v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-27 10:43:52    
২০০৭ সালে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতি

cri

    দেখতে দেখতে ২০০৭ সাল শেষ হয়ে যাচ্ছে । বিদায়ী এ বছরে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতি উল্লেখ করার মতো । প্রথম তিন চতুর্থাংশে চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও দ্রুত উন্নয়নের ধারা বজায় ছিল , শহর ও গ্রাম উভয় জনপদের নাগরিকদের আয় অনেক বেড়েছে , জ্বালানী সাশ্রয় ও দূষিত বর্জ্য নিঃসরণ কমানোর কাজেও নতুন অগ্রগতি হয়েছে । এসব অগ্রগতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । বিদেশের কিছু কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা ও অর্থনীতি বিশেষজ্ঞের সাক্ষাত্কার নিয়েছে সি আর আই ।

    চলতি বছরের প্রথম তিন চতুর্থাংশে চীনের জি ডি পি ১৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে । যা গত বছরের চেয়ে ১১.৫ শতাংশ বেশি । বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন , এ বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে খুব সম্ভবত ১১ শতাংশ । চীনে অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের উপ প্রধান ফ্রান্জ জেসেন চীনের দ্রুত উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেছেন :

    ২০০০ সালে চীন সরকার আগামী দশ বছরে জি ডি পি দ্বিগুণ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল । আমি বিশ্বাস করি , এই গতিতে চীন সরকার একাদশ পাঁচ শালা পরিকল্পনায় নির্ধারিত বিভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে ।

    চলতি বছরে চীনা নাগরিকদের ভোগ দ্রুত গতিতে বেড়েছে , যা প্রথম তিন চতুর্থাংশে অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ অবদান রেখেছে । এর তুলনায় রপ্তানী ও পুঁজি বিনিয়োগের উন্নয়ন ততটা উল্লেখযোগ্য নয় । প্রথম তিন চতুর্থাংশে রপ্তানী মূল্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শুধু ০.৬ শতাংশ বেড়েছে , পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ কিছুটা কমেছে ।

    চীনের ভোগ্যপন্য ও ভোক্তার দ্রুত উন্নয়ন থেকে বোঝা যায় , চীনাদের জীবনযাপন পদ্ধতি ও আয়ের মান উভয়ই উন্নত হচ্ছে ।

    পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , প্রথম তিন চতুর্থাংশে চীনের শহর ও গ্রামের নাগরিকদের আয় পৃথক পৃথকভাবে ১৩.২ শতাংশ ও ১৪.৮ শতাংশ বেড়েছে ।

    তা ছাড়া , চলতি বছরে চীনের সামাজিক নিশ্চয়ত্তা ব্যবস্থার আওতা আরো সম্প্রসারিত হয়েছে । অবসরকালীন বীমা , চিকিত্সা বীমা ও বেকারত্ব বীমায় অংশ নেয়া লোকজনের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চীন কার্যালয়ের শীর্ষ প্রতিনিধি বিবেখ অরোরা এর প্রশংসা করে বলেছেন :

    আমার মনে হয় চলতি বছরে একটি খুব উত্সাহব্যঞ্জক ব্যাপার হল কিছু সামাজিক ক্ষেত্রে চীন সরকারের বরাদ্দ অনেক বেড়েছে । যেমন শিক্ষা ও চিকিত্সা। জনগণের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন এবং অর্থনীতির ভারসাম্য উন্নয়নের জন্য এটা সহায়ক হবে ।

    অর্থনীতির অগ্রগতি ছাড়াও জ্বালানী সাশ্রয় ও বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ কমানোও চীনের সার্বিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি। চলতি বছরে চীন ৫ শোরও বেশি দূষণ সৃষ্টিকারী ও বেশি জ্বালানী ক্ষয়কারী পণ্যদ্রব্যের রপ্তানী শুল্ক সুবিধা বাতিল করেছে । ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা এমন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া ঋণও কমিয়ে দিয়েছে ।

    সম্প্রতি চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , চলতি বছরের প্রথম তিন চতুর্থাংশে চীনের মাথাপিছু জি ডি পি'র বিপরীতে জ্বালানী ব্যবহার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে । সালফার ডাইঅক্সাইডসহ প্রধান প্রধান দূষিত পদার্থের নির্গমন প্রথম বারের মত কমেছে । জাতিসংঘের আন্তঃসরকার জলবায়ু পরিবর্তন কমিশনের চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র পাচৌরি চীনের এ অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন । তিনি বলেন :

    চীন সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । জ্বালানী ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের জন্যও চীন অনেক চেষ্টা করছে ।

    বিদেশি অর্থনীতিবিদরা মনে করেন , চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন বিশ্বের জন্য বড় অবদান রেখেছে । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রকাশিত এ বছরের বিশ্ব অর্থনীতি উন্নয়ন রিপোর্ট থেকে জানা গেছে , চলতি বছর চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের অবদান চার ভাগের এক ভাগ হবে । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের গবেষণা বিভাগের পরিচালক সায়মন জনসন বলেছেন , এমন গবেষণার ফলাফল এ সংস্থার রিপোর্টে আগে ছিল না ।

    বিশ্ব ব্যাংকের প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে , সার্বিক নিয়ন্ত্রণ নীতি আরো জোরদার হওয়ায় আগামী বছর চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি কিছুটা কমবে । তবে উন্নয়নের স্থিতিশীলতা জোরদার হবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের চীনা ব্যুরোর প্রধান দু তা উই আগামী বছর চীনের অর্থনীতি নিয়ে খুব আশাবাদী ।

    ২০০৮ সালে চীনের অর্থনীতি নিয়ে আমি খুব আশাবাদী । যদিও বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নের গতি কমছে , তবে চীনের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ নীতি আছে । যদি বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নের গতি ব্যাপকভাবে কমে , তাহলে এসব নিয়ন্ত্রণ নীতি চীনের অর্থনীতির সুষ্ঠু উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবে ।