২২ নভেম্বর পাকিস্তানের সুপ্রিকোর্ট পারভেজ মোশাররফের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা সর্বশেষ রিটও খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পথের সকল কাঁটা দূর হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ রিটের ওপর শুনানির পর প্রধান বিচারপতি মালিক মুহামাদ কায়াম রিটটি খারিজের কথা জানিয়েছেন। গত ১৯ নভেম্বর পাকিস্তানের সুপ্রিকোর্ট পারভেজ মোশাররফের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা ৫টি অভিযোগ খারিজ করে দেয়। পারভেজ মোশাররফের প্রধান আইন উপদেষ্টা শরিফুদ্দিন পীরজাদা বলেন, দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে শপত নিতে আর কোন আইনি বাধা নেই। এখন কেবল সুপ্রীকোর্টের লিখিত নির্দেশের অপেক্ষা।
জানা গেছে. ২২ নভেম্বর অভিযোগটি খারিজ করে দেয়ার পর পাকিস্তানের সূপ্রীমকোর্ট প্রধান বিচারপতি মালিক মুহামাদ কাইয়ুমকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিস্তারিত দলিলপত্র দাখিলের অনুরোধ করেছেন। ২৩ নভেম্বর সুপ্রীমকোর্ট সম্ভবতঃ লিখিত রায় করবে। এর পর পাকিস্তানের নির্বাচনী কমিশন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পারভেজ মোশাররফের বিজয়ের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলিত সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে পারভেজ মোশাররফ সেনা প্রধানের পদ ছেড়ে দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে পরর্বতী মেয়াদের জন্যপারভেজ মোশাররফ শপত নেয়ার কথা। তিনি আরও বলেন, ১৯৭৩ সালের সংবিধান অনুযায়ী পারভেজ মোশাররফ বেসামরিক প্রসিডেন্টের পদে বহাল থাকবেন।
গত ২ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ওয়াজিহুদ্দিন আহমেদ ও আমিন ফাহিম সেনা প্রধান পদে থাকার পাশাপাশি পারভেজ মোশাররফের নতুন মেয়াদে প্রেসিডেন্টপ নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোটে মামলা করেছিলেন। তবে এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ না দিয়ে গত ৫ অক্টোবর এক নিদেশনায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠানের পক্ষে মতামত দেয়। পাশাপাশি এই রিটের ওপর শুনানি শেষে রায়ের পরই কেবল নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা যাবে বলে রুলিং দেয়। গত ৬ অক্টোবর পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পারভেজ মোশাররফ বিশাল ব্যাবধানে বিজয়ী হন।
গত ৩ নভেম্বর পারভেজ মোশাররফ সারা দেশে জুরুরী অবস্থা জারি করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি একটি অস্থায়ী সংবিধান জারী করে এবং স্থায়ী সংবিধান করে নিতি একটি আপদকালীন সংবিধান জারী করেন। এর পর পাকিস্তানের পুলিশ সূপ্রীমকোর্ট অবরোধ করে রাখে । প্রধান বিচারপতি ইফতিখান মোহামেদ চৌধুনীকে অপসারণ করেন। এবং প্রতিথাদে বেশী কয়েক জন বিচারপতি তখন পদত্যাগ করেছেন। পারভেজ মোশাররফ মিলক মুহামাদ কাতক্ষানিকভাবে আব্দুল হামদ ডগারকে নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন। সে দিন রাত্রে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পারভেজ মোশাররফ বলেন, জরুরী অবস্থা জারি করার উদ্দেশ্য হলো দেশের স্বার্থ রক্ষা করা এবং দিন দিন বেড়ে চলা সন্ত্রাসী তত্পরতার ওপর আঘাত হানা এবং অর্থনীতির নিম্নমূথি গতি প্রতিরোধ করা । এর পর তিনি আরও কয়েকজন নতুন বিচারপতিকে নিয়োগ দেন।
সেনা প্রধান পদ ছেড়ে দেয়ার প্রসংগে পারভেজ মোশাররফ বেশ কয়েকবার বলেন , পরর্বতী মেয়াদের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেয়ার আগে তিনি সেনা প্রধানের পদ ছেড়ে দেবেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, চলতি মাসের শেষ দিকে তিনি বেসামরিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ প্রেসিডেন্টের কার্যমেয়দ শুরু করবেন।
এক খবরে জানা গেছে, আগামী বছরের ৮ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় পালোর্মান্ট নির্বাচন বর্জন করার জন্য পাকিস্তানের সাবেক প্রধান মন্ত্রী, পিপলস পাটির চেয়াম্যান বেনজির ভূট্টর ও মুসলিম ইউনয়নের নেতা নাওয়াজ শরিফ একটি কৌশল প্রনয়ণ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের আচরণ হয়তো পাকিস্তানের বতর্মান পরিস্থিতির ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু পারভেজ মোশাররফের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পথের সকল কাঁটা দূর হয়েছে।
এতক্ষণ শুনলেন আজকের প্রতিবেদন। আমাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি শোনার জন্যে অশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন , সুস্থ্য থাকুন ।
|