চীনের জাতীয় নিরাপদ উত্পাদন তত্ত্বাবধান ব্যুরোর মহাপরিচালক লি ই চুন বলেন , ২০০৮ সালে চীন সরকার উত্পাদনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে । এ জন্য নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান বিভাগ উত্পাদনে অনিরাপদ উপাদান দূর করার ব্যবস্থা নেবে এবং চীনের শিল্পোত্পাদনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে ।
২২ জানুয়ারী পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়ের একটি সংবাদ ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালক লি ই চুন এ কথা বলেন । তিনি আরো বলেন , যদিও গত কয়েক বছরে চীনের উত্পাদনের নিরাপত্তাঅবস্থা উন্নতির দিকে , তবু এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। গত বছরের কয়েকটি দুর্ঘটনার জরীপ থেকে জানা গেছে , দুর্ঘটনাগুলোর প্রধান কারণ ছিল যোগাযোগ সংস্থা ও তত্ত্বাবধান সংস্থার দায়িত্বহীনতাও উত্পাদন সংস্থার পরিচালনা ব্যবস্থার দুর্বলতা । এ সব সমস্যার সমাধান এ বছরের প্রধান কাজ । তিনি বলেন , নিহিত অনিরাপদ উপাদানই গুরুতর দুর্ঘটনার প্রধান কারণ । এ সব উপাদান দূর করার পরই শুধু দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভবহবে। সরকার এ বছর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উত্পাদনের মধ্যে বিরাজমান অনিরাপদ উপাদান দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । আমাদের উত্পাদনের অনিরাপদ উপাদান খুঁজে বের করতে হবে এবং তা' নিরসন করার জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে । যাতে গুরুতর উত্পাদন দুর্ঘটনা এড়ানো যায় , উত্পাদনের স্থিতিশীল বৃদ্ধি নিশ্চিত এবং ব্যাপক জনসাধালনের জানমাল রক্ষিত হয় ।
লি ই চুন বলেন , ২০০৩ সাল থেকে চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্ঘটনার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে । গত বছর দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০০২ সালের চেয়ে ৩৩ শতাংশ কম ছিল । দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে ২৭ শতাংশ । গুরুতর দুর্ঘটনা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণেআনা হয়েছে । তিনি বলেন , সার্বিকভাবেবলতে গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে , তবে গত বছর দুর্ঘটনার সংখ্যা নেহাত কম বলা যায় না । অতি গুরুতর দুর্ঘটনা সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ করা যায় নি । কিছু স্থান ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও স্থিতিশীল নয় ।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে চীনের তদারকি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়াং ওয়ে বলেন , সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঘটা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো নিরাপত্তার প্রতি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেয়া । এ খাতে অর্থবরাদ্দ কম , পরিচালনা ব্যবস্থার অবস্থা বিশৃঙ্খল এবং অনিয়মিত উত্পাদনের মতো সমস্যা রয়ে গেছে । এর পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তার কাজের প্রতি গড়িমসি ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন না করাও অন্যতম কারণ । ২০০৮ সালে চীনের তদারকি মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি জোরদার করবে । তিনি বলেন , তদারকি মন্ত্রণালয় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার পাশাপাশি তদারকির দায়িত্ব পালন করবে । যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান নিরাপদ উত্পাদন নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করে না এবং আইন লংঘন করে উত্পাদন চালায় , তদারকি মন্ত্রণালয় তদন্তের মাধ্যমে সেই সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেবে । দুর্ঘটনার পর তদারকি মন্ত্রণালয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাজে অবহেলা এবং সরকারী কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের যোগসাজশের মামলা তদন্ত করেছে । পরবর্তীকালে আমরা দুর্ঘটনা তদন্তের সময় আইন বিভাগের সঙ্গে সহযোগিতা করে দুর্ঘটনা পিছনের দুর্নীতি উদঘাটন করবো , দায়ী ব্যক্তিদের আরো গুরুতর শাস্তি দেবো । আমরা উত্পাদনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা , জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ও সামঞ্জস্য রক্ষার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাবো ।
তিনি আরো বলেন , গত বছরের দুর্ঘটনার তদন্ত থেকে জানা গেছে , চীনে সরকারী কর্মকর্তাদের ও ব্যবসায়ী যোজসাজশ এবং সরকারী কর্মকর্তাদের পদের সুবিধা ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধা আদায়ের সমস্যা রয়েছে । দায়ী ব্যক্তিদের সমুচিত শাস্তি দেয়ার জন্য চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিয়মবিধি প্রণয়ন করেছে ।
|