v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-09 13:15:20    
চীনে বাংলাদেশের মাননীয় রাস্ট্রদূত মুন্সি ফৈয়াজ আহমদের সাক্ষাত্কারের প্রথম অংশ(ছবি)

cri

    সম্প্রতি  চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফৈয়াজ আহমেদ চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ের  সাক্ষাত্কার গ্রহণ করেছেন। সাক্ষাত্কারে তিনি ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কোন্নয়ন ও ২০০৮ সালে নিজের নতুন চিন্তাভাবনা বলেছেন।

    ইউঃ  মাননীয় রাস্ট্রদূত, আপনার এই ব্যাস্ততম সময়ে সাক্ষাত্কার দেয়ার জন্য প্রথমেই আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ । একই সঙ্গে জানাচ্ছি ২০০৮ সালের নববর্ষের শুভেচ্ছা ।

    রাষ্ট্রদূতঃ আমি খুব খুশি হয়েছি যে আপনারা আমার কথা শোনার জন্য এসেছেন । সে জন্য আপনাদেরকেও ধন্যবাদ । চীন আন্তর্জাতিক বেতারের চীনা শ্রোতা ও বাংলা ভাষা - ভাষী সকল শ্রোতাদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই । আগামী বছর চীনে সবচেয়ে বড় যে ঘটনা ঘটবে সেটা হচ্ছে ২০০৮ সালের অলিম্পিক, আমরা সেই অলিম্পিকের জন্য অপেক্ষা করে আছি । আমার বিশ্বাস পেইচিং-এর এ অলিম্পিক অত্যন্ত সফল হবে ।

    ইউঃ এর আগে আপনি কয়েক বছর চীনে কাজ করেছেন । আমরা শুনেছি আপনি ভাল চীনা ভাষাও বলতে পারেন । যখন আবার আপানি রাস্ট্রদূত হিসেবে চীনে আসার খবর শুনলেন, তখন আপানার অনুভূতি কেমন ছিল ?

    রাষ্ট্রদূতঃ যখন আমি শুনলাম যে আমাকে চীনে রাস্ট্রদূত করে পাঠানো হচ্ছে তখন আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি । তার কারন, ১৯৮০'র দশকে চীনে সাত বছরের বেশি ছিলাম । তখন একটা স্বপ্নের মত মনে হতো হয়তো একদিন আমি এখানে রাস্ট্রদূত হয়ে আসবো। চীনের প্রতি বিশেষ একটা গভীর ভালোবাসা রয়েছে । সে জন্যে এখানেই রাস্ট্রদূত হয়ে আসার ইচ্ছাটা গভীর ছিল । স্বপ্ন যখন সফল হলো তখন স্বাভাবিকভাবেই আমি অত্যন্ত আনন্দিত । আমার দুই কন্যা আছে । তারা দুজনই এই পেইচিং শহরে জন্ম গ্রহণ করেছে । তাদের এখানে নিয়ে আসতে পেরে সত্যিই আমার আজ ভালো লাগছে।

    ইউঃ আমরা আপনার সম্পর্কে আরো জানতে চাই । আপনি কি কিছু বলবেন ?

    রাষ্ট্রদূতঃ আমি কূটনৈতিক পেশায় যোগ দিয়েছি ১৯৭৯ সালে । তারপর ১৯৮১ সালে চীনা ভাষা শেখার জন্য চীনে আসি । তখনকার পিকিং ভাষা ইনিস্টিটিউট থেকে চীনা ভাষা শিখি । পরে দেশে ফিরে গিয়ে এক বছর থাকার পর আবার দূতাবাসে চাকরী করার জন্য ফিরে আসি । চীনা দূতাবাসে একনাগাড়ে পাঁচ বছরেরও বেশি চাকরী করি । তখন চীনের জনগণ এবং চীনের অনেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় । আমাদের কর্তব্যের খাতিরে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে পরবর্তি সময় তারা অনেকেই আমার ভাল বন্ধুতে পরিনত হয়েছেন । তাদের কথা সবসময় মনে হয় । তারপর থেকেই চীনের অগ্রগতি সম্পর্কে গভীর মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করছি এবং চীনের উন্নতিতে আমি নিজেও গর্ব অনুভব করি ।

    ইউঃ চীনে রাস্ট্রদূত হিসেবে কার্যকালিন মেয়াদে আপনার মূল লক্ষ্য কী ?

    রাষ্ট্রদূতঃ স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য রাস্ট্রদূতের যে মূল লক্ষ্য থাকে আমারও তাই । আমাদের দু'দেশের মধ্যে যে ভাল সম্পর্ক বিরাজ করছে, সহযোগিতার যে ভাল সম্পর্ক বিরাজ করছে সেটাকে কী ভাবে আরো জোরদার করা যায় । তবে বিশেষভাবে যার উপর জোর দেব তার মধ্যে একটা হচ্ছে দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা, সফরের আদান প্রদান করা, দু'দেশের জনগণের মধ্যেও যাতে যোগাযোগ বৃদ্ধি পায় সে জন্য যেমন ধরুন, এখন যেমন পেইচিং থেকে খুনমিং হয়ে ঢাকায় যাওয়া যায়, তেমনি সড়ক পথেও যাতে সরাসরি যাতায়াত করা যায় । সে বিষয়টি নিয়ে দু'দেশের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে । তা ছাড়া মিয়ানমারের সাথেও আমরা আলাপ করছি যে, মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে যাতে এ সড়ক পথ খোলা যায় । এর ফলে দু'দেশের জনগণের যাতায়াতের বিরাট সুবিধা হবে এবং দু'দেশের বানিজ্য সম্প্রসারনেও সুযোগ সৃস্টি হবে । তা ছাড়াও এই তিনটি দেশ সবদিক দিয়ে উপকৃত হবে। আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরিতে বিশেষ করে চীনের সাহায্য আরো বেশি করে পেতে পারি সে জন্য আমরা সচেস্ট থাকবো ।

    ইউঃ ইতোমধ্যে আপনি যে বলেছেন দু'দেশের মধ্যে যাতায়াতের সুবিধার জন্য বিমান চলাচল এবং সড়ক চলাচলের কথা । আমি জেনেছি ইযুন্নান প্রদেশ এবং বাংলাদেশের যে সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে তা জোরদার করার জন্য আরো চেস্টা চলছে । আপনি চীনে আসার পর নিশ্চয়ই ওখানেও গিয়েছেন, তাই না ?

    রাষ্ট্রদূতঃ আমি এসেছি মাত্র চার/পাঁচ মাস হলো । এখনও সফরে যাওয়া হয় নি । তবে এর মধ্যে আমি দেশে গিয়েছিলাম গত মাসে । তখন আমি পেইচিং থেকে খুনমিং থেকে ঢাকা এবং একই পথে আবার ফিরে এসেছি । সুতরাং এ পথের সুবিধা - অসুবিধা সম্পর্কে আমার কিছুটা জানা হয়ে গেছে । ফিরে আসার পর এ বিষয়টি নিয়ে আমি সবার সঙ্গে আলাপ - আলোচনা করেছি কী করে এ রুটে আরো সুযোগ সুবিধা বাড়ানো যায় । খুব শিগগিরি আমার খুনমিং-এ যাবার ইচ্ছে আছে । আকাশ পথে চলাচলের সুবিধা সৃস্টি হওয়ার পরে সেখানে একটা নতুন সাড়া পড়ে গেছে বাংলাদেশীদের মধ্যে এবং খুনমিং-এ যে সব চীনারা আছেন বা খুনমিং-এর আশে পাশের প্রদেশগুলোর জনগণের মধ্যেও । যাতায়াতও বেড়েছে আরো । খুনমিং প্রাদেশিক সরকার চেস্টা করছে আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য । তারা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য আবেদন করেছে । সম্ভবত এ প্রতিনিধিদলটি যেতে পারবে । এ ছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা খুনমিং-এ যে মেলা হয় সেখানে অংশ নিয়েছে । বাংলাদেশের ট্যুরিজম কোম্পানিগুলো এখানে আসছে এবং চীনের ট্যুরিজম কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশে যাচ্ছে । আগামী বছর খুনমিং ও কোয়াংতুং- এর ওপর জোর দিয়ে বিশেষ করে চীনা ট্যুরিজম কোম্পানিগুলোকে একটা প্রমোশনাল ভিজিটে বাংলাদেশে নিয়ে যাবার চেস্টা করছি , যাতে তারা বাংলাদেশকে দেখে এসে এখান থেকে তারা আরো বেশি ট্যুরিস্টকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে পারে।