v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-18 15:59:02    
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

cri
    দক্ষিণ কোরিয়ার ১৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচন দক্ষিণ কোরিয়ার আগামী ৫ বছরের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র নীতির উপর প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি ও স্থিতিশীলতাও এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাই বিশ্বের দৃষ্টি এ দিকে তাকাচ্ছে।

    ভোট উপলক্ষে ১৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় এক দিনের সরকারী ছুটি থাকবে। যাতে নাগরিকরা সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিজের ভোট প্রদান করতে পারেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ৪ কোটি ৯০ লাখ লোকের মধ্যে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার নাগরিক ভোট দিতে পারেন। তাদের ভোটের ফলাফল অনুযায়ী ১০জন প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রেসিডেন্ট হবেন। ভোটের ফলাফল ১৯ ডিসেম্বরের রাতে বা পরের দিন ভোরে প্রকাশিত হবে।

    দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সরকার প্রধান এবং সামরিক ক্ষমতা তার হাতে ন্যাস্ত থাকবে। প্রেসিডেন্টের কার্যমেয়াদ ৫ বছর। এর পরবর্তী নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট অংশ নিতে পারবেন না। বর্তমান প্রেসিডেন্ট লু মু হিং-এর মেয়াদ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হবে।

    ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি এক জনজরীপ থেকে দেখা গেছে, সমর্থন হারের ক্রমানুসারে প্রথম তিন জন প্রার্থী হলেন, দি গ্র্যান্ড ন্যাশনাল পার্টি(জিএনপি)-র লি মেয়াং বাক, দি ইউনাইটেড নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি(ইউএনডিপি)-র ছুং তুং ইয়ুং এবং পার্টি বহির্ভূত প্রার্থী লি হোই ছাং। তাদের সমর্থনের হার যথাক্রমে ৪০, ১৫ এবং ১০ শতাংশ। ১৬ ডিসেম্বরের আগে প্রাপ্ত বিশ্লেষকদের অভিন্ন মত হলো লি মেয়াং বাক-এর নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি।

    কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর পরিস্থিতির বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। এই দিন লি মেয়াং বাকের বিবিকে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। তা ভোটারদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। বিবিকে কোম্পানি ২০০১ সালে স্টক মার্কেটের নিপুন পরিচালনার ক্ষেত্র স্টক অধিকারীদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে লি মেয়াং বাক বার বার বিবিকে কোম্পানির সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। ৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত তদন্তের পর ঘোষণা করে লি মেয়াং বাক বিবিকে কোম্পানি'র স্টক মার্কেট ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু ইউএনডিপি এই ফলাফলের স্বচ্ছতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে সংসদের কাছে আবার তদন্ত চালানোর অনুরোধ জানিয়েছে।

    ভিডিওটি ১৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার পর ছুং তুং ইয়ুং ও লি হোই ছাংসহ প্রাথীরা লি মেয়াং বাককে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট রু মু হিয়ুং আইন মন্ত্রী'র কাছে জনগণের সন্দেহ দূর করার জন্য আরেক বার তদন্ত চালানোর দাবি জানান। পরে লি মেয়াং বাক তদন্তের সঙ্গে সহযোগিতা চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। দক্ষিণ কোরিয়া সংসদ ১৭ ডিসেম্বর বিশেষ আইন প্রস্তাব গ্রহণ করে লি মেয়াং বাকের বিবিকে কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে স্বাধীন তদন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তদন্তের ফলাফল আগামী বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণের আগেই প্রকাশিত হওয়ার কথা।

    এবারের নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী বোঝা যাবে যে, আগামী ৫ বছরের জন্য মধ্য-বামপন্থী দল ক্ষমতাসীন হবে, নাকি কনসার্ভেটিভ দল ১০ বছর পর আবার ক্ষমতা আয়ত্ত করবে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উত্তেজজ অবস্থা বিরাজ করছে।

    ৬৬ বছর বয়স্ক লি মেয়াং বাক হলেন কনসার্ভেটিভ সম্প্রদায়ের মধ্যে নরমপন্থী। তিনি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার হিয়ুনদাই ইনজিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানির প্রধান পরিচালক এবং সিউ শহরের মেয়র। তার উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার সামর্থ্য তাকে সুনাম এনে দিয়েছে। নির্বাচিত হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার করবেন এবং উত্তর কোরিয়ার বর্তমান সাহায্য দেয়ার নীতির পরিবর্তন করবেন।

    ৫৪ বছর বয়স্ক ছুং তুং ইয়ুং হলেন মধ্য-বাম পন্থী দলগুলোর মধ্যে বামপন্থী দলের প্রতিনিধি। মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার একীকরণের জন্য চেষ্টা করেছেন। নির্বাচিত হলে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট রু মু হিয়ুং চালিত স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করবেন।

    ৭২ বছর বয়স্ক লি হোই ছাং হলেন কনসার্ভেটিভ দলগুলোর কঠোর মনোভাব পোষণকারী প্রতিনিধি। তিনি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিচারক এবং প্রধানমন্ত্রী। এবার হলো তার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার স্বরাষ্ট্রী নীতি লি মেয়াং বাকের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারষ্পরিক আস্থা বাড়ানোর বিষয়টি সমর্থন করেন এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরিকল্পনা পরিত্যাগ করার আগে তার সঙ্গে আর্থিক বিনিময় স্থগিত রাখার নীতিতে অবস্থান করছেন।

    দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির নিয়ম অনুযায়ী, ১৩ তারিখ থেকে জন ভোট আয়োজন পর্যন্ত আর কোনো জনজরীপ প্রকাশ করবে না। এই জন্য বিবিকে'র ভিডিও মুক্ত হওয়ার পর তিন জন প্রার্থীর সমর্থন হারের কতটা পরিবর্তিত হয়েছে তা এখনো জানা যায় নি। কিন্তু এ মতামত হয়তো সবাই রাজি যে, ভিডিও মুক্তি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য অস্থিতিশীলতা বেড়ে গেছে।

    ১৮ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের চেষ্টা করার শেষ দিন। এরপর দিনের ভোটের ফলাফল কেমন হবে তা আরো কিছু দিন ধরে অপেক্ষা করতে হবে। (ইয়াং ওয়েই মিং)