চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ ব্যবস্থা আরো পূর্ণাঙ্গ করা হবে: হু চিনথাও
পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত চীন-মার্কিন কৌশলগত তৃতীয় অর্থনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণকারী মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি, মার্কিন অর্থমন্ত্রী হেনরি পলসনের ১৩ ডিসেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও এবং প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও-এর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন।
সাক্ষাত্কালে হু চিনথাও আশা করেন, দু'দেশের সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ ব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ করা হবে। ফলে তা দু'দেশের গঠনমূলক সম্পর্কের উন্নয়নে অনুকূল হবে।
হু চিনথাও বলেন, চীন-মার্কিন কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপ এবং বাণিজ্য বিষয়ক যৌথ কমিটিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থার মাধ্যমে দু'দেশের পারস্পরিক আস্থা জোরদার এবং বাস্তব সহযোগিতা বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যার ব্যাপারে দু'দেশের যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করতে এবং দু'দেশের অভিন্ন স্বার্থ সংরক্ষণে ইচ্ছুক। দু'দেশের গঠনমূলক সহযোগিতার সম্পর্কে নতুন অগ্রগতি অর্জিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ওয়েন চিয়াপাও বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বিশ্বায়নের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা, পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা জোরদার করা, অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা এবং অর্থনীতির বিশ্বায়নে ভারসাম্যমূলক ও কল্যাণকর দিকে এগিয়ে যাওয়া।
এ সময় পলসন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ এবং চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কৌশলগত অর্থনৈতিক সংলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা নির্ধারণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সাফল্য অর্জনের জন্য সংলাপকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাবে।
চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীদ্বয় দু'দেশের সহযোগিতা সম্পর্কে মতৈক্যে পৌঁছেছেন
চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া দুদেশের সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারী সর্ম্পকের আরো প্রসারে একমত হয়েছে ।
১০ই ডিসেম্বর পেইচিংয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডাক সোর সঙ্গে সাক্ষাত্কালে তিনি এ কথা বলেন ।
তিনি আরো জানান , দুটি দেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুসারে পরিবেশ রক্ষা ও জ্বালানী ক্ষেত্রের সহযোগিতা বাড়াবে এবং পরস্পর পুঁজি বিনিয়োগ করে সহযোগিতার গুণগত মান ও কার্যকারীতা বাড়ানোর চেষ্টা করবে ।
কোরিয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়েন চিয়া পাও বলেন , চীন বরাবরই সংলাপের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের পক্ষপাতী । চীন আশা করে কোরিয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ছ'পক্ষীয় বৈঠকের বিভিন্ন পক্ষ নিষ্ঠার সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মতত্পরতা সম্পন্ন করবে ।
হান ডাক সো বলেন , দক্ষিণ কোরিয়া চীনের সঙ্গে বাণিজ্য , পুঁজি বিনিয়োগ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও যুবসমাজের বিনিময় ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াবে । ছ'পক্ষীয় বৈঠকের চেয়ারম্যান দেশ হিসেবে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার তিনি গভীর মূল্যায়ন করেন ।
জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে 'বালি দ্বীপ রোডম্যাপ' পরিকল্পনা গৃহীত
১৫ ডিসেম্বর রাতে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন শেষ হয়েছে । সম্মেলনে 'বালি দ্বীপ রোডম্যাপ' পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে এবং ২০০৯ সালের আগে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা সংক্রান্ত আলোচনার প্রধান আলোচ্য বিষয়ের জন্যে স্পষ্ট আলৌচ্যসূচী নির্ধারণ করা হয়েছে ।
'বালি দ্বীপ রোডম্যাপ'পরিকল্পনায় ২০০৯ সাল শেষ হওয়ার আগেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নতুন আলোচনা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে , প্রধান আলোচ্য বিষয়ের জন্য স্পষ্ট আলোচ্যসূচী নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ২০০৮ সালে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ৪টি বড় গোছের বিশেষ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে ।
এ গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জনের পরও বিভিন্ন পক্ষের মতামত অভিন্ন নয় । জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন একে স্বাগত জানিয়ে আলোচনায় বিভিন্ন পক্ষের নমনীয়তা ও পরস্পরকে ছাড় দেয়ার জন্য প্রশংসা করেন । কিন্তু জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন কাঠামো কনভেনশনের সচিবালয়ের নির্বাহী সচিব বলেন, মানবজাতির জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার দায়িত্ব এখনো জটিল । এ ব্যাপারে দ্রুত তত্পরতা দরকার ।চীনা প্রতিনিধি দলের উপ-নেতা , চীনের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা নেতৃত্ব গ্রুপের কার্যালয়ের মহা-পরিচালক সুওয়েই বলেন, 'বালি দ্বীপ রোডম্যাপ' পরবর্তী পর্যায়ে মানবজাতির জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে । ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিটি 'বালি দ্বীপ রোডম্যাপ' পরিকল্পনা গ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে , ইউরোপ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে ।
মুশাররফের সঙ্গে ওয়াং ই'র বৈঠক
১৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফের সঙ্গে চীন সরকারের বিশেষ দূত , উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই বৈঠক করেছেন ।
ওয়াং ই মুশাররফের কাছে এ দিন প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও'র আন্তরিক শুভেচ্ছা বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন । ওয়াং ই বলেন , চীন দেশের নিরাপত্তা রক্ষা ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের বিকাশে প্রেসিডেন্ট মুশাররফ ও পাকিস্তান সরকারের সাফল্যের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন । তিনি বলেন , চীন স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বেগবান করার ব্যাপারে পাকিস্তানের সদিচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং ধর্মীয় সন্ত্রাসী সংস্থা ও সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে ।
মুশাররফ অপর দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে চীনের হস্তক্ষেপ না করার নীতি এবং নিজের দেশ ও জাতির স্বার্থের কথা ভেবে পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের প্রতি চীনের সম্মান প্রদর্শনের প্রশংসা করেছেন । (থান ইয়াও খাং)
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পণ্যদ্রব্য পরিদর্শন শুরু
১৩ ডিসেম্বর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পণ্যদ্রব্য পরিদর্শন ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, চলতি বছরের আগস্ট মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পণ্যদ্রব্য পরিদর্শনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার ২২১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান এ প্রদর্শনীতে অংশ নেয়ার ব্যাপারে তাদের সম্মতি জানিয়েছে। প্রদর্শনীতে পাকিস্তান,শ্রীলংকা ও ভারতের ওপরও সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
|