** হু চিন থাওয়ের সঙ্গে মনমোহন সিং-এর সাক্ষাত্
১৫ জানুয়ারী পেইচিংয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও-এর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও চীন সফরের জন্য মনমোহন সিংকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। হু চিন থাও বলেছেন, চীন ও ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের বর্তমান পরিস্থিতিতে দু'পক্ষের কৌশলগত সংলাপ ও সহযোগিতা আরো গভীর করা, আর্থিক ও বাণিজ্যিক,জ্বালানি সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি , বুনিয়াদী ব্যবস্থা এবং পুঁজি বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে আরো জোরদার করাসহ, সংলাপের মাধ্যমে দু'দেশের স্পর্শকাতর সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। এ ছাড়া বহুপক্ষীয় সহযোগিতা ঘনিষ্ঠ করা, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জকে অভিন্নভাবে মোকাবেলা করা, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ সুরক্ষা করা এবং বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মনমোহন সিং বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পেরে তিনি আনন্দিত । তিনি বলেন, দু'দেশেরই বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করা উচিত। যাতে দু'দেশের মৈত্রী ও অংশীদারী সম্পর্ককে জোরদার করা যায়। ভারত ও চীন বিশ্বের দুটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এশিয়া এমনকি বিশ্বের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের আমন্ত্রণে মনমোহন সিং ১৩ জানুয়ারী পেইচিং পৌঁছে তার চীন সফর শুরু করেন। সফরকালে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এবং জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাং কুও-এর সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে সাক্ষাত্ করেছেন। ওয়েন চিয়া পাও ও মনমোহন সিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। দু'পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যায় ব্যাপক মতৈক্যে পৌঁছেছে।
সফরকালে দু'পক্ষ "২১ শতাব্দীতে চীন গণ প্রজাতন্ত্র ও ভারত প্রজাতন্ত্রের অভিন্ন প্রত্যাশা" একটি স্মারক স্বাক্ষর করেছে। দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে, দু'পক্ষ উপলব্ধি করেছে যে, চীন ও ভারত দু'দেশের আর্থ-সামাজিক সুষম টেকসই উন্নয়ন এবং এশিয়া ও বিশ্বের শান্তি এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছে। দু'পক্ষ শান্তি ও সমৃদ্ধি মুখী কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারী সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন ও সমৃদ্ধ সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
** চীন-ভারত আর্থ-বাণিজ্যিক পুঁজি বিনিয়োগ ও সহযোগিতা সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলন পেইচিংয়ে শুরু
১৪ জানুয়ারী চীন-ভারত আর্থ- বাণিজ্যিক পুঁজি বিনিয়োগ ও সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি শীর্ষ সম্মেলন পেইচিংয়ে শুরু হয়েছে । চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হুই লিয়াং ইউ এবং সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন ।
হুই লিয়াং ইউ বলেন, বর্তমানে চীন ও ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতার সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা । গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক মূল্য ছিল ৩৮ বিলিয়নেরও বেশি মার্কিন ডলার। যা ১৯৯৫ সালের ৩৩গুণ বেশি । এর পাশাপাশি দু'দেশের প্রকল্প ঠিকাদারী সহযোগিতাও সম্প্রসারিত হয়েছে । তিনি আশা করেন, দু'দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পারস্পরিক অনুপূরণের প্রাধান্য প্রসারিত করে সহযোগিতার পদ্ধতি ও ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করবে ।
মনমোহন সিং তাঁর ভাষণে দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার গভীর মূল্যায়ন করেন । দু'দেশ যৌথভাবে ভবিষ্যতের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং সেবা বাণিজ্য ও হাই-টেক প্রযুক্তি ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে জোরদার করার প্রস্তাবও তিনি দিয়েছেন। এর পাশাপাশি ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করে দু'দেশের জনগণের যাতায়াতের সুবিধা সৃষ্টি করা হবে।
** সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আফগান প্রেসিডেন্টের আহ্বান
আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজায়ি ১৯ জানুয়ারী কাবুলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মুসলমান সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে হাতে হাত মিলিয়ে সহযোগিতা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
১৯ জানুয়ারী হলো মুসলমান সম্প্রদায়ের পবিত্র আসুরা । এ উপলক্ষ্যে একটি ভাষণে হামিদ কারজায়ি সারা বিশ্বের মুসলমান বিশেষ করে এ অঞ্চলের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে হাতে হাত মিলিয়ে মুসলিম বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসবাদের হুঁমকি নির্মূল করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীরা আত্মঘাতী বোমা হামলার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী, মহিলা ও উপ জাতি নেতা সহ ব্যাপক মুসলমান হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং " সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসবাদের টিউমার নির্মূল করা আমাদের ধর্মীয় কতর্ব্য"।
হামিদ কারজায়ি তাঁর ভাষণে আফগান জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তাদের ছেলে মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতা দূর করা ও দারিদ্রের অবসান ঘটানো সমৃদ্ধি অর্জনের একমাত্র পথ।
** নেপালের ৭৪টি রাজনৈতিক পার্টি সংবিধান প্রণয়ন সম্মেলন নির্বাচনে অংশ নেবে
নেপালের নির্বাচন কমিশন ১৬ জানুয়ারী জানিয়েছে, নেপালের সংবিধান প্রণয়ন সম্মেলন নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে তালিকাভুক্তির সর্বশেষ সময় ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত নেপালী কংগ্রেস, নেপালী কংগ্রেস ডেমোক্রেটিক, মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি ও মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টিসহ মোট ৭৪টি রাজনৈতিক পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য নিজেদের তালিকাভুক্ত করেছে।
তথ্য মাধ্যম জানিয়েছে যে, মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি নির্বাচনের তারিখ আরো ১৫ দিন পিছিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলেছে, এখন পর্যন্ত তারা সরকারের এ সম্পর্কিত অনুমোদন পায় নি। নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
** পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে সরকারের নিরাপত্তা রক্ষার কাজে সহযোগিতার; আহ্বান জানিয়েছে
১৬ জানুয়ারী পাকিস্তানের "ডেইলী টাইমস"-এর খবরে প্রকাশ , পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে সরকারের নিরাপত্তা রক্ষার কাজে সহযোগিতা করে ১৮ ফেব্রুয়ারীর পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে অপ্রয়োজনীয় উন্মুক্ত তত্পরতায় অংশগ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়েছে ।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাভেদ ইকবাল চিমা ১৫ জানুয়ারী বলেছেন , পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ এখন হামলার হুমকির মুখোমুখি। সরকার বিভিন্ন দলের নেতাদের কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবে। তাই সরকার আশা করে, তাঁরাও দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে সরকরের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন ।
চিমা বলেন , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দলের নেতাদের কাছে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে । এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে , প্রয়োজন না হলে বাইরে না যাওয়া , বড় আকারের সমাবেশে অংশ না নেয়া এবং পুলিশের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ বজায় রাখা।
** শ্রীলংকার যুদ্ধ বিরতি তত্ত্বাবধান কমিটির দায়িত্ব শেষ
শ্রীলংকা সরকারের একপক্ষীয় যুদ্ধ বিরতি চুক্তি পরিত্যাগের সিদ্ধান্ত ১৬ জানুয়ারী কার্যকর হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা সাতটায় শ্রীলংকার যুদ্ধ বিরতি কমিটি এ সম্পর্কিত তার সব দায়িত্ব শেষ করেছে। এ কমিটি প্রায় ৬ বছর ধরে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেছে।
যুদ্ধ বিরতি চুক্তি তত্ত্বাবধান কমিটির চেয়ারম্যান লার্স সোলবার্গ বলেছেন, এ কমিটি শ্রীলংকার পুর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও কলোম্বোয় গত ৬ বছরে একটানা তাদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেছে। কারণে এ কমিটি শ্রীলংকার সংঘর্ষকে জটিল বলে মনে করে এবং বিশ্বাস করে, সামরিক পদ্ধিতে এ জটিল সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেছেন, শ্রীলংকা সরকার ও এলটিটিই যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রথম কয়েক বছর পারস্পরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু দু'পক্ষ মূল সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া ছিল ধীর গতির। এর ফলে দু'পক্ষের সংঘর্ষ বেড়েছে ও শান্তি প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লার্স সোলবার্গ জোর দিয়ে বলেছেন, যদি শ্রীলংকার জাতীয় সংঘর্ষের সমাধান করতে হয়, তাহলে আমাদের উচিত হবে সমস্যার জটিলতা বিবেচনার পাশাপাশি উভয়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
|