v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-23 11:25:28    
ছিন তাও শহরে দক্ষিণ কোরিয়ানের সুখী জীবন

cri

     ক্রমেই আরো বেশি বেশি দক্ষিণ কোরীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান পূর্ব চীনের সান তুং প্রদেশের রাজধানী ছিং তাও শহরে পুঁজি বিনিয়োগ করছে । ফলে চীনের ছিং তাও শহর সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরীয়র আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে । তারা সেখানে আনন্দময় জীবন কাটান এবং কঠোর পরিশ্রম করেন ।

      আপনারা যে গানটি শুনছেন , সেটি ছিং তাও শহরের লিটল ড্রাগন একাডেমী ইংলিশ সেন্টারের দক্ষিণ কোরীয় ছাত্রছাত্রীদের গাওয়া ।

    এ কেন্দ্রের এক শোরও বেশি ছাত্রছাত্রীর অধিকাংশই ছিং তাও শহরের দক্ষিণ কোরীয় পরিবারগুলো থেকে আসা । স্কুলের ক্লাস শেষে তারা এখানে ইংরেজী শেখে । সাক্ষাত্কারে শিশুরা ইংরেজী , চীনা ও দক্ষিণ কোরীয় ভাষায় সংবাদদাতাকে ছিং তাওয়ে তাদের আনন্দময় জীবনের কথা জানিয়েছে । তারা সমস্বরে সংবাদদাতাকে বলে : আমি আমার চীনের বাড়িকে পছন্দ করি ।  

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরো বেশি দক্ষিণ কোরীয় ছিং তাওয়ে এসেছেন । এখন তাদের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ । এ শহর তাদের দ্বিতীয় মাতৃভূমিতে রূপ নিয়েছে ।

    চীনের দক্ষিণ কোরীয় শিশুদের ইংরেজী ভাষার মান উন্নত করাই হল লিটল ড্রাগন একাডেমী ইংলিশ সেন্টারের প্রধান ইয়াং ইয়ং কিউ'র লক্ষ্য । তিনি বলেন :

    দক্ষিণ কোরিয়ায় আমার নিজের কাজ ছিল । বন্ধুরা সবসময় আমাকে চীনে বিনিয়োগের কথা বলতো । পরে আমি নিজের চোখেই এখানকার বাণিজ্যিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করি । এখানকার আবহাওয়া ভালো , পুঁজি বিনিয়োগের পরিবেশও ভালো । দক্ষিণ কোরীয়দের জন্য এ শহর খুব ভালো । তাই আমি এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি ।

    ইয়াং ইয়ং কিউ চার বছর আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ছিং তাও শহরে এ ইংরেজী কেন্দ্র স্থাপন করেছেন । এ কেন্দ্রের নাম রাখার জন্য তিনি অনেক বই ঘেঁটেছেন । অবশেষে তিনি "লিটল ড্রাগন"এ নামটি বাছাই করেন । তিনি বলেন :

    প্রাচীনকাল থেকে ড্রাগন চীনের প্রতীক । আমি চীনের মহা ড্রাগনকে কাছ থেকে উপলব্ধি করতে চাই । আমার এ কেন্দ্রে যেসব লেখাপড়া করছে , তারা এখন ছোট্টো ড্রাগন , ভবিষ্যতে তারা বড় ড্রাগন হবে , তারাই দেশের ভবিষ্যত । আমি আশা করি এসব শিশু বড় হওয়ার পর ড্রাগনের মত দেশ ও সমাজের উন্নয়নের জন্য নিজের অবদান রাখতে পারবে ।

    চার বছরের মধ্যে ইয়াং ইয়ং কিউয়ের সঙ্গে অনেক চীনার বন্ধুত্ব হয়ে গেছে । সময় পেলে তিনি চীনা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারেন, চা খান অথবা গলফ খেলেন । এখানেই তার প্রথম শিশু ছিং তাওয়ের জন্ম হয় । এখন তাঁর বয়স দেড় বছর । তিনি তার শিশুটি চীনা নাম রেখেছেন " ইং মিন" , তিনি আশা করেন তার সন্তান ভবিষ্যতে খুব সাহসী ও বিচক্ষণ হবে ।

    ইয়াং ইয়ং কিউ'র স্ত্রী কোন ইয়ং জিন সংবাদতাতাকে বলেন , চীনে আসার আগে তাঁর অনেক দুশ্চিন্তা হয়ে ছিল । এখানকার পরিবেশ কেমন ? আবহাওয়া ভালো কি না , এখানকার খাবার কি খেতে পারবেন ? নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন ইত্যাদি । তবে চার বছর পর এখন তাঁর আর কোনো চিন্তা নেই । এখানে অনেক নতুন বন্ধুর সঙ্গে

এখানে আসার আগে আমার অনেক বন্ধু বলেছিলেন , চীনের জীবন অনেক কঠিন । তবে এখানে চার বছর থাকার পর আমার অনুভূতি হল এখানকার জীবন খুব আরামদায়ক এবং অনেক সহজ । মাঝে মাঝে আমরা দক্ষিণ কোরিয়ায় যাই , তবে এক সপ্তাহের পার না হতেই আমি আবার ছিং তাওয়ে আসার জন্য ছটফট করতে থাকি ।

    ইয়াং ইয়ং কিউ'র মত দক্ষিণ কোরীয় পরিবার ছিং তাওয়ে অনেক । জানা গেছে , বর্তমানে সান তুং প্রদেশে পুঁজি বিনিয়োগকারী দক্ষিণ কোরীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি । তাদের মধ্যে ৬ হাজারই ছিং তাও শহরে । সান তুং প্রদেশে এসব দক্ষিণ কোরীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করেছে , যা চীনে দক্ষিণ কোরিয়ার মোট বিনিয়োগের ৫৭ শতাংশ । সান তুং দক্ষিণ কোরিয়া বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে ।

    ছিং তাওয়ে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার কন্স্যুলেট কিম সান হিয়ং মনে করেন , দক্ষিণ কোরিয়ানদের সান তুংকে পছন্দ করার কারণ? ভূভাগীয় সুবিধা ও সংস্কৃতি । এ ছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে । তিনি বলেন :

    দক্ষিণ কোরিয়া ও সান তুংয়ের সংস্কৃতির অনেক মিল আছে । দীর্ঘকাল ধরে সান তুং প্রদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতির ওপর প্রভাব রয়েছে । সান তুংয়ের আবহাওয়া , রীতিনীতি , খাবারের অভ্যাস সবই দক্ষিণ কোরিয়ার মত । এ ছাড়াও সান তুং ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভূভাগীয় সুবিধা আছে । সান তুংয়ের নাগরিকরাও খুব অতিথিপরায়ন । দক্ষিণ কোরিয়ানরা তাই এখানে থাকতে পছন্দ করেন ।

    তিনি আরো বলেন , দু'দেশের সংস্কৃতির অনেক মিল আছে , তাই দক্ষিণ কোরিয়ানরা খুব তাড়াতাড়ি চীনের জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে । দু'দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিনিময়ের জন্য অবদান রাখা হল দক্ষিণ কোরিয়ানদের অভিন্ন আকাঙ্খা ।