৯ জানুয়ারী পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে , একটি দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে পরমাণু স্থাপনা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তানের কঠোর ব্যবস্থা রয়েছে। দেশটির কৌশলগত পরমাণু স্থাপনা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক আল বারাদেই সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র চরমপন্থীদের হাতে পড়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ সাদিক নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে বারাদের বক্তব্য নিন্দাযোগ্য । তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার বক্তব্য পাকিস্তানের কৌশলগত পরমাণু স্থাপনায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে সেই সত্যকে স্বীকার করে না। পাকিস্তানের বেসরকারী পারমাণবিক খাতও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। পাকিস্তান পক্ষ পুরোপুরিভাবে এ সংস্থার নিয়মকানুন মনে চলছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সমস্যায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
" সি.এন.এন" সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানে প্রায় ৫০ ধরণের পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। দেশটিতে প্রচুর তালিবান জঙ্গী রয়ে গেছে এবং সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান যেহেতু সক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় করে কাজ করে সে কারণে তার পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই উদ্বিগ্ন । যখন একটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির গুরুতর পরিবর্তন হয়, তখন সে দেশটির পরমাণু অস্ত্র পশ্চিম সংবাদমাধ্যমের আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হবেই। বিশেষ করে ২০০৭ সালে , পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি , " লাল মসজিদ" , সারা দেশে জরুরি অবস্থা এবং বেনজির ভুট্টোর নিহতসহ বিভিন্ন উত্তেজনাকর ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। এ কারণে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পড়ে যাবে কিনা সেটাই এখন পশ্চিমা দেশগুলোর মাথা ব্যাথায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি একজন সাবেক মার্কিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আল কায়েদা সংস্থার বহু সশস্ত্র আস্তানা রয়েছে। এমন কি, তাদের হামলা করার লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের পরমাণু স্থাপনাও রয়েছে । গত নভেম্বর মাসে পারভেজ মুশাররফ পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা জারি করার পর, কিছু কিছু পশ্চিম সংবাদমাধ্যম বলেছিল , পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র অন্য পক্ষের হাতে পড়ে যাবে কিনা সেটা নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র বেশি উদ্বিগ্ন । এজন্য এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি । মার্কিন জেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন সম্প্রতি বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনকে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা যৌথভাবে তত্ত্বাবধানের অনুরোধ জানাবেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ সাদিক বহুবার ঘোষণা করেছেন, ১৯৯৮ সাল থেকে পাকিস্তানের পরমাণু পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর, পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য তারা নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা গড়ে তুলেছে । সুতরাং পরমাণু অস্ত্র হাত ছানা হয়ে যাওয়ার মতো কোনো বিপদ নেই। তিনি আরো বলেন, পরমাণু অস্ত্র ভান্ডারের ওপর পাকিস্তান বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রয়েছে।
|