v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-20 20:31:26    
চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলেরঘুর্ণিঝড়দুর্গত এলাকায় বিষ্মযকর প্রতিরোধ

cri

    সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের থাছেন উপত্যকার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত লাও ফোংখৌ চীন এমন কি বিশ্বের একটি ব্যাতিক্রমী ঘুর্ণিঝড়দুর্গত এলাকা । এখানে প্রতি বছর প্রায় ১৫০ দিন ৮ বিউফোর্ট স্কেলেঝড় হয় । শীতের সময় ভয়াবহ তুষার ঝড় হয় । ঠান্ডায় লাও ফোংখৌ এলাকায় মানুষ ও গবাদিপশু মারা যাওযার ঘটনা প্রায়ই ঘটে ।

    তুষারঝড় দুর্যোগে থাছেন উপত্যকার বিশটিরও বেশি থানার প্রায়৭০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ও তৃণভূমির স্বাভাবিক উত্পাদন বিঘ্নিত হয় । ১৯৯৩ সালে থাছেন এলাকার স্থানীয় গণ সরকার তুষার ঝড় প্রতিরোধ প্রকল্প শুরু করেছে । এ সম্পর্কে লাও ফোংখৌ এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্মাণ ও প্রশাসন কেন্দ্রের প্রধান লিউ রেনকুয়াং বলেন , ১০ বছর পরীক্ষা চালানোর পর আমরা মনে করি , ব্যাপকগাছ লাগানোদুর্যোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল উপায় । তাই ১৯৯২ সালের শেষ দিকে এবং ১৯৯৩ সালের প্রথম দিকে বৃক্ষরোপনপ্রকল্পটির প্রথম পর্যায় শুরু হয় এবং ২০০২ সালে শেষ হয় ।

    ঝড় দুর্গত এলাকায় দৈর্ঘ্য প্রস্থেদশ মিটার পরপর গাছ লাগিয়ে দশ-বারোটি বন তৈরী করা হয়েছে । ঘন বনের বাধা পেয়ে তুষার ঝড়ের গতি কমে যায় এবং বিপুল পরিমাণে তুষার বনগুলোর মধ্যেকার খালি জায়গাগুলোতে আটকে পড়ে । এর ফলে ঝড় ও তুষারের কারণে সড়কপথ এবং বাড়িঘরের ক্ষতি বিপুলমাত্রায় কমে যায় । অতি বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশে বনাঞ্চল তৈরী করা একটি অত্যন্ত কঠিন কাজ । ভয়াবহ ঝড় ও তুষার পরিবেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত প্রতিটি কর্মীর মনোবল অটুট রাখার ক্ষেত্রে রীতিমতো এক অগ্নপরীক্ষা। এ সম্পর্কে লাও ফোংখৌ এলাকার পরিবেশ প্রকল্প নির্মাণ ও প্রশাসন কেন্দ্রের সাবেক প্রধান ইয়াও চেনমিন বলেন , সেখানে কাজ করার সময় তরকারি তো দূরের কথা দুপুরে আমরা শুধু নাং ও পানি খেতাম ।

    থাছেন উপত্যকা এলাকার বিভিন্ন জাতির ৪ লাখ মানুষ দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করে ঝড় ও তুষার দুর্গত এলাকায় ৮৪০০ হেক্টর বনাঞ্চল তৈরী করেছেন । যার ফলে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সবুজ দেয়াল তৈরী হয়েছে। গ্রীষ্মকালে আজকের লাও ফোংখৌয়ের সর্বত্রই সবুজ আর সবুজ । জায়গাটি জায়গার একটি দর্শনীয় স্থানেও পরিণত হয়েছে । তুষার ঝড়ের ক্ষতিও কমে গেছে যা স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতি উন্নয়ন, কৃষক ও পশুপালকদের জীবনযাপনের পরিবেশ ও আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে । যুগ যুগ ধরে লাও ফোংখৌ এলাকায় বসবাস করা কৃষক ইয়াং সিওয়েন বলেন , এখন শীতের সময় বনাঞ্চলে বাতাস আর তেমন ভয়াবহ নয় । অতীতে ঝড় ও তুষারের কারণে পশু চারণ করা যেত না এবং সড়কপথ অচল হয়ে পড়ত । এখন বনাঞ্চল তৈরী হওয়ায় এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে ।

    বনাঞ্চলে বরফ থেকে যায় বলে ভূগর্ভের পানির উত্স সময়মতো পরিপূর্ণতা লাভ করে । বিশেষজ্ঞদের অনুমাণ অনুযায়ী লাও ফোংখৌ এলাকার সংস্কারের পর প্রতি শীত্কালে বরফ গলে যাওয়ার পরের পানির পরিমাণ ২ কোটি ৪০ লাখ কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতারএকটি মাঝারি জলাশয়ে সমান হয় । বর্তমানে থাছেনের স্থানীয় গণ সরকার বনাঞ্চল তৈরী , তৃণভূমি নির্মাণ এবং বুনিয়াদী ব্যবস্থা সহ নানা প্রকল্পের নির্মাণে ২ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে । এ সম্পর্কে থাছেনের স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তা ফং চিয়ারুই বলেন , আমরা আরও ১৩ হাজার হেক্টর বনাঞ্চল তৈরী করব । তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে থাছেন উপত্যকার চারটি জেলায় এই প্রকল্প শেষ হবে । আমরা পশু পালন ও বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে অর্থনীতির উন্নয়ন তরান্বিত করব ।

    স্থানীয় জনগণের ১৫ বছরের কঠোরপরিশ্রমের পর লাও ফোংখৌ এলাকার সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে । বিশেষজ্ঞরা এই সাফল্যকে " মানব সৃষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশ সংস্কারের একটি বিষ্ময়" হিসেবে অভিহিত করেন । ---চুং শাওলি