v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-02-04 17:10:17    
শাদের পরিস্থিতি কোন দিকে?

cri

    ৩ ফেব্রুয়ারী শাদের রাজধানী এনজামেনায় সেনাবাহিনী ও সরকার-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময় হয়। একই সঙ্গে অন্য আরেকটি সরকার-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপও পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অঞ্চলে সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষের জের ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শাদের পরিস্থিতি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র প্রতিক্রিয়ার ব্যক্ত করেছে। এ অবস্থায় শাদ সংকটের সমাধান কিভাবে হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

    ১৯৬০ সালে স্বাধীনতার বছর থেকেই শাদে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ১৯৯০ সালে তত্কালীন সেনাপ্রধান ইদ্রিস দেবাই হাবলে সরকারকে উত্খাত্ করে ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৯১ সালের মার্চ মাসে তিনি প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন এবং ১৯৯৬,২০০১ এবং ২০০৬ সালে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নিবাচিত হন।

    ক্ষমতাসীন হওয়ায় পর তিনি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার জন্য সরকার-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাতে থাকেন এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক শান্তি আলোচনারও আয়োজন করেন। ২০০৩ সাল নাগাদ শাদের সরকার-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের তত্পরতা স্তিমিত হয়ে আসে ।তবে ২০০৫ সালে শাদে আবার সহিংসতা শুরু হয়। ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে খোদ প্রেসিডেন্ট ভবনেরই কিছু কিছু কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর একাংশের যোগসাজশে দেবাই সরকারকে উত্খাত করার চেষ্টা চালানো হয়। এই অভ্যুত্থানে ব্যর্থ হয়ে তারা শাদের পূর্বাঞ্চলে পালিয়ে গিয়ে সেখানে সরকার-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ গড়ে তোলে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে অব্যাহত সংঘর্ষ চলতে থাকে। ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা নতুন করে ব্যাপক হামলা শুরু করে এবং শাদের ৮০ শতাংশ ভূ-ভাগ দখল করে নেওয়ায় দাবি করে। অবশেষে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ জোরদার করলে তারা ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে শাদ সরকার চারটি সরকার-বিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু এই চুক্তি স্থায়ী হয় মাত্র এক মাস এবং এর পরই সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে পুনরায় গুলি বিনিময় শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলো ঐক্যবদ্ধ হয় এবং চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী রাজধানি এনজামেনায় সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায় ,যা থেকে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

    একজন বিশ্লেষক বলেন, শাদের চলমান পরিস্থিতি কোন দিকে মেড়ে নেবে, তা প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবাই ও বিদ্রোহীদের শক্তিপরীক্ষা এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা বিশেষ করে ফ্রান্সের অবস্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত। কারণ শাদে ফ্রান্সে বড় ধরণের প্রভাব রয়েছে। প্রেসিডেন্ট দেবাইয়ের পুনর্নিবাচিত হওয়ায় বিষয়টিও অনেকটাই ফ্রান্সের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপরে নির্ভরশীল । বহু বছর ধরে ফ্রান্স শাদের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও সাজ-সরঞ্জাম, গোয়েন্দা ,রিয়্যার সার্ভিস এবং চিকিত্সাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে আসছে। শাদের অনুমোদনে সেখানে ফ্রান্সের ১ হাজার ২০০ জন সৈন্যও মোতায়েন রয়েছে। দু'বছর আগে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা যখন ব্যাপক হামলা চালায় তখন ফ্রান্স সৈন্য পাঠিয়ে এবং গোয়েন্দা তত্পরতায়ই সহায়তা করেনি, বরং সরাসরি গুলি বিনিময়েও অংশ নিয়েছিল।

   তবে নিকোলাস সারকোজি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ফ্রান্সের কূটনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন এনে কিছু সমন্বয় করা হয়েছে। সারকোজি বলেছেন, আফ্রিকায় ফ্রান্সের সামরিক তত্পরতা হচ্ছে " জাতিসংঘ বা আফ্রিকান ইউনিয়নের কর্তৃত্বে " শান্তি রক্ষীর দায়িত্ব পালন । শাদের এবারের সংঘর্ষে ফ্রান্স বলেছে, শাদ সরকারকে তারা সমর্থন করলেও সংঘর্ষে অংশ নেবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্র দূত ৩ ফেব্রুয়ারী ব্রাসেলসে শাদের সংঘর্ষ নিয়ে বৈঠক আয়োজন করেন। তবে বৈঠকে ই ইউ'র শান্তি রক্ষী বাহিনী শাদে পাঠানোর নির্দিষ্ট সময় বলা হয়নি।

    শাদ পরিস্থিতি মধ্য আফ্রিকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত । এমন কি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের স্বার্থও এখানে জড়িত রয়েছে। এ অবস্থায় শাদের ভবিষ্যতে কী তা এখনো পরিষ্কার নয়। --ওয়াং হাইমান