হাংচৌ শহর চেচিয়াং প্রদেশের রাজধানী । এর আয়তন ১.৬৬ বর্গকিলোমিটার , লোকসংখ্যা ৬২ লাখ ১৬ হাজার । প্রাচীনকাল থেকে হাংচৌ তার সুন্দর দৃশ্য ও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে চীনের বিখ্যাত শহরে পরিণত হয়েছে । হাংচৌ দক্ষিণপূর্ব চীনের উপকূলীয় অঞ্চল এবং ছিয়াংথাং নদীর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত । বিশ্বের বিখ্যাত চিংহাং খাল পেইচিং থেকে হাংচৌ পর্যন্ত চলে গেছে । হাংচৌ থেকে শাংহাই-এর দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার । রেলপথ বা সড়ক পথের মাধ্যমেও যাওয়া যায় । যেতে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগে ।
হাংচৌ হল চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটন শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম । প্রতি বছর দুই কোটিরও বেশি দেশী বিদেশী পর্যটক হাংচৌয় পরিভ্রমণে আসে । হাংচৌ'র সবচেয়ে বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হলো সিহু হ্রদ । প্রাচীনকাল থেকেই চীনের এ অঞ্চলের অধিবাসীরা হাংচৌকে বিশ্বের স্বর্গ বলে মনে করে । তা থেকে বোঝা যায় যে, হাংচৌ শহরের দৃশ্য কত সুন্দর হতে পারে । চীনে ইউয়ান রাজবংশের সময় ইতালির বিখ্যাত ভ্রমণবিদ মার্কো পোলো এখানে এসে মুগন্ধ হয়ে যান এবং এ শহরটিকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও চমত্কার শহর বলে প্রশংসা করেন ।
হাংচৌ শহর চীনের ২২০০ বছরের প্রাচীন সাতটি পুরনো শহরের অন্যতম । প্রাচীনকাল থেকেই চীনের পার্ক, ভবন, প্যাগোডা, মন্দির, ঝর্না ,গুহা ,সেতু এবং কাটা পাথরসহ কবিতার বিভিন্ন উপমার মত চমত্কার দৃশ্য দেখা যায় । ঐতিহাসিক ও সুন্দর দৃশ্যের শহর হিসেবে হাংচৌ প্রতি বছর নানা ধরনের পর্যটন উত্সবের আয়োজন করে থাকে । বিশেষ করে শরত্কালের পর্যটন উত্সব হল একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান । ৩৫ দিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে সিহু হ্রদ আন্তর্জাতিক ওসমানথুস ফুল উত্সব, আন্তর্জাতিক ছিয়ানথাং নদীর উর্মিমালা পরিদর্শন উত্সবসহ ১৮টি অনুষ্ঠান রয়েছে ।
আপনারা জানেন ১৯২৯ সাল থেকে হাংচৌ-এ সিহু হ্রদ মেলার শুরু । মেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের ভালভাবে হাংচৌকে জানার সুযোগ এনে দেয়। তাছাড়া, হাংচৌ শহরের গুণগতমানের ও বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পণ্য বিশ্বের পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের কাছে পছন্দনীয় । যেমন লোংচিং গ্রীন চা, হাংচৌ রেশম, ওয়াংশিংচি পাখাসহ আরও অনেক লোকশিল্প।
|