v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-18 15:51:06    
পারভেজ মুশাররফের ইউরোপ সফরের উদ্দেশ্য কী?

cri
    পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ ২০ জানুয়ারী থেকে যথাক্রমে বেলজিয়াম, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং বৃটেন সফর করবেন এবং দাভোস বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। সামরিক পদ থেকে ত্যাগের পর এটি হচ্ছে তাঁর প্রথম সফর। জনমত এই যে, পদত্যাগের পর মুশাররফের এবারের ইউরোপ সফরের লক্ষ্য হলো সফরকারী দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা এবং ইউরোপের আস্থা ও সমর্থন চাওয়া।

    পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ সাদিক প্রেসিডেন্ট মুশাররফের এবারের ইউরোপ সফর সম্পর্কে ব্যাখ্যা করার সময় বলেন, প্রেসিডেন্ট মুশাররফ প্রথমে বেলজিয়ার সফর করবেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ই ইউ'র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তা ছাড়া, তিনি ইউরোপীয় সংসদের কূটনৈতিক কমিটিতেও বক্তৃতা দেবেন। এরপর তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী গুই ভারহফসতাদ-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২১ এবং ২২ জানুয়ারী তিনি ফ্রান্স সফর করবেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সার্কোজির সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারী পর্যন্ত মুশাররফ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন এবং বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারী পর্যন্ত তিনি বৃটেন সফর করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন।

    দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিশেষ করে আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মুশাররফের এবারের ইউরোপ সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে পাকিস্তানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মূল্য ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে পাকিস্তানের বৃহত্তম পুঁজি বিনিয়োগকারী। সফরকালে মুশাররফ স্থানীয় শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রের নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাত্ করবেন। যাতে এসব দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করা যায়।

    মুশাররফের এবারের সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো সন্ত্রাস দমন এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা। পাকিস্তান আফগান সীমান্ত সংলগ্ন। এই বিশেষ অবস্থানের কারণে "৯.১১"ঘটনার পর পাকিস্তান সন্ত্রাস দমনের গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্টে পরিণত হয়। বর্তমানে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আশাবব্যঞ্জক নয়। ঘন ঘন সশস্ত্র সংঘর্ষ ঘটেছে। ১৪ জানুয়ারী আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একমাত্র পাঁচ তারকাযুক্ত হোটেল তালিবানের সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলার শিকার হয়েছিল। এতে ৭ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে। হামলার সময় সেই হোটেলে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোনাস গার স্তোয়ার-এর সঙ্গে আফগানিস্তানের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের বৈঠক চলছিল। ২০০১ সালে আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসন ভাঙ্গার পর এটি হচ্ছে বিদেশীদের বিরুদ্ধে তালিবানের সশস্ত্র যোদ্ধাদের সবচেয়ে সরাসরি হামলার ঘটনা। পশ্চিমা দেশগুলো সন্ত্রাসদমনের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আচরণকে সন্দেহের চোখে দেখে আসছে। মুশাররফের এবারের সফরকালে তিনি মুখোমুখিভাবে ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রচেষ্টার বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন।

    আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আবস্থানকে পুনরায় সুসংহত করা এবং পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর আস্থা পুনরুদ্ধার করাই হচ্ছে মুশাররফের এবারের সফরের আরেকটি উদ্দেশ্য। গত বছর থেকে পাকিস্তানের সহিংস ধারাবাহিক ঘটনা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। "লাল মসজিদ" ঘটনা, পাকিস্তানে জরুরী অবস্থা জারি করা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বেনজির ভূট্টোর হত্যাকন্ডসহ বিভিন্ন ঘটনা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই পাকিস্তান তাড়াহুড়ো করে পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা পরিবর্তন করতে চায়।

    তা ছাড়া, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচন সৃষ্টি অত্রাকাঙ্সিত পরিস্থিতির কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারীতে পিছিয়ে দেয়া হয়। তাই পাকিস্তানের অবাধ ও নিরপেক্ষ পার্লামেন্ট নির্বাচনের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর সজাগ দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়। পাকিস্তনের পার্লামেন্ট নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বলা যায়, মুশাররফ এবারের সফরের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি কাজ এবং ন্যায়সঙ্গত নির্বাচন অনুষ্ঠান সুনিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তানের সরকারের প্রচেষ্টার কাথা অবহিত করবেন। যাতে পশ্চিমা দেশগুলোর সন্দেহ নিমূল করা সম্ভব হয়। (লিলি)