v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-20 17:30:12    
পাকিস্তানের বড় মাথাব্যথা ট্রেন দুর্ঘটনা

cri
    ১৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধু প্রদেশে রেলগাড়ির বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ অবশ্য এর পেছনে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দিয়েছে।

    এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাটি ১৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঘটেছে। করাচি থেকে লাহোরগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটি করাচির উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে মেহরাবপুর রেল স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছলে ১৬টির মধ্যে ১২টি বগি হঠাত্ লাইনচ্যুত হয়ে যায় এবং বগিতে বগিতে সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ছয় থেকে সাতটি বগি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।

    রেল পথ বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে মোট ১০৩৩ জন যাত্রী ছিল এবং প্রতিটি ছিল যাত্রীতে ঠাসা। পাকিস্তানে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ২০ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারী ছুটি। এক্সপ্রেস ট্রেনটির বেশির ভাগ যাত্রী ঈদে বাড়ি ফিরছিলেন। পাকিস্তানের রেল পথ মন্ত্রণালয়ের সচিব গিয়াসুদ্দিন জানিয়েছেন, এবারের দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে চিকিত্সার জন্য কাছাকাছি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিছু কিছু গুরুতর আহতকে লাহোরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কারো কারো অবস্থা আশংকাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আহতদের সংখ্যা এতো বেশি যে হাসপাতালগুলোতে রক্ত সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে আহতদের জন্য রক্ত দিচ্ছেন।

    দুর্ঘটনার পর পাকিস্তানের পুলিশ এবং সামরিক কর্মীরা অবিলম্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রেলপথ মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেলপথ বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত রেল লাইনের মেরামত কাজ চলছে। কর্মীরা করাচি থেকে লাহোরগামী রেল যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

    পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ আহতদের জন্যে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি সর্বাত্মক ত্রাণ তত্পরতা চালানো ও হতাহতদের আত্মীয়স্বজনদেরকে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচিত দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা এবং দায়ী ব্যক্তিদেরকে শাস্তি দেয়া। যাতে এ ধরণের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে আর না ঘটে। তিনি বলেন, রেল লাইনের ক্রটিই সম্ভবতঃ ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার কারণ। একটি বিশেষ তদন্ত গ্রুপ দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে।

    পাকিস্তানের রেলপথ ব্যবস্থা বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমলে স্থাপিত হয়। এর মধ্যে বহু লাইন আজ অবধি মেরামত বা সংস্কার হয়নি। দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে মাঝে মাঝে এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তিনটি রেলগাড়ির সংঘর্ষে ১৩০ জনেরও বেশী লোক নিহত হয়। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে সিন্ধু প্রদেশের সুক্কুর জেলায় একটি ট্রেন উচু-ভোল্টেজের বিদ্যুত্ লাইনের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ায় ১১ জন নিহত এবং ৪০ জনেরও বেশি আহত হয়। তখন ট্রেনটির ভেতরে জায়গার অভাবে অনেক যাত্রী ট্রেনের ছাদে বসেছিল। অক্টোবর মাসে আরেকটি ট্রেনের সঙ্গে পাঞ্জাব প্রদেশের একটি রেল ক্রসিংয়ে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ১২ জন নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশী আহত হয়।

    ঘন ঘন ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়টিকে পাকিস্তান সরকারও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। পরিবহণ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পাকিস্তান সরকার ২০০৭-২০০৮ সালের বার্ষিক বাজেটে ৬৫ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ রেখেছে। বর্তমানে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় ৪১০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। তা ছাড়া, পাকিস্তানের রেলপথ বিভাগ আরো জানিয়েছে, রেলপথ পরিবহণের ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে এবং ইরান, আফগানিস্তান, তুরস্ক এবং মধ্য এশিয়ার ছটি দেশসহ নিকটবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী রেলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে। ফলে এই অঞ্চলের আর্থ-বাণিজ্যিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। (লিলি)