v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-30 18:22:51    
আর্থিক বাজারের বিশৃঙ্খলা নিয়ে ৪ ইউরোপীয় নেতার শীর্ষ সম্মেলন

cri
    ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানী ও ইতালি ইউরোপের বৃহত্তম এই চারটি বৃহত্ অর্থনৈতিক শক্তির নেতারা লন্ডনে এক শীর্ষ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারের অস্থিরতা ও সংস্কার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এবারের সম্মেলনে আর্থিক বাজারের স্বচ্ছতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে আর্থিক বাজারের অস্থিরতা মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা তারা বলেন নি।

    ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন দুঘন্টাব্যাপী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি, জার্মানির প্রধানমন্ত্রী অ্যানজেলা মারকেল, ইতালির প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি এবং ইইউ কমিশনের চেয়ারম্যান হোসে মানুয়েল বারোসো সম্মেলনে অংশ নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঋণ সংকট থেকে সৃষ্ট ঋণ সংকোচন বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যতের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং বিশ্ব আর্থিক বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তার সারসংকলন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারের ভবিষ্যত সংস্কার নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। আর্থিক বাজারের স্বচ্ছতা বিশেষ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও আর্থিক পর্যালোচনা সংস্থার স্বচ্ছতা বাড়ানোর ব্যাপারে শীর্ষ নেতারা প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছেন। তাছাড়া, চার দেশের নেতারা বিশ্বের আর্থিক সংকটের আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আই এম এফ আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

    সম্মেলনের পর এক সংবাদ ব্রিফিং-এ চার শীর্ষ নেতা বলেন, এবারের সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তুগুলো বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীদেরকে জানানো হবে এবং জাপানের টোকিও-তে অনুষ্ঠেয় জি-৮ অর্থমন্ত্রী সম্মেলনে এ নিয়ে অব্যাহতভাবে আলোচনা হবে।

    কয়েক মাস আগে, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দেন। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ সংকট ইউরোপের বাজারের ওপরেও প্রভাব ফেলে। এই ঋণ সংকটের কারণে গত গ্রীষ্মকালে ব্রিটেনের পঞ্চম বৃহত্তম নরদার্ন রক ব্যাংকে পুঁজি সংকট দেখা দেয় এবং একারণে অগ্রীম টাকা তোলার হিড়িক পড়ে যায়। সরকার আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়ার পর সাময়িকভাবে সংকট প্রশমিত হয়। ২৪ জানুয়ারি, ফ্রান্সের সোশিয়েঁ জেনারেল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার জালিয়াতি ও ঋণ সংকট দুই মিলিয়ে ব্যাংকটির ৭ বিলিয়ন ইউরোর নোকসান গুণতে হয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং মার্কিন অর্থনীতির নিম্নমুখী প্রবণতায় ব্রিটেন ও জার্মানীসহ ইইউ'র বিভিন্ন দেশে কিছু মাত্রার মূদ্রাস্ফীতি ও অর্থনীতির ধীর বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এর ফলে ব্রিটেনে ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ শতাংশ কম হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা ২০০৭ সালের ৩ শতাংশের চেয়েও অনেক কম। এছাড়া, বিশ্বের শেয়ার বাজারও দারুণভাবে হোঁচট খেয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারে একটানা অস্থিরতা চলছে। এ প্রেক্ষাপটে ইইউ'র প্রধান দেশগুলোর এবারের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন তাত্পর্য পূর্ণ।

    বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবারের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতারা আর্থিক সংকট মোকাবেলায় কোনো সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরী করেন নি। তারা এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে যে কথা জানাতে চেয়েছেন তার প্রথমটা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ সংকটের প্রভাব বিশ্বব্যাপী পড়লেও ইউরোপের অর্থনীতি সুষ্ঠু বিকাশের প্রবণতা বজায় রয়েছে। বিভিন্ন দেশ তার নিজ নিজ অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। দ্বিতীয়ত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারের বিশৃঙ্খলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং আর্থিক বাজারের সংস্কার চালাচ্ছে।

    ৪ শীর্ষ নেতা কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, এবারের সম্মেলনে আলোচিত কিছু সমস্যা বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীদের কাছে পাঠিয়ে জাপানে অনুষ্ঠেয় জি-৮ অর্থমন্ত্রী সম্মেলনে আলোচনা করা হবে। যাতে সুনির্দিষ্ট নীতি তৈরি করে আর্থিক বাজারের বিশৃঙ্খলা মোকাবিলা করা যায়।