v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-08 18:35:54    
বুশের মধ্যপ্রাচ্য সফর চ্যালেঞ্জপূর্ণ(ছবি)

cri

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ ৮ থেকে ১৬ জানুয়ারী ইসরাইল, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর, কুয়েত, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মিশর মধ্য প্রাচ্যের এই সাতটি দেশ ও অঞ্চল সফর করেছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি এই প্রথম বারের মত ইসরাইল ও জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর সফর করেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বুশের এবারকার মধ্য প্রাচ্য সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা এবং ইরানের পারমাণবিক সমস্যায় তেহরাণের ওপর চাপ দেয়া।

    ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সংকট সমাধানের উদ্দেশ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের মারিল্যান্ড রাজ্যের রাজধানী অ্যানাপোলিসে মধ্য প্রাচ্য শান্তি সম্পর্কিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তখন ৫০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। যার ফলে বহু বছর ধরে বন্ধ থাকা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে। কিন্তু অ্যানাপোলিস সম্মেলনের পর ইসরাইল ফিলিস্তিন-ইসরাইলের শান্তি আলোচনার জন্য আরো কিছু নতুন শর্ত উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ফিলিস্তিনের সন্ত্রাসী সংস্থা নির্মূল করার আগে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। এর পাশাপাশি ইসরাইল অব্যাহতভাবে ইহুদী বসতি নির্মাণ সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে। এটা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে নতুন করে বাধার সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনের জন্য জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজা অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী তত্পরতা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তির জন্য কঠোর চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে।

    অতীতে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ইসরাইলের পক্ষপাতী ছিলো। কিন্তু এখন অ্যানাপোলিস সম্মেলনে অর্জিত সাফল্য সুসংবদ্ধ ও উন্নয়নের জন্য বুশ আগের কার্যক্রম পরিবর্তন করে প্রথমবারের মতো ইসরাইলের দখলকৃত ফিলিস্তিনের ভূভাগে ইহুদী বসতি নির্মাণ সম্প্রসারণের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তি বাস্তবায়নের পথে বাধাস্বরূপ। ইসরাইলের উচিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেআইনী ইহুদীর বসতি উচ্ছেদ করা। তিনি এবার মধ্য প্রাচ্য সফরের সময় ফিলিস্তিন ও ইসরাইলকে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালন করার তাগিদ দেয়ার চেষ্টা করবেন।

    মার্কিন তথ্য মাধ্যম জানিয়েছে, বুশ নিজের চূড়ান্ত কার্যমেয়াদে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তি আলোচনা ত্বরান্বিত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। যাতে তাঁর পররাষ্ট্র নীতির রেকর্ড উন্নত করা যায়। কিন্তু ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক সমস্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মধ্য প্রাচ্য সমস্যা জটিল। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সংকট গভীর রয়েছে। এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সংকট সমাধান করা অসম্ভব।

    তা ছাড়া বুশের মধ্য প্রাচ্য সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক সমস্যায় আরব দেশগুলোর সমঝোতা ও সমর্থন অর্জন।

    কিছু দিন আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রকাশিত ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বহু বছর আগে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের গবেষণা প্রকল্প বন্ধ করেছে এবং আজ পর্যন্ত পুনরায় তা শুরু করে নি। পর্যালোচনা রিপোর্টটি বুশ সরকারকে অত্যন্ত বিব্রত অবস্থায় ফেলে দিয়েছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা অনেক কমে গিয়েছে।

    কিন্তু বুশ সরকার এই পর্যালোচনা রিপোর্টের জন্য ইরানের প্রতি নিজের নীতি পরিবর্তন করে নি। যুক্তরাষ্ট্র এখনো মনে করে, ইরান হচ্ছে মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলে তার সর্বাধিক হুমকি এবং ইরানের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের সম্ভাবনা নাকচ করা যায় না। কিন্তু এমন নীতি বাস্তবায়ন করতে চাইলে মধ্য প্রাচ্য দেশগুলোর সমর্থন ছাড়া হবে না। সুতরাং এবারের মধ্য প্রাচ্য সফরকালে বুশ সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইনসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছে। তিনি সেসব দেশে সমর্থন চেয়েছেন, যাতে ইরানকে বয়কট করা যায়।

    কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, বুশের নিজের দায়িত্ব সম্পাদন করা কঠিন হবে। আরব দেশগুলো ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প উন্নয়নের বিরোধিতা করলেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর বিরোধিতা করে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশের পর বুশ সরকার ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সম্পর্কে আরব দেশগুলোর সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যে আরো তত্পর হবে।

    ইরান বুশের এই সফরের সমালোচনা করে বলেছে, বুশের সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করা। কিন্তু বুশের ইরানকে বয়কট করার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে না। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)