আসিয়ানের হচ্ছে মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড কর্তৃক ১৯৬১ সালের ৩১শে জুলাই ব্যাংককে প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ইউনিয়নের রূপান্তর। ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইন এ চারটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিততে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে 'আসিয়ান প্রতিষ্ঠার ঘোষণা' অর্থাত্ 'ব্যাংকক ঘোষণা' প্রকাশ করা হয়েছে। এভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের যাত্রা শুরু।
বিংশ শতাব্দীর আশির দশকের পর, ব্রুনেই(১৯৮৪ সালে), ভিয়েতনাম (১৯৯৫ সালে), লাওস (১৯৯৭ সালে), মিয়ানমার (১৯৯৭ সালে) এবং কম্বোডিয়া (১৯৯৯ সালে) এ পাঁচটি দেশ পর পর এই সংস্থায় যোগ দেয়। এতে করে আসিয়ান তার প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকের ৫টি দেশ থেকে বর্তমানের ১০ টি দেশে উন্নীত হয়েছে।
আসিয়ানের লক্ষ্য হচ্ছে সমতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে মিলিত প্রচেষ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়ন, সমাজের অগ্রগতি ও সংস্কৃতির বিকাশ ত্বরান্বিত করা; ন্যায়-বিচার, দেশে দেশে সম্পর্ক সংক্রান্ত নীতি ও জাতিসংঘ সনদ অনুসরণ করে এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ত্বরান্বিত করা; আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও পারস্পরিক কল্যাণমূলক সহযোগিতা করা।
আসিয়ানের রূপরেখা হচ্ছে শীর্ষ সম্মেলন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন, স্ট্যান্ডিং কমিটি, অর্থমন্ত্রী সম্মেলন, অন্যান্য মন্ত্রীদের সম্মেলন, সচিবালয়, বিশেষ কমিটি ও বেসরকারী ও আধা সরকারী সংস্থা। শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে আসিয়ানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী সংস্থা। প্রতি বছর এক বার করে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সদস্যদেশ পালাক্রমে সম্মেলনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন হচ্ছে আসিয়ানের মৌলিক নীতি প্রণয়নকারী সংস্থা। প্রতি বছর পালাক্রমে সদস্যদেশে তা অনুষ্ঠিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রধনত আসিয়ানের কূটনৈতিক নীতি পর্যালোচনা করে এবং সুনির্দিষ্ট সহযোগিতার প্রকল্প কার্যকর করে। এ বছর জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত ১২তম আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের মধ্যে 'আসিয়ান সনদ' তৈরী সংক্রান্ত ঘোষণা গৃহীত হয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ গ্রুপ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 'আসিয়ান সনদ' বিরূপ সম্পর্ক থেকে মুক্তি এবং বাধ্যবাধকতাহীন আঞ্চলিক সংস্থা গঠনে আইনী কাঠামো সরবরাহ করবে। (খোং চিয়া চিয়া)
|