v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-12-05 18:07:31    
বাংলাদেশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজের সাক্ষাতকার

cri
    ই.খা : মি: সবুজ আপনি প্রথম চীন গিয়েছিলেন কবে ?

    কা. স : ধন্যবাদ। আমি প্রথম চীন সফর করেছি ২০০২ সালে । এর পরে ২০০৫ সালেও আরেকবার চীন সফর করেছি । পেশাগত কারনেই আমার চীন সফর । প্রথমবারের পর দ্বিতীয়বার যখন তিন বছর পর যাই তখন এক নতুন চীনকে আবিষ্কার করেছি । চীনে যারাই গিয়েছেন তারাই নতুনভাবে চীনকে আবিষ্কার করেছেন। চীন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। চীনা জনগণের একটি জিনিস আমার ভালো লেগেছে যে ওরা কথা বলেন কম এবং কাজ করেন বেশি । পৃথিবীর অনেক দেশেরই এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং অনুসরন করা উচিত । সত্যিকার অর্থে চীনের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে আমাদের । এ শিক্ষাকে আমরা যদি দেশ ও জাতির কাজে লাগাতে পারি, তাহলে তা অনেক উপকারে আসবে ।

    ই.খা : আপনি প্রথম চীন সফর করলেন কেন?

    কা.স. : ২০০২ সালে আমি নিউজ কাভার করতে চীন গিয়েছিলাম প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে । সফরকালে বেইজিং-এ আমি তিন দিন এবং ইউন্নান প্রদেশে দুই দিন ছিলাম । এর পরে ২০০৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনেতিক সম্পর্কের৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিউজ কাভার করতে । এই সফরটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে । চীন এবং বাংলাদেশের ৩০ বছর পূর্তি অনুস্ঠান চীন এবং বাংলাদেশে সুন্দরভাবে অনুস্ঠিত হয়েছে । দু'টো দেশই এই ৩০ বছর উদযাপনের উপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছে । দু'টি দেশের মধ্যে যে উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে সে ব্যপারেও অঙ্গীকার রয়েছে দু'দেশের মধ্যে । আমি বেইজিং ও বেইজিং এর বাইরে গ্রেট ওয়াল দেখতে গিয়েছি ।

    ই.খা : কেমন লেগেছে গ্রেট ওয়াল ?

    কা.স : আমার কাছে বিষ্ময়কর মনে হয়েছে । যতক্ষণ সেখানে ছিলাম ততক্ষণ আমার স্মৃতিপটে ভেসেছিল যে, মহাশুন্য থেকে দেখা যায়, পৃথিবীর একমাত্র নিদর্শন । প্রায় আড়াই হাজার বছর আগেকার এই গ্রেটওয়াল তৈরী শুরু হয়েছিল এবং কী করে তারা এটিকে তৈরী করেছিল । কী পরিমান তাদের কমিটমেন্ট ছিল , তা বুঝা যায় । এর পরবর্তি সময়ে চীনের যে উন্নতি আমরা অর্থনেতিক ক্ষেত্রে দেখেছি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখেছি জনগণের নিস্ঠা, তাদের পরিশ্রম ও তাদের একাগ্রতার প্রতিফলন সকল কাজেই খুজে পাওয়া যায় ।

    ই.খা : একটু আগে আপনি বলেছেন বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমতকার কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে । এই সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষিতকে আপনি কী ভাবে দেখছেন ?

    কা.স : আসলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তা হচ্ছে শত বছরের । চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে । সত্যিকার অর্থেই এই সম্পর্ক বহু দিনের পুরোনো । এ উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে । গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে বাংলাদেশসহ এ অন্চলের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব অনেক বেড়েছে । সত্যিকার অর্থে চীন এবং বাংলাদেশ দু'টিই উন্নয়নশীল দেশ । যদিও আমার কাছে চীনকে উন্নয়নশীল দেশ মনে হয় না, তবে তারা নিজেদেরকে উন্নয়নশীল দেশ বলে থাকে । তারপরও প্রাইভেট সেক্টর হোক আর পাবলিক সেক্টর হোক চীনের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে । সাংবাদিকদের সঙ্গে চীনের একটা সম্পর্ক আছে আপনি জানেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের একটা এক্সচেন্জ প্রোগ্রাম আছে সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে। এর মাধ্যমে প্রতি বছরই চীনের একটি সাংবাদিক প্রতিনিধি দল এখানে আসে এবং বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধি দল চীনে যান । এর বাইরেও চীনের ও বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রোগ্রামে উভয় দেশে যতায়াত করে থাকে তাদের পেশাগত কাজে ।

    ই.খা: এই মাত্র আপনি বললেন যে সাংবাদিকদের একটি এক্সচেন্জ প্রোগ্রাম আছে । এক্সচেন্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যেমন বাংলাদেশের মানুষ চীনকে জানছে আর চীনের মানুষ বাংলাদেশকে জানছে । এ বিষয়টিকে আপনি কী ভাবে দেখেন ?

    কা.স: এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা । বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে সেটাকে আরো দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করার জন্য গণ-মাধ্যমের একটা বিশেষ ভূমিকা রয়েছে । বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রোগ্রামে যাচ্ছেন তারা দু দেশের সম্পর্ককে আরো জোরদার করার জন্য তাদের লেখার মাধ্যমে ও বক্তব্যের মাধ্যমে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন । আমি আশা করি সাংবাদিকদের এই এক্সচেন্জ যদি আরো বাড়াতে পারি দু'দেশের জনগণ আরো ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হতে পারবে ।

    ই.খা : আপনি বিশ্বের রাজনীতির খোঁজ-খবর রাখেন । আপনি একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন যে চীন বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশকে সহযোগিতা করছে, কিন্তু কোন দেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে না । এ বিষয়টিকে আপনি কী ভাবে দেখছেন ।

    কা.স : এ বিষয়টি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে । এ বিষয়টিকে চীন এপ্রিসিয়েট করে এবং আমরাও এপ্রিসিয়েট করি । এ কারনে সারা বিশ্বে একটা ভাবমূর্তি রয়েছে । তারা কারো অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করে না । এটিকে বাংলাদেশের জনগণ অবশ্য প্রশংসার দৃস্টিতে দেখে ।

    আপনি দেখেছেন যে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন অনেক সাহায্য করেছে । বাংলাদেশের যে সবচেয়ে বড় কনভেনশন হল সেটাও চীন করে দিয়েছে । ব্রিজ ও রাস্তাঘাট করে দিয়েছে । কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছেনা । এ বিষয়টিকে আপনি কী ভাবে দেখছেন ?

    কা.স : আপনি জানেন যে চিন বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু । চীন এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। বাংলাদেশের আনেক উন্নয়ন প্রকল্পে তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন এর ফলে দু'দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হয়েছে ।বাংলাদেশ চীন মৈত্রি সম্মেলন কেন্দ্র চীন করে দিয়েছে । আপনি জানেন যে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর সফরের পর তারা এর জন্য দেয়া ঋণ মওকুফ করে দিয়েছে । এটি দু'দেশের উষ্ণ বন্ধুত্বের নিদর্শন । ওরা ব্রিজ করে দেয়া ছাড়াও কিছু থার্মাল প্ল্যান্টও করে দিয়েছে । তারা অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করছেন । আমি বিশ্বাস করি এবং আশা করি যে ভবিষ্যতেও তাদের এই সাহায্য ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে । দু'দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের জনগণের আস্হা আরো বৃদ্ধি পাবে ।

    ই.খা : আপনি জানেন যে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ এবং সার্কভুক্ত যে দেশগুলো আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে এবং বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে একই সঙ্গে চিন সার্কের অবজারভার স্ট্যাটাস পেয়েছে এ বিষয়টি আপনি কী ভাবে দেখেন ?

    কা.স : চীন এবং বাংলাদেশ অনেক আন্তর্জাতিক ও আন্চলিক ফোরামে একই অভিন্ন অবস্হানে রয়েছে । আমাদের যে সার্ক রয়েছে তা সাতটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত । এ সংস্হায় পরে যে কয়েকটি দেশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে চীন তার মধ্যে অন্যতম । এটা অত্যন্ত ভালো হয়েছে যে এ অন্চলে চীনের যে অভিজ্ঞতা তাকে বিশেষ করে পার্বত্য দেশগুলোর জনগণের কল্যানে কাজে লাগাতে পারবো ।

    ই.খা : আপনি আগে বলেছেন যে, চমতকার কূটনৈতিক সম্পর্ক দু'দেশের মধ্যে রয়েছে এবং এট দ্যা সেইম টাইম চীন একটি জনবহুল দেশ । বাংলাদেশও একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ । সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণ কী ধরনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে ?

    কা.স : আপনি ঠিকই বলেছেন চীন এবং বাংলাদেশ দু'টিই জনবহুল দেশ । আমাদের বর্তমান যে পপুলেশন রয়েছে এটা আগের তুলনায় বৃদ্ধির হার অনেক কমেছে । এদিকে জনবহুল চীনের পরিবার পরিকল্পনার যে কর্মসূচী রয়েছে এ বিষয়টি বাংলাদেশ অনুসরন করলে আরো ভালো করতে পারবে বলে আমি মনে করি ।