v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-21 18:50:50    
লেবাননের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের দিকে যাচ্ছে

cri

     লেবাননের পালার্মেন্ট সবিচালয় ২০ জানুয়ারী ঘোষণা করেছে, ২১ জানুয়ারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা ছিল। কিন্তু তা ১১ ফেব্রুয়ারী পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে লেবাননের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ১৩বার পিছিয়ে দেয়া হলো। বিশ্লেষকরা মনে করেন, লেবাননের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান কঠিন হলেও তা সমাধানের দিকে এগুচ্ছে।

    গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর লেবাননের পালার্মেন্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে এবারের ১৩ বারের মত নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেয়া পর্যন্ত লেবাননের রাজনৈতিক সংকট প্রায় চার মাস স্থায়ী হলো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ বার বার পিছিয়ে দেয়ার অবস্থা দেখে, মনে হচ্ছে, লেবাননের রাজনৈতিক সংকট নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোন অগ্রগতি অর্জিত হয় নি। কিন্তু গত কয়েক মাসের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বোঝা যায় যে, লেবাননের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি সামান্য হলেও অর্জিত হয়েছে।

    প্রথমতঃ প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী সমস্যার সমাধান হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের আগে, লেবানন পালার্মেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও বিরোধী দল এই সমস্যায় কোন ভাবেই মতৈক্যে পৌঁছতে পারছিল না। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে দু'পক্ষ অবশেষে লেবাননের সেনা প্রধান মাইকেল সুলাইমানকে প্রার্থী হিসেবে গ্রহণ করেছে। সুলাইমানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী দু'বছর আগে লেবানন ও ইসরাইলের সংঘর্ষ ও গত বছর ফাতাহ সশস্ত্র সদস্যদের ঘেরাও করার লড়াইয়ে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন এবং লেবাননের ধারাবাহিক রাজনৈতিক সংগ্রামে তাঁর বাহিনী সবসময় নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়। ফলে তিনি দু'পক্ষের স্বীকৃতি পেয়েছেন।

    দ্বিতীয়তঃ লেবাননের রাজনৈতিক সংকটে মধ্যস্থতা করার প্রধান ভূমিকা পরিবর্তিত হয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে, লেবানন সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সমর্থকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স মধ্যস্থতার প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলো। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্ড কুছনার মধ্যস্থতা করার জন্য বহু বার লেবানন গিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিকট-প্রাচ্য বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডেভিড ওয়েলছ এক সপ্তাহের মধ্যে দু'বার লেবানন সফর করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যস্থতায় কোন বাস্তব অগ্রগতি অর্জিত হয় নি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স সহিষ্ণুতা হারিয়ে ফেলে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে আরব লীগ মধ্যস্থতার লক্ষে মঞ্চে চলে আসে। ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত আরব লীগের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সম্মেলনে লেবাননের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তে লেবাননের সংশ্লিষ্ট পক্ষ সংবিধান অনুযায়ী, সুলেইমানকে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনুরোধ করা, শিগগিরই জাতীয় কোয়ালিশন সরকার গঠন করা এবং এর পর নতুন নির্বাচন আইন প্রণয়ন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি সিরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের স্বাগত পেয়েছে।

    তৃতীয়তঃ আরব লীগ মধ্যস্থতার লক্ষে কাজে প্রধান ভূমিকা নেয়ার পর মহাসচিব আমর মোহাম্মদ মুসা এক সপ্তাহে দু'বার বৈরুতে গিয়েছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় লেবাননের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা সায়ীদ আল-হারিরি ও খৃষ্টান ধর্মীয় বিরোধী দলের নেতা মাইকেল নঈম ওয়ানের বৈঠক হয়েছে। মুসা বলেছেন, দু'পক্ষ লেবাননের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সমস্যায় মতৈক্যে পৌঁছেছে। দু'পক্ষ অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে রাজি আছে।

    তা ছাড়া, মুসা ১৯ জানুয়ারী দামেস্কে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে লেবাননের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকের পর মুসা বলেন, দু'পক্ষের বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে।

    বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যায়, লেবাননের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে কিছু সক্রিয় প্রবণতা এখনও বিদ্যমান। বর্তমান সমস্যা হচ্ছে কীভাবে এই প্রবণতা বজায় রাখা যায় এবং ধাপে ধাপে অগ্রগতি অর্জন করা যায়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্তমান কঠিন সমস্যা হচ্ছে জাতীয় কোয়ালিশন সরকার গঠন। লেবাননের স্পীকার, বিরোধী দলের নেতা নাবিহ বেরি ১৯ জানুয়ারী বলেছেন, আরব লীগের সিদ্ধান্তে কোন কিছুই স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয় নি। তিনি আশা করেন, আরেকটি ব্যাপক ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

    জনমত লক্ষ্য করেছে, এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। লেবাননের বিভিন্ন দলের উচিত গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ছোটখাটো মতপার্থক্য উপেক্ষা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লেবাননের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেয়া। যাতে লেবাননের স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতির বিকাশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)