থিয়েটারটির স্থাপত্য কাঠামো খুব জটিল। লাউড স্পীকার না থাকলেও, থিয়েটারের যে কোন কোণ থেকে শব্দ শোনা যায়। ঠিক যেন আধুনিক একুয়াষ্টিক সিস্টেমে তৈরী। আজ পর্যন্ত, বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে, থিয়েটারে কোন লাউড স্পীকার ব্যবহার করা হয় না। দর্শক যে অপেরা দেখেন ও শুনেন, তা খুব আঙ্গীকালের। চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত অপেরা শিল্পী থান সিন পেই, ইয়ু স্যু ইয়ান ও মেই লান ফাং এখানে তাদের অভিনয় পরিবেশন করেছেন।
শ্রোতা বন্ধুরা, এখন আপনারা থিয়েটারের একটি পরিবেশনা শুনছেন। এটা হচ্ছে চীনের বিখ্যাত অপেরা 'বিদায়! আমার উপপত্নী। এখন প্রতি দিন থিয়েটারে এ অপেরা পরিবেশিত হচ্ছে। একটি বছর ৩৬৫ দিনের। চান্দ্র নববর্ষের আগের দিন ছাড়া, অন্য সকল দিনই এ স্থান সরগরম থাকে। এখানে আসা অনুরাগীদের মধ্যে চীনা ছাড়াও অনেক বিদেশী অনুরাগীও রয়েছে। ডেনমার্কের একজন পর্যটক কেনিথ অ্যারো আমাদের জানিয়েছেন—
এটা আমার দ্বিতীয় ভ্রমন। খুব মজা। আমি ডেনমার্কে কখনও এ সব দেখি নি। যদিও আমরা পুরোপুরিভাবে অপেরাটি বুঝতে পারি না, তবুও কিছুটা অংশ বুঝি। এটা বিশেষভাবে আমাকে নাড়া দেয়। এখানকার স্থাপত্যও খুব সুন্দর। আমার দেশের মানুষ এ সব জায়গা দেখেছে। তাদের মনে হয়, এটা বৈশিষ্ট্যমূলক চীনা স্টাইলের স্থাপত্য। এটা আমাদের প্রত্যাশিত চীন এবং এ সব চীনের বৈশিষ্ট্যমূলক জিনিস। এটা হচ্ছে আমার ৯ হাজার কিলোমিটার দূরের ডেনমার্ক থেকে চীনে আসার উদ্দেশ্য। আমাদের মনে হয়, এটা খুব বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।
শ্রোতা বন্ধুরা, পিকিং অপেরা উপভোগ করার পর, আপনারা অপেরা জাদুঘরে বেড়াতে বেড়াতে চীনের অপেরার ইতিহাস জানতে পারবেন। জাদুঘরে অনেক মূল্যবান জিনিস আছে। হু কুয়াং পৌর মিলনায়তনের কর্মকর্তা ওয়াং স্যুয়ে ওয়েই আমাদের জানিয়েছেন, বংশপরম্পরায় এখানে অনেক পিকিং অপেরা শিল্পী তাদের সংগৃহীত জিনিস উপহার হিসেবে দিয়েছেন। তা খুব মূল্যবান।
আমাদের এখানকার একজন বিখ্যাত অপেরা-শিল্পী ছেন দে লিনের 'ইয়াও পাই' আছে। 'ইয়াও পাই' আসলে একটি চার কোণার কাঠের টুকরো। এর উপরে ছেন দে লিনের কিছু তথ্যও খোদাই করা রয়েছে। ইয়াও পাই দেখতে এখনকার আই ডি কার্ডের মতো। আরেকটা হচ্ছে যখন ছেন দে লিনের ৬০তম জন্ম দিন তখন মেই লান ফাংসহ তার কয়েকজন বিখ্যাত অপেরা-শিল্পদের ছবি অনুযায়ী তৈরী খোদাই শিল্পকর্ম।
বন্ধুরা, পিকিং অপেরা উপভোগ এবং পিকিং অপেরার ইতিহাস জাদুঘর পরিদর্শন করার পর, চীনের অপেরা শিল্প এবং হু কুয়াং পৌর মিলনায়তনের প্রতি আপনাদের আগ্রহ নিশ্চয়ই আরো বেড়েছে? ইতিহাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে, আজকের হু কুয়াং পৌর মিলনায়তন চীনের আদিম ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি প্রদর্শনের এখন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যদি আপনারা চীনের পিকিং অপেরা উপলব্ধি করতে চান, তাহলে সময় পেলেই সেখানে বেড়াতে যাবেন।
১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে, পেইচিং হু কুয়াং পৌর মিলনায়তনের হরেকরকম প্রকল্প 'হু কুয়াং পৌর মিলনায়তন রেস্তোরাঁর উদ্বোধন হয়েছে। রেস্তোরাঁটি খাবারের সংস্কৃতি ও পিকিং অপেরা শিল্পের সমন্বয় করে, নিজেদের বৈশিষ্ট্যমূলক ভোজের ব্যবস্থা করেছে। অপেরা ভোজ পুরোপুরিভাবে খাবারের সংস্কৃতির আকর্ষণশক্তিকে তুলে ধরেছে এবং দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ব্যক্তিদের স্বাগত পেয়েছে।
অপেরার ভোজের সৃষ্টি ও উন্নয়ন, তার বিশেষ পরিবেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তার লক্ষ্য হচ্ছে খাবার শিল্পের অন্য একটি দিক থেকে পিকিং অপেরাকে দীপ্যমান করা এবং অপেরার জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ভুমিকা পালন করা।
বন্ধুরা, এখন আমি হু কুয়াং পৌর মিলনায়তন সম্পর্কিত কয়েকটি টিপসের কথা আপনাদের জানাবো। হু কুয়াং পৌর মিলনায়তন দক্ষিণ পেইচিং-এর স্যুয়ান উ জেলা, হু ফাং ছিয়াও রোডের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। প্রতি দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা ৪০ মিনিট এখানে অপেরা পরিবেশিত হয়। টিকিটের দাম দেড় শ' ইউয়ান থেকে ৫শ' ৮০ ইউয়ান পর্যন্ত। বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে পিকিং অপেরা পরিবেশন করার জন্য, প্রতি পরিবেশনায় ইংরেজী ও জাপানী ভাষার অনুবাদ থাকে। পৌর মিলনায়তন পর্যটকদের অনুবাদ শোনার জন্য ইয়ারফোন সরবরাহ করে। আপনাদের নিজেদের প্রয়োজন হলে তা ভাড়া নিতে পারেন।
|