v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-31 19:04:24    
চীনের প্রেসিডেন্ট হু ছিন থাওয়ের নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণী

cri
    নববর্ষ ২০০৮ সাল আগমনের প্রাক্কালে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ৩১ ডিসেম্বর চীন আন্তর্জাতিক বেতার , চীনের কেন্দ্রীয় বেতার ও কেন্দ্রীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে " সম্মিলিতভাবে মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নের মহান ব্রতকে সামনে এগিয়ে নিন" শিরোনামে একটি নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণী দিয়েছেন । তিনি এ শুভেচ্ছাবাণীতে দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণ , হংকং , ম্যাকাও ও তাইওয়ানের স্বদেশবাসী , প্রবাসী চীনা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুদেরকে নববর্ষের শুভ কামনা জানিয়েছেন ।

    ভদ্র মহিলা , ভদ্র মহোদয় , কমরেড ও বন্ধুগণ , নববর্ষের ঘন্টা শিগগিরই বাজবে । ২০০৮ সাল আসন্ন । এ প্রত্যাশাপূর্ণ শুভ মুহুর্তে আমি আনন্দের সংগে চীন আন্তর্জাতিক বেতার , চীনের কেন্দ্রীয় বেতার ও কেন্দ্রীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণ , হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ও ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের স্বদেশবাসী , তাইওয়ানবাসী ও প্রবাসী চীনা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুদেরকে নববর্ষের শুভ কামনা জানাচ্ছি ।

    ২০০৭ সালে বিশ্বে নতুন পরিবর্তন ঘটেছে এবং চীনেও নতুন অগ্রগতি হয়েছে । চীনের বিভিন্ন জাতির জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এবং সার্বিকভাবে স্বচ্ছল সমাজ গঠনের প্রক্রিয়াকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে । চীনের বহুমুখী জাতীয় শক্তি আরো বেড়েছে । জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান আরো উন্নত হয়েছে । চীনা জনগণ বিভিন্ন দেশের জনগণের সংগে বিনিময় ও সহযোগিতা আরো জোরদার করেছে , উদ্যোগের সংগে সমস্যা-পীড়িত অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করেছে এবং স্থায়ী শান্তি ও সম্মিলিত সমৃদ্ধির সম্প্রীতিময় বিশ্ব প্রতিষ্ঠার জন্যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে । দুই মাসের কিছু বেশি সময় আগে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৭তম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে । এ কংগ্রেস নতুন যুগে সার্বিকভাবে স্বচ্ছল সমাজ গঠন এবং সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত করার মহান পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে । চীনের বিভিন্ন জাতির জনসাধারণ এখন নিজেদের পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সুন্দর জীবনের নতুন অধ্যায় রচনার জন্যে নতুন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে ।

    চীনা জনগণের জন্যে ২০০৮ সাল হবে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর । ২০০৮ সালে আমরা যথাযোগ্য মর্যাদার সংগে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপন করবো । ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ হচ্ছে আধুনিক চীনের ভাগ্য নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব । এটি সমাজতান্ত্রিক চীনের অবয়বের ঐতিহাসিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে । আমরা অবিচলভাবে চীনের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের সমাজতন্ত্রের মহান পতাকা উর্ধ্বে তুলে ধরবো , ব্যাপক পর্যায়ে বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়ন চিন্তাধারা বাস্তবায়ন করবো , নিরবচ্ছিন্নভাবে আমাদের চেতনাকে বন্ধনহীন করবো , সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে অটল থাকবো , সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাবো , সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রসার ঘটাবো , উন্নত সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটাবো এবং জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নসহ সামাজিক গঠনকাজ আরো জোরদার করবো , যাতে জনসাধারণ শিক্ষা , শ্রম , চিকিত্সা , অবসরকালীন জীবন ও বাসস্থানের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে । আমরা এক দেশ , দুই ব্যবস্থা , হংকংবাসীদের দ্বারা হংকং শাসন , ম্যাকাওবাসীদের দ্বারা ম্যাকাও শাসন এবং উচ্চ পর্যায়ের স্বশাসনের নীতিতে অবিচল থেকে হংকংবাসী ও ম্যাকাওবাসীদের সংগে মিলে সম্মিলিতভাবে হংকং ও ম্যাকাওয়ের দীর্ঘকালীন সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ রাখবো । আমরা শান্তিপূর্ণ একীকরণ ও এক দেশ , দুই ব্যবস্থার মৌলিক নীতিতে অটল থেকে দৃঢ়তার সংগে তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের সম্পর্কের শান্তি ও উন্নয়নের প্রধান বিষয়কে আঁকড়ে ধরে বরাবরই দুই পারের স্বদেশবাসীদের কল্যাণ ও তাইওয়ান প্রণালীর শান্তির জন্যে চেষ্টা করবো এবং দৃঢ়ভাবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূভাগীয় অখন্ডতা রক্ষা করবো ।

    সাধারণভাবে বলতে গেলে , বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে । পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্যহীনতা বেড়ে চলেছে , আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে এবং মানবজাতি বেশ কিছু কঠিন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে । বিভিন্ন দেশের জনগণের অভিন্ন আকাংক্ষা হচ্ছে সমানতরালভাবে উন্নয়নের সুযোগ ভোগ করা , নানা ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নের মহান ব্রতকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া । এ সুযোগে আমি আবারো ঘোষণা করছি , চীন শান্তি , উন্নয়ন ও সহযোগিতার পতাকা উত্তোলন করব , সবসময় শান্তি ও উন্নয়নের পথ অনুসরণ করব , পারস্পরিক উপকারিতা ও অভিন্ন সার্থকতার উন্মুক্ত কৌশল বাস্তবায়ন করবে , নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতান্ত্রিকায়নকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে , অর্থনীতির বিশ্বায়নকে সুষম ও ব্যাপক কল্যাণকর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে , মানবজাতির বিভিন্ন সভ্যতার বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষা গ্রহণ ত্বরান্বিত করবে , মানবজাতির অস্তিত্বের পৃথিবী সংরক্ষণের চেস্টা করবে এবং বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ রাখবে ।

    এ মুহুর্তে আমরা গভীরভাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ-বিগ্রহ , দারিদ্র্য , রোগ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জর্জরিত জনসাধাণের কথা ভাবছি । চীনা জনগণ তাদের দুর্দশার জন্যে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের দুর্দশা লাঘবের জন্যে তাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক । আমরা আন্তরিকভাবে আশা করছি যে , বিভিন্ন দেশের জনসাধারণ একই নীল আকাশের নীচে মুক্ত , সমতাপূর্ণ , সম্প্রীতিময় ও সুখময় পরিবেশে জীবনযাপন করবেন এবং সম্মিলিতভাবে মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নের সাফল্য ভোগ করবেন ।

    ২০০৮ সালে ২৯তম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পক গেমস ও প্রতিবন্ধীদের গেমস পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে । আমরা সর্বোচ্চ উত্সাহ ও উদ্যোগ নিয়ে এবারের অলিম্পিক গেমস ও প্রতিবন্ধীদের গেমসকে চীনা জনগণ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা এবং মৈত্রী ও সহযোগিতার একটি মহাসম্মিলনীতে পরিণত করবো । আমরা আন্তরিকভাবে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দেরকে চীনে এসে এবারের অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে স্বাগত জানাচ্ছি এবং বিভিন্ন দেশের বন্ধুদেরকে চীনে এসে অলিম্পিক গেমস পরিদর্শন করতে স্বাগত জানাচ্ছি ।

    অবশেষে আমি পেইচিং থেকে নববর্ষে সকলের সুখ ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি ।

    এতক্ষণ আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের মাধ্যমে " সম্মিলিতভাবে মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নের মহান ব্রতকে সামনে এগিয়ে নিন " শিরোনামে প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণী শুনলেন । সবাইকে ধন্যবাদ ।