v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-02-11 18:39:48    
সানছিন মৈত্রী পুরস্কার প্রাপ্ত জাপানী শিক্ষক কোইতে ইউজো

cri
    পশ্চিম চীনের শান সি প্রদেশের রাজধানী সিআন শহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন জাপানী শিক্ষক কোইতে ইউজো। গত শতাব্দীর নব্বই-এর দশক থেকে তিনি তিনবার চীনে এসে চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার দ্রুত উন্নয়নকে স্বচোখে দেখেছেন। জাপানী ভাষা শিক্ষাদানের বিদেশী বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি স্থানীয় শিক্ষা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। গত বছর তিনি শানসি প্রদেশের বিদেশীদের দেয়া "সানছিন মৈত্রী পুরস্কার" পেয়েছেন। আজকের শিক্ষার আলো অনুষ্ঠানে আমি কোইতে ইউজোর সেই গল্প বলবো।

    কোইতে ইউজো জাপানে কয়েকটি সরকারী মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি শিক্ষক, শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ও হেড মাস্টারের দায়িত্ব পালন করতেন। জাপানের শিক্ষা মহলে তিনি জনপ্রিয় ও বিরাট সাফল্য অর্জন করেছেন। গত ১৫ বছরে কোইতে ইউজো তিন বার চীনে এসে কাজ করেছেন।

    প্রথমবার চীনে শিক্ষাদানের সময়ে তিনি চীনের সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতায় ১৯৯৫ সালে সিআন আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলেন। তিনি এই ইনস্টিটিউটের জাপান পক্ষের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এই ইনস্টিটিউটের উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিকায়নের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র প্রতিভার প্রশিক্ষণ প্রদান, ছাত্র-ছাত্রীদের স্বভাবের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের গুণাবলী ও উদ্ভাবনের সামর্থ্যকে গুরুত্ব দেয়া।

    দ্বিতীয়বার কোইতে ইউজো চীনে এসে তার আর্থিক সহায়তায় শানসি প্রদেশের বাও চি শহরের মেই জেলায় একটি আশা প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই স্কুল ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এখনো মেই জেলার এই স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্য তাঁর মনে জাগ্রত রয়েছে। তিনি বলেছেন,

    স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের দিনে গ্রামের সকল লোক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তা দেখে আমি খুব বিস্মিত হই।

    ২০০৫ সালে কোইতে ইউজো তৃতীয় বার চীনে আসেন। এবার তিনি সিআন বিদেশী ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে শিক্ষা দিচ্ছেন। এখন তিনি সিআন বিদেশী ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী বিশেষজ্ঞ ভবনে বসবাস করেন।

    কোইতে ইউজোর বয়স ৬৭ বছর । তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, ১৯৪৫ সালে আগ্রাসী জাপানী যুদ্ধ শেষে দু'হাজার আট শোরও বেশি জাপানী শিশু চীনে পরিত্যক্ত হয়। চীন ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবার পর চীন সরকার এসব পরিত্যক্ত শিশুদের আত্মীয় -স্বজনদের খুঁজে বের করার জন্য ব্যাপক সাহায্য করেছে। এ পর্যন্ত দু'হাজার পাঁচ শোরও বেশি পরিত্যক্ত শিশু জাপানে ফিরে যেতে পেরেছে।

    আগেও কোইতে ইউজো চীনা কৃষকদের জাপানী পরিত্যক্ত শিশুদের পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণের কথা শুনেছেন। চীনাদের উদারতা ও সহৃদয়তা তাঁর মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। সুতরাং তিনি চীনে এসে চীনাদের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন।

    জাপানী পরিত্যক্ত শিশুর ঘটনা আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। একজন জাপানী হিসেবে চীনের জন্য কিছু অবদান অবশ্যই রাখা উচিত। চীনে শিক্ষাদানের সময় আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি।

    তাঁর চীনা ছাত্র-ছাত্রীর জাপানী ভাষা উন্নত করার জন্য কোইতে ইউজো যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তিনি বলেছেন,

    জাপানে আমি ৩৫ বছর ধরে জাপানী ভাষা পড়িয়েছি। বর্তমানে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানী ভাষা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জাপানী ভাষার মান জাপানের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মানের মত। সুতরাং আমি জাপানের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের বই অনুযায়ী শিক্ষাদান করছি। চীনা ছাত্র-ছাত্রীরাও আমার শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে।

    কোইতে ইউজো আমাদের সাংবাদিককে বলেছেন, বর্তমানে তাঁর বহু চীনা ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তারা কিছু সাফল্যও অর্জন করেছে। ইতোমধ্যেই তাঁর একজন ছাত্র চীনে অনুষ্ঠিত সারা দেশের জাপানী ভাষা বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার লাভ করেছে।

    কোইতে ইউজো শানসি প্রদেশের শিক্ষা কর্মে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার কারণে ২০০৭ সালে শানসি প্রদেশ তাঁকে বিদেশীদের দেয়া সর্বোচ্চ পুরস্কার---সানছিন মৈত্রী পুরস্কার দিয়েছে। এই পুরস্কার লাভ করার অনুভূতি প্রকাশের সময় তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেন, 

    এই পুরস্কার লাভ করায় আমি খুব খুশি। আমি বিশেষ কোনো অবদান রাখি নি। চীনারা আমাকে যথেষ্ট সহায়তা করছে।

    তিনি আরো বলেছেন, আমি আশা করি, চীন ও জাপানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো গভীর ও দৃঢ় হবে। দু'দেশের জনগণের সমঝোতা ও মৈত্রী জোরদার করার জন্য তিনি অবহ্যাতভাবে অবদান রেখে যাবেন।