v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-10 18:08:46    
নান লুও কু উদ্যানপথ--১

cri

 

নান লুও কু উদ্যানপথ পেইচিং শহরের তোংছেং জেলায় অবস্থিত। এই উদ্যাপথের ইতিহাস ৭শ'রও বেশি বছরের। হাজার মিটারের উদ্যানপথের দু'পাশে সারি সারি বার, দোকান ও অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। মাঝে মাঝে বুদ্ধিজীবী ও কবিরা এখানে সমবেত হন। নান লুও কু উদ্যানপথ পেইচিং-এর সবচেয়ে কেতাদুরস্ত সড়ক বা এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

নান লুও কু উদ্যানপথ আজ থেকে ৭শ' বছরেরও আগে চীনের ইউয়ান রাজবংশের আমলে নির্মিত হয়। প্রায় ১ হাজার মিটার দীর্ঘ এই পথের পূর্ব ও পশ্চিম দু'পাশে আলাদা ৮টি মুখোমুখি উদ্যানপথ রয়েছে। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে একটি কাঁকড়া বিছা। সে জন্যেই এর আরেকটি নাম হচ্ছে কাঁকড়া বিছা উদ্যানপথ। এটা হচ্ছে পেইচিং শহরের বিশেষভাবে সংরক্ষিত চারচক্রনিবানের উদ্যানপথ।

নান লুও কু উদ্যানপথ নিষিদ্ধ নগর থেকে মাত্র এক জেলা দূরে। এখানে লাল দেয়াল ও সবুজ টালির রাজকীয় স্থাপত্য নিদর্শন নেই। এখানকার দেয়াল ও টালিগুলো ধূসর রঙের। এটা ছিল রাজ কর্মকর্তা ও সাহিত্যিকদের বাসস্থান। এখন নান লুও কু উদ্যানপথে ডজন খানেক বিভিন্ন স্টাইলের পানশালা ও দোকান রয়েছে। এ গুলো বর্তমানে সাহিত্যিকদের মিলিত আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।

নান লুও কু উদ্যানপথে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে দোকান ও কফি বার। দোকানে বিভিন্ন ধরনের সৃষ্টিশীল ও পেইচিং-এর ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র আছে। সাজসজ্জা ও কারুশিল্প নেকে শুরু করে নিত্য ব্যবহার্য পোশাক, টুপি, জুতা বা মোজা সব কিছুতেই দোকান মালিকের নির্মাণশৈলী ফুটে ওঠে। যে কোনো একটি দোকানের দরজা খুলে ঢুকলে আপনার চোখ ধাঁধিয়ে যাবে এ সব জিনিস দেখে।

'বু ল্যুই সিন ছিং' নামের দোকানটিতে ঢুকলে আপনারা দেখতে পাবেন অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড় চোপড়। যদি চীনের ঐতিহ্যবাহী লোকজ বস্ত্রশিল্পের প্রতি আপনাদের আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনাদের অবশ্যই এখানে আসতে হবে। এই দোকানটির আয়তন দশ-বারো বর্গমিটারের মতো এবং দুটি আলাদা কক্ষে বিভক্ত। বাইরের কক্ষে দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের ঘরে পরার এবং রান্না করার পোশাক, গদি ও গয়নাগাটি। এ সব কাপড় ডিজাইন বা স্টাইল চীনা বৈশিষ্ট্যের। দোকানের মালিক লিউ চোং লাই বলেন, দোকানের অধিকাংশ পণ্যের যেমন উপযোগিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে চীনের লোক সংস্কৃতি ছাপী।

লোকজ রীতির পাশাপাশি এ সব বস্ত্রে চীনের ধ্রুপদী সংস্কৃতির মিশেল রয়েছে। ক্রেতারা এই টেবিল-ক্লথটি খুব পছন্দ করে। কারণ এটি চীনের ধ্রুপদী স্টাইলের। এই স্বর্ণ ইদুরটির প্রতীকী অর্থ হচ্ছে ধনী। আরেক ধরনের ইদুরের নাম হচ্ছে আন চি ইদুর। এর অর্থ হচ্ছে নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য আশাবাদ।

'বু ল্যুই সিন ছিং' দোকানটির অন্য ঘরটিতে অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড়ের জুতা আছে। খেয়াল করে না দেখলে বোঝা কঠিন যে, এ সব জুতা কাপড়ের তৈরি। লিউ চোং লাই বলেছেন, এ সব জুতায় কাপড়ের পাশাপাশি জনপ্রিয় ও ফ্যাশনেবল উপাদানও যোগ করা হয়। তাই ক্রেতাদের কাছে এগুলো হয়ে ওঠে দারুতন আকর্ষণীয়।

কাপড় জুতাগুলো বিচিত্র ধরনের কাপড় দিয়ে তৈরী করা হয়। এই কাপড় খুব টেকসই, এর ডিজাইনও সবার কাছে প্রিয়। কাপড় জুতা পায়ের জন্য খুব ভালো জিনিস, তাছাড়া সহজভাবে পরিস্কার করা যায়। দোকান খোলার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার জুতার বিক্রি এ তোটুকূ কমেনি।

নান লুও কু উদ্যানপথে, একটি 'লে থিয়ান থাও শে' আছে। আসলে এটা হচ্ছে একটি মাটির তৈরি জিনিসের দোকান। দোকানে মাটি নিয়ে তৈরী বিভিন্ন রকমের হস্তশিল্প থরে থরে সাজানো। দোকানে একজন ফিলিপাইনী সেলসগার্ল আছে। তার নাম জোআন্না রামভ্রান। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এখানকার সব মাটির তৈরি জিনিস বিশুদ্ধ চীনা হস্তশিল্প। তার কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হচ্ছে মাটি দিয়ে বানানো সবচেয়ে দামী 'প্রজাপতি'টি। এই হস্তশিল্পে হাজার হাজার প্রজাপতি বসানো হয়। প্রতিটি প্রজাপতির আকার মানুষের হাতের আঙুলের নখের মতো। শেষ পর্যন্ত হস্তশিল্পটির আকার দাঁড়ায় প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের অর্ধেক উচ্চতা মতো।

এখানে আমার সবচেয়ে প্রিয় এই প্রজাপতি শিল্পটি। ছোট ছোট প্রজাপতি বসিয়ে বড় এই প্রজাপতিটি তৈরি হয়। এর নিখুঁত হাতের কাজের জন্য কঠোর পরিশ্রম দরকার। তবে কাজটা শেষ হওয়ার পর যে হস্তশিল্পটা তৈরি হয় সেটি এক কথায় চমকপ্রদ।