১৯০০ সালের আগষ্ট মাসে সাংহাইয়ের ফুতুংয়ে চান ওয়েন থিয়েনের জন্ম । ১৯২৫ সালে তিনি চীনের কমিউনিষ্ট পার্টিতে যোগ দেন এবং একই বছর চুনসান বিশ্ববিদ্যালয় ও বিপ্লবী প্রফেসার ইন্সটিটিউটে লেখাপড়ার জন্য মস্কো যান । ১৯৩০ সালে চান ওয়েন থিয়েন দেশে ফিরে আসেন । ১৯৩১ সালে চান ওয়েন থিয়েন চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার বিভাগের প্রধান , পার্টির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন । ১৯৩৩ সালে চান ওয়েন থিয়েন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বিপ্লবী ঘাঁটি এলাকায় যান । তিনি সেখানে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকীয় মন্ডলীর সম্পাদক হন । ১৯৩৪ সালে চাও ওয়েন থিয়েন লং মার্চে অংশ নেন ।
লং মার্চের সময় চান ওয়েন থিয়েন মাও সেতুংয়ের নির্ভুল সামরিক নীতিকে দৃঢভাবে সমর্থন করেছিলেন । মাও সেতুং ও ওয়াং চিয়া সিয়ানের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর চুন ই সম্মেলনে ভাষণ দেয়ার সময় চাও ওয়েন থিয়েন ' বাম পন্খিসামরিক ভুলের বিরোধিতা করেছেন এবং চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি ও লাল ফৌজকে বাঁচানো আর পার্টির সামরিক লাইনের মৌলিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন । ইয়েআন অবস্থানকালে চান ওয়েন থিয়েন গোটা পার্টির তাত্ত্বিক প্রচার ও ক্যাডার প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৩৮ সালের পর চান ওয়েন থিয়েন চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য , সম্পাদক মন্ডলীর সম্পাদক , পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার মন্ত্রী ও মাক্সবাদ লেনিনবাদ ইন্সটিটিউটের প্রধান পদে কাজ করেছিলেন । তিনি চীনের জাপ- আক্রমণ বিরোধী সংগ্রামের জন্য অনেক প্রচার ও শিক্ষার কাজ করে পার্টির জন্য অনেক ক্যাডার প্রশিক্ষণ করেছেন । তার দেওয়া ' যুবকের নৈতিকতা ' আর ' আচার আচরণ সমস্যা ' প্রভৃতি ভাষণ ব্যাপক ক্যাডার ও যুবক সমাজে প্রভাব বিস্তার করেছে । ১৯৪১ সালে ইয়েনআনে শুদ্ধিকরণ অভিযান শুরু হওয়ার পর চান ওয়েন থিয়েন এক বছর সময় নিয়ে শানসি প্রদেশের উত্তরাঞ্চল আর সানসি প্রদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের গ্রামাঞ্চলে তদন্ত চালিয়ে অনেক তদন্ত রির্পোট লিখেছিলেন ।
জাপ-আক্রমণ বিরোধীযুদ্ধে জয় লাভের পর চান ওয়েন থিয়েন উত্তর-পূর্ব চীনে কাজ করতে শুরু করেন । তিনি চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির হেচিয়ান প্রাদেশিক কমিটির সম্পাদক , পার্টির উত্তর-পূর্ব ব্যুরো কমিটির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক মন্ত্রী ছিলেন । তার লেখা ' উত্তর-পূর্ব চীনের অর্থনীতির কাঠামো ও অর্থনৈতিক গঠন কাজের মৌলিক নীতি ' নামে প্রবন্ধ নয়াচীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাত্ত্বিক ভিত্তি স্থাপন করেছে ।
১৯৫০ সালের পর চাও ওয়েন থিয়েন কূটনৈতিক ফ্রন্টে কাজ করেছিলেন । তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে চীনের রাষ্ট্রদূত আর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিলেন । তিনি চীনের অনেক কূটনৈতিক অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন এবং নয়াচীনের কূটনৈতিক ব্রতে বিরাট অবদান রেখেছিলেন । ১৯৭৬ সালের পয়লা জুলাই চান ওয়েন থিয়েন চিয়ান সু প্রদেশের উ সি শহরে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ।
|