v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-01-02 19:58:27    
সিয়া মেন শহরে ভিলিয়াম ব্রাউন সুখীর জীবন

cri

    দক্ষিণ-পূর্ব চীনের সিয়া মেন শহরে এমন একজন মার্কিন শিক্ষক আছেন , তার নাম ভিলিয়াম ব্রাউন , এ শহরের সবাই তার নাম জানে । সিয়া মেনের নাগরিকরা খুব আন্তরিকভাবে তাঁকে "লাও পান" ডাকে । তিনি সিয়া মেনে থাকা প্রথম বিদেশি , ফু চিয়ান শহরের প্রথম দীর্ঘদিন থাকা বিদেশি নাগরিক । তিনিও চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা প্রথম কিস্তির এম বি এ কোর্সের বিদেশি শিক্ষক ।

    ভিলিয়ামের বাসা সিয়া মেন বিশ্ববিদ্যালয়ে । তার বাসার চার পাশে সুন্দর সুন্দর ফুল ও সবুজ গাছ । তিনি বলেন , ১৯৮৮ সালে সিয়া মেনে আসার পর থেকে তিনি এখানে আছেন । অতিথি আসলে ভিলিয়াম সবসময় তাদেরকে বলেন , এটা হল পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর বাড়ি । তিনি বলেন :

    আমি সবসময় অন্যকে বলি , আমার পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর একটি বাড়ি আছে । চীন বিশ্বের সবচেয়ে মজার দেশ , চীনের সবচেয়ে সুন্দর শহর হল সিয়া মেন , সিয়া মেনের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হল সিয়া মেন বিশ্ববিদ্যালয় , বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড় খুব সুন্দর একটি জায়গা , এবং আমার বাড়িটি ঠিক এ পাহাড়ের ওপর । আমি কত ভাগ্যবান যে পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ বাড়িতে থাকি এবং বিশ্বে সবচেয়ে ভালো চাকরি করছি ।

২০ বছর আগে ৩২ বছর বয়সী ভিলিয়াম যুক্তরাষ্ট্রের ভাল্ডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি বিক্রি করে স্ত্রী ও দু'শিশু নিয়ে সিয়া মেনে এলেন । সে সময়ের কথা স্মরণ করে ভিলিয়াম বলেন :

    আমার চীনে আসার আসল কারণ হল আমি চীনা ভাষা শিখতে চাই । তখন আমি সিয়া মেন সম্পর্কে কিছুই জানতাম না । ১৯৮৮ সালে একজন অপরিচিত লোক থাইল্যান্ড থেকে আমাকে ফোন করেন , তিনি বলেন , শুনেছি আপনি চীনা ভাষা শেখার জন্য চীনে যেতে চান ? তাহলে আপনি কি সিয়া মেন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানেন ? এক সপ্তাহ পর আরেক জন আমাকে ফোন করেন , তার আগের সে লোকের সঙ্গে কোনো সম্পর্কে নেই । তিনি বলেন , চীনা ভাষা শিখতে চান ?তাহলে সিয়া মেন বিশ্বিবিদ্যালয়ে যান ? আমি বলি , হ্যাঁ , জানি , গত সপ্তাহে এ নাম শুনেছি । এরপরে আমি তাঁর সঙ্গে আবার যোগাযোগ করি । চার মাস পর আমি সিয়া মেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি ।

    সিয়া মেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক মাস চীনা ভাষা শেখার পর ভিলিয়ামের জন্য একটি সুযোগ তাঁর চোখের সামনে এসে পড়ে । তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম বি এ কোর্সের শিক্ষক দরকার । পরীক্ষার পর ভিলিয়াম এম বি এ শিক্ষক হয়েছেন । বিশ বছর ধরে তিনি সিয়া মেনের উন্নয়নকে অনুভব করেছেন , তিনি বলেন :

    গত বিশ বছরে চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে । এ দ্রুত উন্নয়নের ভিত্তি হল বাণিজ্য । চীনের জন্য এমন অগ্রগতি অর্জন এবং বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ । চীনের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দরকার । তাই আমার মনে হয় আমি বিশ্বের সবচেয়ে ভালো কাজটি করছি । চীন হল উন্নয়নশীল দেশগুলোর আশা । আমি খুব খুশি যে অর্থনীতির উন্নয়নে নিজের ভূমিকা পালন করতে পারবো ।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভিলিয়াম বই লেখার মাধ্যমে বিশেষ করে বিদেশিদেরকে সিয়া মেন ও ফু চিয়ানকে পরিচয় করিয়ে দেন । তার লেখা "চার্মিং ফু চিয়ান" এবং "চার্মিং সিয়া মেন" বিদেশিদের ফু চিয়ান প্রদেশ ও সিয়া মেন শহরকে জানার জন্য প্রয়োজনীয় বই । পাশা পাশি তিনি একটি ওয়েইবসাইট খুলেছেন । এ ওয়েইবসাইট বিদেশিদের চীন ও সিয়া মেনকে জানার মঞ্চ হয়েছে ।

    ভিলিয়াম বলেন , তিনি খুব ভাগ্যবান যে আগে সিয়া মেনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । সিয়া মেন শহরও তাকে অনেক সার্প্রাইস দিয়েছে । তিনি বলেন :

সিয়া মেন ইতোমধ্যেই একটি আন্তর্জাতিক শহরে পরিণত হয়েছে । সরকারের কার্যকর ব্যবস্থায় আরো বেশি বিদেশি সিয়া মেনে এসেছেন । এর ফলে সিয়া মেন একটি সুন্দর এবং আন্তর্জাতিক শহর হয়েছে । আগে আমি তা অনুভব করি নি । তবে ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সাল থেকে আমি হঠাত্ উপলব্ধি করেছি যে , আস্তে আস্তে সিয়া মেনের পরিবর্তন হয়েছে । সিয়া মেন কাজ করা ও থাকার জন্য সত্যি একটি ভালো বাছাই ।

    এ শহরের চেহারা আরো সুন্দর হয়েছে । এ ছাড়া , প্রফেসর হিসেবে ভিলিয়াম মনে করেন , সিয়া মেনের অর্থনৈতিক পরিবেশও খুব সন্তুষজনক । প্রথম সিয়া মেন আসার সময় অনেক বিদেশি ব্যবসায়ী বলেন , এখানকার পুঁজি বিনিয়োগ পরিবেশ ততটা ভালো ছিল না । তবে এখন এ অবস্থার অনেক উন্নত হয়েছে।  তিনি বলেন :

    আমার মনে হয় এটা সত্যি একটি আশ্চর্য ব্যাপার , আগে থেকেই আমার এখানে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ হল আমি আশা করি সিয়া মেন ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে । কিন্তু আমি কল্পনা করতে পারি যে এখানকার পরিবর্তন এত তাড়াতাড়ি হবে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমি এখানে খুব আরামে কাজ করি । চাকরি হোক , জীবন হোক , চীনে অথবা বিশ্বে সিয়া মেন খুব ভালো একটি শহর ।

    সাক্ষাত্কার শেষে ভিলিয়াম বলেন , তিনি সারা জীবন সিয়া মেনে থাকতে চান । কারণ এ শহরের সঙ্গে তার গভীর ভালোবাসা রচিত হয়ে গেছে ।