গুয়েইয়াংএ আমার চাকরি শুরু করার আগে আমি কোন দিন এখানে আসি নি। এমন কি এর আগে আমি কোন দিন চীনেও আসিনি। চীনে আসার আগে আমি বন্ধুদের কাছ থেকে চীন সর্ম্পকে কিছু না কিছু শুনেছি। অবশ্যই আমি ইন্টারেন্টার ও বইয়ের মাধ্যমে চীন ও গুয়েইয়াং সম্পর্কে জানতে পেয়েছি। চীনে আসার পর আমি গুয়েইয়াং সম্পর্কে আরও বেশী জেনে ফেলেছি। এখানে চাকরি পেয়ে আমি খুব আনন্দিত ।
চলতি বছরের ২১ মে মালয়েশিয়ার নাগরিক সাখামোর জন্য একটি স্মরনীয় তাত্পর্যসম্পন্ন দিন। চীনের গুয়েযৌ প্রদেশের রাজধানী গুয়েইয়াংএ শেরাটন গুয়েহাং হোটেল আনুষ্ঠানিকভাবে খোলার সঙ্গে সঙ্গে চীনে সাখামোর প্রথম চাকরি শুর হয়েছে। শ্রোতা বন্ধুরা, আজকের এই আসরে চীনের গুয়েইয়াংএ এই মলয়েশিয়ার নাগরিকের কাজকর্ম ও জীবন সম্পর্কে কিছু বলবো।
বতর্মানে চীনে যুক্তরাষ্ট্রের শেরাটন কোম্পানির ৩৪টি বিলাসবহুল হোটেল আছে। পরিদর্শনের পর শেরাটন কোম্পানি গুয়েহাং হোটেল পরিচালনার দায়িত্বসাখামোর ওপর দিয়েছে। এখন তিনি এই হোটেলের কার্যনির্বাহী উপ মহা ব্যবস্থাপক। যে দিন সাখামো গুয়েইয়াং এসেছেন সে দিন থেকে তিনি এই শহরকে পছন্দ করছেন।
আমি গুয়েযৌ বিশেষ করে গুয়েইয়াং শহরকে অত্যন্ত পছন্দ করি। যখন আমি গুয়েইয়াং এসেছি তখন থেকে এই শহরের পরিবেশকে আমার পছন্দ হয়েছে। এখানে রাতের দৃশ্য খুব সুন্দর ।স্থানীয় খাবারও বৈচিত্রময়। রাতবেলায় এখানে অনেক স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার পাওয়া যায়।
চীনের গুয়েযৌ প্রদেশে অজস্র পাহাড় ও জলপ্রপাত আছে। এই শহরের প্রকৃতি পরিবেশ ও স্থানীয় সংস্কৃতি সাখামোর খুব ভাল লেগেছে। গুয়েযৌ আসার কিছু দিন পর সাখামো গুয়েযৌর অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। তিনি বলেন,
আমি হুওয়াংগোসু জলপ্রপাত দেখতে গিয়েছি। আমি গুয়েযৌর দক্ষিণ-পূবাঞ্চলের সেনমো নদীর স্রোতে দূরতে দূরতে ভেসে চলেছি। তা ছাড়া , আমি স্ববৈশিস্ট্যসম্পন্ন মিও ও ঠং জাতির গ্রামগুলোতে বেড়াতে গিয়েছি। রাতের সময় আমি গুয়েইয়াং শহরের রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে পছন্দ করি। আমি গুয়েইয়াং শহরের চারপাশের দৃশ্যদর্শনীয় জায়গায় ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। এক কথায় আমি গুয়েইয়াংকে পছন্দ করি।
গুয়েইয়াং গুয়েযৌ প্রদেশের রাজধানী। চীনে গুয়েইয়াংকে " বন শহর, গ্রীষ্মকালে ছোটি কাটানো প্রযোজ্য শহর" বলে পরিচিত। কিন্তু , এখানে সাখামো যে উপলদ্ধি করেছেন কেবল তাই নয়। তিনি বলেন,
গুয়েযৌ প্রদেশে মিও , ঠং সহ বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু জাতি আছে। আমার মনে হয়, গুয়েযৌ প্রাণপূর্ণ একটি জায়গা। এ সব বৈচিত্রময় জাতি গুয়েযৌর জন্য অনেক প্রাণশক্তি এনে দিয়েছে। আমরা ভিন্ন জাতির স্বদেশীয়দের কাছ থেকে ভিন্ন জাতির সংস্কৃতি শিখতে পারি। তা ছাড়া, এখানকার সংখ্যালঘু জাতির খাবার সংস্কৃতিও অত্যন্ত মজা। আমি যে সব জায়গায় বেড়াতে গিয়েছি সে সব জায়গা ভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। আমি আমার বন্ধুদেরকে গুয়েযৌ ভ্রমণ করতে সুপালিশ করবো। যাতে তারাও আমার সঙ্গে একত্র গুয়েযৌর রহস্যময় ও বৈচিত্রময় সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারেন।
সাখামো যে বলেছেন তা একেবারে ঠিক। গুয়েযৌর সংখ্যালঘুর জাতির সংখ্যা গুয়েযৌরমোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এই ভাগের বেশী। এখানে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতি সহাবস্থানে থাকে। এখানে আসার পর, সাখামো অনুভব করেছেন যে, গুয়েযৌর মানুষ অত্যন্ত অতিথিপরায়ন। তিনি বলেন,
গুয়েযৌবাসীরা আমার মনে গভীর ছাপ রেখেছে। আমি গুয়েযৌর মানুষকে খুব পছন্দ করি। যখন আমি অন্যদের সাহায্য চাই তখন আমি সাহায্য পাই। আমাদের দেশে অনেক লোক মনে করেন যে, চীনা ভাষা অত্যন্ত কঠিন। সবাই কাজে ব্যস্ত বলে অন্যদের সাহায্য দেওয়ার সময়ও নেই। কিন্তু এখানে চীনা ভাষা শিক্ষায়অনেক লোক আমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
গুয়েইয়াং শেলাটন গুয়েহান হোটেল গুয়েইয়াং শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত বাণিজ্য অঞ্চলে অবস্থিত। রেল স্টেশন যেতে মাত্র ৫ মিনিট লাগে। গুয়েইয়াং বিমান বন্দর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূর। সাখামো বলেন, শেরাটন গুয়েহান হোটেল যদি গুয়েইয়াং শহরে আরও বেশী উন্নতি অর্জন করতে চায় তাহলে গুয়েযৌর স্থানীয় বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। তিনি বলেন,
শেরাটন গুয়েহান হোটেলগুয়েযৌর প্রথম আন্তর্জিতক মানসম্পন্ন হোটেল। এই হোটেল যাতে গুয়েইয়াংএর শ্রেষ্ঠ হোটেলে পরিণত হতে পারে সেই জন্য আমরা যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করেছি। গত বছর গুয়েযৌ প্রদেশ মোট ৪ কোট ৭০ লাখ পোসেন টাইম পর্যটককে স্বাগত জানিয়েছে। এটা সাখামোর কাছে নিঃসন্দেহে একটি ভাল খবর। তিনি বলেন,
এটা গুয়েযৌ , গুয়েইয়াং ও শেরাটনের জন্য একটি অত্যন্ত ভাল খবর। পর্যটকদের সংখ্যা বাড়লে গুয়েযৌর জন্য একটি ভাল সুযোগ। কিন্তু কিভাবে এই সুযোগ আঁকরে ধরা হয় তা হলো আমাদের বিবেচিত বিষয়। চীনের পর্যটন শিল্প বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুয়েযৌর তারকসম্পন্ন হোটেলের সংখ্যাও আপনাআপনি বেড়েছে। কিন্তু গুয়েযৌ চীনের পশ্চিমাঞ্চলের এই অনুন্নত অঞ্চল বলে হোটেল ভুর্তির সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। বতর্মানে সাখামোর জন্য এটা একটি বড় সমস্যা। তিনি বলেন,
শেরাটন হোটেল একটি বিরাসবহুল হোটেল বলে থাকার খরচ অন্যান্য হোটেলের চাইতে বেশী। সুতরাং আমরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। আমাদের হোটেল এখানে খোলার জন্য গুয়েযৌর জনসাধারণ আমাদের অনেক প্রেরণা দিয়েছেন। আমাদের হোটেল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ও সরকারী বিভাগগুলোর সমর্থনও পেয়েছে।
এখন সাখামো গুয়েইয়াংএ বেশ কয়েক মাস ধরে কাজ করেছেন। তার ধারণায় , গুয়েইয়াং হলো এমন একটি শহর যেখানে মানুয বসবাস করতে বেশ আরাম লাগে। এখানে লোকেরা সহজেই সুন্দর দৃশ্য ও মানুষের উষ্ণ আপায়ন উপভোগ করতে পারে। গুয়েযৌর কী কী তাঁর সবচেয়ে ভাল লাগে এ প্রশ্নের উত্তরে সাখামো চীনা ভাষায় বললেন,
" গুয়েযৌ একটি সুন্দর জায়গা। এখানকার আবহাওয়া সত্যিই চমত্কার। গুয়েযৌর মানুষ খুবই সৌর্হাত্যপূর্ণ।
শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনলেন আজকের অথনীতির অগ্রযাত্রা। শোনার জন্য ধন্যবাদ।
|