ইন্দোনেশিয়ারবালি দ্বীপে চলমান জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বন নিধন নিয়ন্ত্রণের জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। চীন সহ বিশ্বের ১৮৮টি দেশের প্রতিনিধিরা এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে বন সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে চীনের প্রতিনিধি দলের ধারণা কি এবং এ ক্ষেত্রে চীন কি কি প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে সে সব প্রশ্ন নিয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতা লি ছিন চীনের প্রতিনিধি দলের সদস্য, রাষ্ট্রীয় বন ব্যুরোর কর্মকর্তা ওয়াং ছিন ফেনের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। এখন শুনুন তার পাঠানো একটি রেকডিংভিত্তিক রির্পোট।
সাক্ষাত্কারে ওয়াং ছিন ফেন বলেন, এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে " বন নিধন ইস্যুকে" ঘিরে আলোচনা হয়েছে। এই প্রবণতা ঠেকানোর উপর সম্পর্কে সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন,
এবারের সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো" বন নিধন" কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় । প্রতিনিধিরা মনে করেন, এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন দেশের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সবাই এক মত যে, এটা অত্যন্ত গুরুপূর্ণ ব্যাপার। চীন এ ক্ষেত্রে অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আমরা মনে করি, বন সংরক্ষণ ও উন্নয়নে চীন যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে তা প্রশংসনীয়। "
তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে চীন সরকার বন উন্নয়ন ও সংরক্ষণকেগুরুত্ব দিয়ে আসছে। গত শতাব্দীর ৭০ দশকের শেষ দিক থেকে এখন পযর্ন্ত চীন সরকার বন উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণে ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় সাফল্যও অর্জন করেছে। তিনি বলেন,
বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চীন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের বনায়নের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্বজুড়ে বন সম্পদ সম্পর্কিত এক যাচাইমূলক রির্পোটে দেখা গেছে, বনের আয়তনের বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য বড় ভূমিকা রাখে। কারন বনের আয়তন বৃদ্ধি পেলে জলবায়ুর উষ্ণতা কমতে পারে। বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চীন অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। বতর্মানে সারা চীনে প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের সংখ্যা ২৯০০টিরও বেশী । প্রতিবছর এ ক্ষেত্রে চীনের বরাদ্দও কম নয়।
এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের " বন নিধন" নিয়ে আলোচনা করেছেন। যদিও এ ক্ষেত্রে চীনের অবস্থা একটু ভাল তবু এই প্রবণতা সেখানে একেবারেই নেই তাও নয়। এ প্রসঙ্গে ওয়াং ছিন ফেন বলেন,
আমাদের দেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি নিঃসন্দেহে কিছু পরিমান বনও উজাড় করা হয়েছে। বতর্মানে বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা অনেক চ্যালেঞ্জেরমুখোমুখি হচ্ছি। যদিও চীন দেশ বন সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তবু এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা বিদ্যমান। অন্য দিকে এ ক্ষেত্রে টাকার অভাব দেখা দিচ্ছে। গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকারের বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অর্থের অভাব এখনও একটি বিরাট সমস্যা। আমাদের লক্ষ্য হলো: ২০১০ সালে বনায়নের আয়তন মোট ভূভাগের ২৩ শতাংশে উন্নীত করা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে আরও বেশি বরাদ্দ দরকার। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে আমাদের নানা ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
|