v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-24 15:29:16    
ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ইতালির নেতার আকস্মিক আফগানিস্তান সফরের লক্ষ্য কি ?

cri
   গত দু'দিন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই'য়ের জন্য ছিল খুবই ব্যস্ত সময়। ২২ এবং ২৩ ডিসেম্বর তিনি পৃথক পৃথকভাবে তিন পশ্চিমা নেতার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন । তারা হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সার্কোজি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি । তাঁরা কেন এ হঠাত্ করেই আফগানিস্তান সফর করছেন ।

    প্রথমত. পাশ্চাত্য দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ উত্সব ক্রিসমাস আসন্ন । তাঁরা সরজমিন সফরের মাধ্যমে আফগানিস্তানে তাদের সৈন্যদের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছেন এবং উত্সাহিত করছেন । সেখানে তাঁরা আফগানিস্তানে মোতায়েন স্বদেশের সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং আলাদা আলাদাভাবে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন ।

    দ্বিতীয়ত,দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া । গত ২ বছরে মোট ৩৩০ বিদেশী সৈন্য আফগানিস্তানে প্রাণ হারিয়েছে ,যা আফগানিস্তানে মোতায়েন সকল বিদেশী বাহিনীর মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং নিজ নিজ দেশে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি বারবার উচ্চারিত হচ্ছে । এ পরিস্থিতিতে পৃথক পৃথক দেশের তিনজন নেতার আফগানিস্তান সফর আফগান সমস্যার ওপর গুরুত্ব আরোপের পাশাপাশি স্বদেশের দাবি দাওয়া প্রশমিত করার মনোভাবেরই প্রকাশ ।

    তৃতীয়ত, আফগানিস্তানের জটিল নিরাপত্তা পরিস্থিতি । তিন নেতাই আফগান পরিস্থিতির জন্য উদ্বিগ্ন । তাঁরা সরজমিন সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখে আফগান নীতি সমন্বয় করতে চান। এর পাশাপাশি তাঁরা আফগান সরকারকে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে হামিদ কারজাইকে আশ্বস্ত করতে চান । বর্তমানে আফগানিস্তানে মোতায়েন আন্তর্জাতিক বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ৫০ হাজার, যা ৪ বছর আগের চেয়ে তিন গুণ । এই বিপুল পরিমান সৈন্যের উপস্থিতি ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করে নি । জাতিসংঘ মহাসচিবের আফগান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম কোয়েনিগস ১৫ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া রিপোর্টে উল্লেখ করেন যে, চলতি বছর আফগানিস্তানে সহিংস ঘটনার সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি এবং নিহতের সংখ্যা ৬০০০ । ১৪ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জয়েল ফিটজগিবন বৃটেনের এডিনবরায় অনুষ্ঠিত গোষ্ঠী-৮প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্মেলনে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ন্যাটো নীতি পরিবর্তন করে আফগানিস্তানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব না দিয়ে শুধু সামরিক শক্তি বাড়ালে তারা এ যুদ্ধে ব্যর্থ হবে । ২১ ডিসেম্বর হামিদ কারজাই বলেন, আফগানিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি গুরুতর , দেশ পুনর্গঠনের সময় পূর্ব পরিকল্পনার চেয়ে অনেক বেশি দীর্ঘ হবে । আগামী ১০ বছর পর্যন্ত আফগানিস্তানে বিদেশী বাহিনীর উপস্থিতি দরকার । সফরকালে, তিন দেশের নেতারা আফগান সরকারকে দীর্ঘকালীন রাজনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকের সময়, নিকোলাস সার্কোজি বলেন, আমরা সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করছি না । তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্রান্স আফগানিস্তানে আরও বেশি সৈন্য পাঠাবে । কেভিন রাড বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বাহিনী দীর্ঘকাল আফগানিস্তানে মোতায়েন থাকবে । তিনি আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়া অন্য দেশগুলোকেও আফগানিস্তানে আরও বেশি দায়িত্ব পালন করার জন্য আহ্বান জানাবে এবং উরুজগান প্রদেশের পুনর্গঠনের জন্য ৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেবে । রোমানো প্রোদি বলেন, ইতালি আফগানিস্তানের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে ।

    এছাড়া, তিন নেতার আফগানিস্তান সফর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও তাদের সমর্থনের বহিঃ প্রকাশ । মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আফগান সমস্যায় তাঁর উদ্বেগ হলো ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা । তিনি বলেন, সকল মিত্রদেশের জানা উচিত, আফগানিস্তানে গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সময় লাগবে । যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোকে আফগানিস্তানে তাদের সৈন্য মোতায়েন অব্যাহত রাখার জন্য চেষ্টা চালাবে । তিন দেশের নেতাদের এবারের সফরের বাস্তব তত্পরতা যুক্তরাষ্ট্রের মতামতেরই প্রতিফলন এবং প্রেসিডেন্ট বুশের উদ্বেগ নিরসনের জন্য যথেষ্ঠ ।

    (ছাও ইয়ান হুয়া)