v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-19 20:23:35    
সেন চেনে অস্ট্রেলিয়ান জেফ বায়ার্ন

cri

    যদিও জেফের বয়স ৬০ বছর , তবে তাঁর চেহারা অপেক্ষাকৃত তরুণ । সাত বছর আগে জেফ অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর চীনা বন্ধুর কাছ থেকে চীন সম্পর্কে জেনেছেন । এসব বন্ধুর উত্সাহেই তিনি চীনের সেন চেনে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন । প্রথম সেনে চেনে এসে কি চাকরি করবেন তা নিয়ে জেফ দিশেহারা , তখনই তিনি দেখলেন যে সেন চেনের মানুষ ইংরেজী ভাষা শিখতে আগ্রহী । তাই তিনি একটি প্রাথমিক স্কুলে ইংরেজী ভাষা শেখানোর চাকরি খুঁজতে থাকলেন । জেফ বলেন :

 

    আমি খুব শিশু পছন্দ করি , তাদের কাছ থেকে মাধ্যমে আমি সত্যি চীন এবং চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক জেনেছি । কিছু কিছু শিশু ভালো ইংরেজী বলতে পারে , তাদের বাবা মার ইংরেজী ভাষার মানও অনেক ভালো । মাঝে মাঝে আমরা একসঙ্গে ডিনার খাই , চা খাই । তাদের কাছ থেকে আমি অনেক শিখেছি ।

    শিশুদের শিক্ষক তা করাটা তেমন সহজ কাজ নয় , তবে শিশুদেরকে শান্ত রাখা এবং ক্লাসে মনোযোগী করার নিজস্ব পদ্ধতি আছে জেফের । জেফ শিশুদেরকে নিজের বন্ধু মনে করেন । এখনও তার শিশুদের সঙ্গে খেলা এবং গান গাওয়ার স্মৃতি মনে পড়ে ।

    জেফ এক দিকে শিশুদের শিখিয়ে আনন্দময় সময় কাটান , অন্য দিকে শিশুরা তাকে চীন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানায় । এভাবেই দু'বছর পার হয়ে গেছে তার । জেফ এক শোরও বেশি শিশুকে ইংরেজি শিখিয়েছেন । এখনও তাদের নাম তার মুখস্থ । তিনি বলেন , শিক্ষকতার সেই দু'বছর তার জীবনের সবচেয়ে মধুর স্মৃতি ।

    স্কুল ছেড়ে আসার সময় আমার মন খুব খারাপ ছিল । দু'বছর খুব লম্বা সময় , শিশুদের সঙ্গে খুব নিবিড় সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল । তাই চলে যাওয়ার সময় খুব কষ্ট পেয়েছি । অনেক শিশু আমাকে বিদায় দিতে গিয়ে কেঁদেছে । এখনও আমার একটি শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ আছে ।

    সময় পেলে জেফ পানশালায় যেতে পছন্দ করেন । সেন চেনের বার স্ট্রিট তার প্রিয় জায়গা । সেখানেই জেফ তার প্রিয়জনকে খুঁজে পেয়েছেন । তার নাম লু সি ইং , তিনি চুয়াং জাতির মেয়ে । যে পানশালায় জেফ যেতে পছন্দ করেন , লু সি ইং সেখানেই কাজ করেন । জেফের কাছে মনে হয় লু সি ইং খুব শান্ত এবং লাজুক প্রকৃতির । তাঁর এশীয় মেয়ের চরিত্র জেফকে দারুণ আকর্ষণ করে ।

    জেফের চীনা ভাষা খুব সীমিত , অন্যদিকে লু সি ইং ইংরেজীও পারেন না । তখন জেফ ভাষা সমম্যা সমাধানের একটি উপায় খুঁজে বের করেন । তাঁর একজন দোভাষী আছে । তিনি বলেন : 

    খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার হল সেন চেনে আমার এক জন বন্ধু আছে । যখন আমি কোনো কথা বলতে চাই , তাঁকে ফোন করি । তারপর তিনি আমার স্ত্রীর বাবাকে আমার কথা জানান । এভাবে যোগাযোগ করাটা জটিল মনে হলেও প্রথমে সেন চেনে আসার পর এ পদ্ধতি বেশ কাজে দিয়েছে ।

    এ উপায়েই জেফ লু সি ইংয়ের হৃদয় এবং তাঁর বাবা মার মন জয় করেছেন । তাদের বিয়েও হয়েছে । এখন জেফের চীনা ভাষার মান অনেক উন্নত হয়েছে , লু সি ইংও কিছু ইংরেজী শিখেছেন। বিয়ের পর জেফ সেন চেনে একটি বাড়ি কিনেছেন । সুখী জীবন উপভোগের পাশা পাশি জেফ নিজের পছন্দের চাকরিও খুঁজে পেয়েছেন ।

    চীনে আসার আগে জেফ অস্ট্রেলিয়ার একটি তথ্য মাধ্যমের সম্পাদক ছিলেন । বিয়ের পর জেফ দেখেছেন , সেন চেনে বিদেশির সংখ্যা বেড়েছে । চীন সম্পর্কিত তথ্য তাদের জন্য খুব প্রয়োজনীয় । তাই তিনি আবার তথ্য মাধ্যমে কাজ করার পরিকল্পনা করেন । এখন তিনি সেন চেন ডেইলির সম্পাদক । এ পত্রিকা দক্ষিণ চীনের একমাত্র আঞ্চলিক ইংরেজী পত্রিকা । চাইনা ডেইলি , সাংহাই ডেইলির পর এটা চীনের তৃতীয় বৃহত্তম ইংরেজী পত্রিকা । জেফ এই চাকরিতে খুবই সন্তুষ্ট । তিনি বলেন : অনেক বিদেশি সবসময় বিদেশির সঙ্গে যোগাযোগ করেন , তারা চীনা ভাষা বোঝেন না , তবে আমাদের পত্রিকায় স্থানীয় রেঁস্তরা , খাবার ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক তথ্য থাকে , চীনের সংস্কৃতিও আমরা জানাই । আমার মনে হয় এসব তথ্য খুব করাজর । বিশ্বাস করি তাদের অনুভূতিও একই । চীনের সংস্কৃতিকে পত্রিকার মাধ্যমে সবাইকে জানানো , স্থানীয় লোকজনের ইংরেজীর মান উন্নত করা এবং চীন ও বিশ্বের সংবাদ সবাইকে জানানো হল আমার দায়িত্ব।

    এ কাজের কারণে জেফ বায়ার্নও চীন ও সেন চেন সম্পর্কিত বিভিন্ন তখ্য জানতে পারেন । চীনের সাত বছরের জীবনে জেফ সেন চেনের দ্রুত উন্নয়ন উপভোগ করেছেন এবং এতে তিনি খুশি দারুণ । তিনি বলেন 

    গত সাত বছরে এখানে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে । অনেক উঁচু ভবন নির্মিত হয়েছে । প্রথমে এখানে এসে দেখেছি যানবাহনের কোনো শৃঙ্খলা ছিল না , এখন সড়ক ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলা অনেক উন্নত হয়েছে । গাড়ির সংখ্যাও অনেক বেড়েছে । সাত বছর আগে এত বেশি গাড়ি দেখা যেত না ।

    এখন সেন চেনে জেফ বায়ার্নের মত অনেক বিদেশি স্থানীয় অধিবাসীদের মত বাস করেন , তারা ক্রমেই এ শহরের একটি অংশে পরিণত হয়েছেন । জি ডি পি'র দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুন্দর এ শহরটি আরো বেশি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।