । এবার মূলভূখন্ডে এসে আমি অনেককিছু শিখেছি ।

    চীনের বিখ্যাত খেলোয়াড় তেং ইয়া পিং তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের তরুণ-তরুণীদের পক্ষ থেকে পেইচিং অলিম্পিকের জন্যে শুভ কামনা করেছেন । তিনি বলেন ,

    এক শ' বছর ধরে আমরা অলিম্পিক গেমসের জন্যে স্বপ্ন দেখে আসছি । চীনাদের জাতীয় মানসিক ভাবমূর্তি প্রদর্শনের জন্যে তরুণ-তরুণীদের নিজেদের দায়িত্ব বহন করতে হবে ।