v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-02-04 21:03:30    
চীনের ডোমেস্টিক প্লেন উত্পাদনের সহযোগিতার অংশীদারি

cri
রোবার্টো রোসি দ্য সুজা দেখতে ঠিক একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মত। কিন্তু একজন জেনারেল ম্যানেজার। তিনি বলেন, অনেক দিন আগে থেকেই তাঁর চীনে আসার প্রত্যাশ্যা ছিল। তিনি প্রাচীন ইতিহাস ও বিরাট লোকসংখ্যা অধ্যুমিত চীন দেখতে চান। কিন্তু অনেক বছর পর তার এ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি চীনের সবচেয়ে ঠান্ডা প্রদেশ হেইলুংচিয়াংয়ে আসেন। এখন পর্যন্ত তিনি চীনে দু'বছরের সুন্দর সময় কাটাচ্ছেন।

তিন বছর আগে ব্রাজিল এয়ার লাইন্স কোম্পানি চীনের হার্বিন বিমান উত্পাদিত গ্রুপের সঙ্গে হার্বিন এমব্রায়ের এয়ার ক্র্যাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। এটি হল চীনের ব্রাজিলের সঙ্গে বিমান উত্পাদন ক্ষেত্রের প্রথম বারের মত সহযোগিতা। রোবার্টো একজন প্রকোশালী হিসেবে এ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর আগে ব্রাজিল এয়ার লাইন্স কোম্পানি চীনের ডোমেস্টিক প্লেনের ওপর বাজারে গবেষণা করেছে। রোবার্টো চীনে ক্রমান্বয়ে বাড়ানো ডোমেস্টিক প্লেনের চাহিদার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত। এ বিরাট বাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনে তিনি অনেক চ্যালেন্ঞ্জের সম্মুখীন হবেন। তিনি আরো বলেন, 'তুলনা কবনে দেখা যায়, চীনের ডোমেস্টিক প্লেনের বাজার অনেক বিরাট। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার লাইনের ৪০ শতাংশ হল ডোমেস্টিক প্লেন। কিন্তু চীনের ডোমেস্টিক প্লেন শুধু শতকরা ৭ ভাগ। সেজন্য চীনের ডোমেস্টিক প্লেন বাজারের বিরাট সুপ্তশক্তি রয়েছে। আমরা মনে করি, চীনের বিমান পরিবহন শিল্পে এখন থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন হবে। এটি হল ব্রাজিল এয়ার লাইন্স কোম্পানি ও হার্বিন বিমান উত্পাদন গ্রুপের মতৈক্য।'

রোবার্টো মনে করেন, আধুনিক প্রযুক্তি হল হার্বিন বিমান উত্পাদন গ্রুপের ব্রাজিল চীনের সঙ্গে হার্বিনে যৌথভাবে কারখানা নির্মাণের একটি গরুত্বপূর্ণ কারণ। তিনি বলেন, 'এ ক্ষেত্রে আমাদের কোম্পানির দু'টি সামর্থ্য রয়েছে। আমাদের হার্বিনে কারখানা নির্মাণের কারণ হল হার্বিন বিমান উত্পাদন কোম্পানির স্থাপনা ব্যবহার করতে পারা। এটি খুবই সুবিধাজনক। হার্বিনের ঐতিহ্যিক বিমান উত্পানের ইতিহাস রয়েছে। হার্বিন বিমান উত্পাদন গ্রুপের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমরা এখানে যথাযথ প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা খুঁজতে পারি।'

এ সব ভিত্তিতে চীন ব্রাজিলের সঙ্গে ৬ বছর আগে এক চুক্তি স্বাক্ষর করে। তখন থেকে চীন বিদেশের সঙ্গে ডোমেস্টিক প্লেন উত্পাদনের প্রথম সহযোগিতা শুরু করে। সহযোগিতার শুরুতে রোবার্টো মনে করেন, প্রথম সমস্যা হল দু'টি জাতির কর্মচারীরা বিভাবে ঐক্য হবে। সেজন্য কোম্পানিটি প্রথমে কর্মচারীদেরকে ইংরেজির ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, প্রথম সম্মুখীন সমস্যা হল ভাষার সমস্যা। আমাদের কোম্পানিতে ইংরেজি হল চীনা ও ব্রাজিলিয়ান কর্মচারীদের দ্বিতীয় ভাষা। সেজন্য আমাদের কোম্পানির কর্মচারীদের ইংরেজি শেখার জন্য প্রশিক্ষণ দেই। এখন আমি বেশির ভাগ কর্মচারীর সঙ্গে ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে পারি।'

এছাড়াও, রোবার্টো শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, 'আমরা সহযোগিতার শুরুতে জানতে পেরেছি যে, চীন ও ব্রাজিলের মধ্যে অনেক ভিন্নতা রয়েছে। এতে সহযোগিতা ও ব্যক্তিত্বের সংস্কৃতির ভিন্নতা রয়েছে। সেজন্য আমরা বিশেষজ্ঞদেরকে পাঠিয়ে চীনের সংস্কৃতির ওপর গবেষণা করি। এ ভিত্তিতে কোম্পানির ধারণা প্রণয়ন করা হয়। এ ধারণার মাধ্যমে চীনা ও ব্রাজিলিয়ান কর্মচারীদের সঙ্গে সুষ্ঠু সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরফলে আমরা প্রযুক্তির সাফল্য লাভে সক্ষম হচ্ছি। আমরা মানুষ ও ভিন্ন সংস্কৃতিকে সম্মান করি। বিশেষ করে আমরা আমাদের পণ্যদ্রব্যের মানদন্ড ও নিরাপত্তা জোরদার করি।'

কোম্পানি উন্নয়নের পাশাপাশি চীনা কর্মচারীদের প্রযুক্তির পর্যায় দ্রুতভাবে উন্নত হচ্ছে। চীনা কর্মচারীরা ব্রাজিল এয়ার লাইন্স কোম্পানির আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াও নতুন পরিচালনার পদ্ধতি ও কাঠামোও শিখেছে।

এখন পর্যন্ত হার্বিন মব্রা এয়ারক্র্যাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি চুক্তি অনুযায়ী চীনের বিভিন্ন এয়ার লাইন্স কোম্পানিকে প্রায় ২০টি বিমান সরবরাহ করে। এ সাফল্যে রোবার্টো অনেক সন্তুষ্ট। তিনি, ভবিষ্যতে চীন ও ব্রাজিলের বিমান উত্পাদন ক্ষেত্রের সহযোগিতার ক্ষেত্রে আশাবাদী। তিনি বলেন, 'আমাদের সহযোগিতা অনেক সফল। এখন সব কাজ ও দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমরা জানি, চীনের বিরাট বাজার ও দ্রুত উন্নয়নের ভিত্তিতে আমাদের ভবিষ্যত্ সুন্দর হবে। আমি মনে করি, আমরা সঠিক অংশীদারি খুঁজে পেয়েছে।'

কোম্পানির অভ্যন্তরীন যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক চিয়া হুইসিয়ার চোখে রোবার্টো একজন ভদ্রলোক। তিনি বলেন 'আমার মতে তিনি একজন ভাল বস। সমস্যা সমাধানের সময় তিনি অনেক মনোযোগী। তিনি অনেক সদ্ব্যাবহারকারী। সব কর্মচারী তাঁর কাছে মতামত ও প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে চায়। তিনি সবসময় কর্মচারীদের প্রশ্নের উত্তর দেন ও সমস্যা সমাধান করেন।'

রোবার্টো বলেন, তিনি এখন হার্বিন শহরকে পছন্দ করেন। এ শহরের নাগরিকদের আন্তরিকতা হল তার এখানে থাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তিনি বলেন, 'হার্বিন হল আমার দ্বিতীয় বাসা। আমি এ শহরে তিন বছর আছি। আমি মনে করি, হার্বিনের নাগরিকরা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। একজন চীনা ভাষা বুঝতে না পারা বিদেশী হিসেবে কোনো কোনো সময় আমার নিজেকে অসহায় লাগে। কিন্তু আমি অনেক ভাগ্যবান। এখানে বন্ধুপ্রতীম চীনা নাগরিকরা সবসময় আমাকে সহায়তা করেন। তাঁদের সাহায্যে আমার জীবন অনেক সহজ হয়েছে। আমি হার্বিনে থাকা পছন্দ করি। আমি বার্লিসের হার্বিনের মানুষ ও তাঁদের জীবনযাত্রার পদ্ধতিকে পছন্দ করি। মানুষের ব্যবহার-আচরণ থেকে জানা গেছে তাঁদের জীবনে তারা অনেক খুশি। হার্বিন হল বসবাসের জন্য একটি আরামদায়ক জায়গা।