v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-25 16:28:48    
চাঁদের গান

cri

     বন্ধুরা, চাঁদের প্রতি আমাদের সবসময়ই গভীর কৌতূহল রয়েছে। নির্মল জ্যোত্স্না হৃদয় ছোঁয়া সব কল্পনার সৃষ্টি করে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসাথে চাঁদ সম্পর্কিত কয়েকটি গান ও যন্ত্র সংগীত উপভোগ করবো।

    বন্ধুরা, এখন আপনারা ফরাসী সুরকার দেবুসির সৃষ্ট 'জ্যোত্স্না' শীর্ষক যন্ত্রসংগীত শুনছেন। 'জ্যোত্স্না' হচ্ছে দেবুসির অন্যতম প্রতিনিধিত্বশীল যন্ত্র সংগীতের একটি। সংগীতটিতে কবিতার মতো মাটিতে চাঁদের আলো ছড়ানোর দৃশ্যের বর্ণনা রয়েছে। সুরের মধ্য দিয়ে তিনি একটি স্নীগ্ধ ও আকর্ষণীয় রাতের ছবি এঁকেছেন।

    চাঁদের সঙ্গে মানুষের নিত্য দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ মনে করে, চাঁদ হচ্ছে দেবতার মতো সৌন্দর্যের এক জীবন্ত প্রতীক। অনেক নাম করা সুরকার চাঁদের প্রতি তাদের বিশেষ অনুভুতিকে এক মনোরম সুরের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন সুন্দরভাবে।

    বন্ধুরা, এখন আপনারা জার্মান সুরকার বিথোফেনের 'জ্যোত্স্নার সংগীত' শুনছেন। এই সংগীতের পিছনে একটি কাহিনী রয়েছে। ১৮০১ সালের শরত্কালের এক রাতে বিথোফেন রেইন নদীর তীর ধরে হাঁটছিলেন। পাশের একটি ছোট ঘর থেকে পিয়ানোর সুর ভেসে আসছিলো। ঠিক তার সংগীতের সুরের মতই মনে হচ্ছিল। তিনি ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন একটি অন্ধ মেয়ে ও তার বড় ভাই ঘরে বসে পিয়ানোতো তার সুর অনুকরণের চেষ্টা করছে। মেয়েটি বিথোফেনের সংগীত খুব পছন্দ করে। কিন্তু দরিদ্রের কারণে সে থিয়েটারে গিয়ে বিথোফেনের পরিবেশনা দেখতে পারে না। কেবল বাসায় বসে নিজে নিজেই শেখার চেষ্টা করে। মেয়েটির সংগীতের প্রতি আগ্রহ বিথোফেনকে মুগ্ধ করে। তিনি ঘরে গিয়ে এ মেয়ের জন্য পিয়ানোয় রূপালী চাঁদের আলোয় সুর বাজিয়েছেন। মেয়েটিকে সংগীত বাজিয়ে শোনানোর পর দ্রুত বাসায় ফিরে এসে তিনি সৃষ্টি করেন 'জ্যোতস্নার সংগীত। পরে এ যন্ত্র সংগীত সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে যায়।

    বন্ধুরা, চাঁদ সম্পর্কিত দুটি যন্ত্র সংগীত শোনার পর এবার আমরা এ সম্পর্কিত কয়েকটি গান শুনবো।

    এখন আপনারা হংকংয়ের শিল্পী ওয়াং ফেইয়ের গাওয়া 'তখনকার চাঁদ' গানটি শুনছেন। ওয়াং ফেই তাঁর সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে চাঁদের আলোয় আলোকিত মহিলার মনের কথা বলেছেন। গানের কথা এমন, 'তখন আমরা সংগীত শুনছিলাম। কে গেয়েছিল, আমি তা ভুলে গেছি। তখন টেবিলে এক কাপ চা ছিল। আমি তাও শেষ করতে পারি নি। তখন থেকে এ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ের মত তোমার চুল কত লম্বা হতে পারে? তখনকার চাঁদ যেন আমার মনের কথা বলেছে। কে আমাকে বলবে, কোন্ বিশ্বাস আমার মনে চিরকাল থাকবে।'

    চাঁদের প্রতি মানুষের আবেগ আর অনুভুতি অফুরন্ত। আমরা চাঁদের নরম জোত্স্নার মতই ঘনিষ্ঠজন ও প্রেমিক-প্রেমিকার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করি। যেমন চীনের ঐতিহ্যিক উত্সব –মধ্য শারদীয় উত্সবে চীনারা যত দূরই হোক না কেন, সবাই কিছু ক্ষণের জন্যে হলেও নিজের বাড়িতে ফিরে আসে। বহু লেখক ও কবি চাঁদকে নিয়ে অনেক গল্প ও কবিতা লিখেছেন।

    বন্ধুরা, এখন আপনারা হংকংয়ের শিল্পী শু সিয়াও ফাং এর গাওয়া 'চাঁদ হাজার মাইল দূরে ভালোবাসার কথা পৌঁছে দেয়' গানটি শুনছেন। এই গানটিতে একজনের কাছ থেকে আরেকজনের দূরে থাকা দু'জন প্রেমিক-প্রেমিকার অনুভূতির কথা বলা হয়েছে। শু সিয়াও ফাং তার গানের ভেতর আপন মানুষটির অপেক্ষার যন্ত্রনাময় বেদনার কথা প্রকাশ করেছেন। গানের কথা এমন, 'রাত এসেছে, চার দিক অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। আকাশের এক প্রান্তে উঁকি দিয়ে চেয়ে আছে চাঁদ। আমাদের স্মৃতিগুলো গতকালের স্বপ্নের মতো চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়। আমরা দু'জন এত দূরে আছি। তারপরও তোমার কথা মনে পড়লেই চোখে জল এসে যায়। হে, চাঁদ, আমাদের অকৃত্তিম শুভেচ্ছাকে পরস্পরের কাছে পৌঁছে দাও।'

    এ বছর চীনের প্রথম চাঁদ অনুসন্ধান উপগ্রহ –ছাংও-এক সাফল্যের সঙ্গে উত্ক্ষেপিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চীনাদের চাঁদ অনুসন্ধানের অভিযান শুরু হলো আর চাঁদের প্রতি আমাদের কল্পনাও ফিরে এসেছে বাস্তবতার জগতে। আসলে চীনের অসংখ্য লোকসংগীতের মধ্যে চাঁদ সম্পর্কিত অনেক গান রয়েছে।

    এখন আপনারা চীনের সিনচিয়াংয়ের তাতার জাতির লোকসংগীত 'রূপালী জ্যোত্স্নায়' শুনছেন। এ গানে তাতার জাতির যুবক তার প্রেমিকার প্রতি নিজের অনিন্দ্য ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে। গানের কথা এমন, 'সোনালী সৈকতে রূপালী জ্যোত্স্না ছড়িয়ে পড়েছে। অতীতের স্মৃতিরা এখন কোথায় গেলো? কেন যে তাকে আর খুঁজে পাই না। তুমি কোথায় লুকিয়ে আছো? তোমাকে বিদায়। হে আমার প্রিয়তমা।' (ইউ কুয়াং ইউয়ে)