চীনে এখন শীতকাল এবং সম্ভবত বাংলাদেশের আবহাওয়াও একটু একটু ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে, তাইনা ? এ সময় আমাদের পেটের অতিরিক্ত মেদ গরমকালের চেয়ে আরও বেশি বেড়ে যায় । বিশেষ করে যারা প্রতিদিন অফিসে বসে বসে কাজ করেন, তাদের জন্য এটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে । তাহলে কীভাবে পেটের অতিরিক্ত মেদ কমানো যাবে ? আজকের অনুষ্ঠানে আমি এ সম্পর্কে আপনাদেরকে কিছু তথ্য দেবো ।
প্রথমে আমি আপনাদেরকে পেটের অতিরিক্ত মেদ বাড়ার কারণ নিয়ে কিছু কথা বলবো ।
আসলে পেটে অতিরিক্ত মেদ জমা আপনাদের সাধারণ জীবনে নিয়ম বিহীন খাবার ও চলাকেরার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । সাধারণত যে কারণে মেদ বাড়ে তার প্রধান ৪টি কারণ হচ্ছে:
১. সবসময় বসে থাকা বা বসে কাজ করা
দিনের অধিকাংশ সময় বসে থাকা বা বসে কাজ করার জন্য সহজভাবেই পেটে অতিরিক্ত মেদ জমে যাবে । বিশেষ করে খাবার খাওয়ার পর কোনো হালকা শরীর চর্চা বিহীন, শুধু বসে বসে কাজ করা বা টেলিভিশন দেখা অথবা খাবার খাওয়ার পর পরই ইন্টারনেট দেখে । ফলে খাবারের মধ্যে থাকা অধিকাংশ চিনির উপাদান দ্রুত মেদে পরিণত হয়ে যায় এবং পেটে মেদের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকে ।
২. বেশি চাপের সম্মুখীন
বেশি কাজেরচাপের সম্মুখীন হওয়ার সময় অনেকে বেশি খাবার খাওয়ার মাধ্যমে তাদের মনকে শিথিল করেন অথবা অনেক খিদে লাগলেই যথেষ্ট সময় খাবার খাওয়া । তখন স্বাভাবিকভাবেই অতিরিক্ত খাবার থেকে শরীর এবং বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে । যার কারণে সহজেই মোটা হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আর বাধা থাকে না ।
৩. বসার ভঙ্গি
অনেক লোকেরই পেটে মাংসের পরিমাণ খুব কম, তাই বসার সময় তারা মোকার ওপর শুয়ে থাকে এবং হাঁটার সময় তার গোটা শরীরটাকে শিথিল করে হাঁটে , ফলে তাদের পেটের ওপর চাপ বেশি পড়ে ফলে সহজেই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং মোটা হয়ে যায় ।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য
অনেক লোক বিশেষ করে নারীরা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে । দীর্ঘ সময় ধরে শরীরের অতিরিক্ত অরূপান্তরিত খাদ্যবস্তুপেটের ভেতর জমে থাকে ,যার ফলে ধীরে ধীরে পেটের মেদ বেড়ে যায় ।
বন্ধুরা, আপনারা জানেন কি যে, কয়েক ধরনের খাবার আমাদের পেটের মেদ কমানোর জন্য অনেক সহায়ক ।না জেনে থাকলে আমি এখন জানিয়ে দিচ্ছি । সকল লাভের জন্য মনে রাখবেন কিন্তু।
১.কাগজি বাদাম
কাগজি বাদামের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন , কোষপুঞ্জ , ভিটামিন ই ও খনিজ উপাদান ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে । তা হচ্ছে শরীরের মাংসপেশি ও রক্তে চিনি তৈরীর প্রয়োজনীয় উপাদান , রক্তোচিনি নিয়ন্ত্রণ করার পাশপাশি অতি খিদের কারণে বেশি খাবার খাওয়ার ফলেও মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে । কারণ কাগজি বাদামের সবচেয়ে চমত্কার ভুমিকা হল তা শরীরের ক্যালরিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম । গবেষণা থেকে জানা গেছে, কাগজি বাদামের সেলের মধ্যে যে উপাদান রয়েছে তা শরীরকে মেদ গ্রহণে বাধা দেয় । এ কারণে আপনারা যদি প্রতিদিন ২০টি কাগজি বাদাম খান, তাহলে শরীরের স্লিম বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে ।
২. ডিম
ডিমের মধ্যে নানা ধরনের টিপটোফান ও প্রোটিন রয়েছে । গবেষণা থেকে জানা যায় যে, প্রতিদিন সকালের নাস্তার সময় ডিম খাওয়া লোকজনের সারাদিনে যে পরিমাণ খিদে লাগে, তার চেয়ে বেশি খিদে লাগে ডিম না খাওয়া লোকজনের । ডিমের মধ্যে প্রোটিন থাকায় পেট ভরয় থাকার অনুভূতি থাকে সারাদিন । যদি আপনাদের শরীরের কোলেস্টরল স্বাভাবিকথাকে, তাহলে প্রতিদিন সকালে একটি করে ডিম খাওয়া ভালো ।
৩. ডাল
ডালের মধ্যে কোষপুঞ্জ ও প্রোটিন রয়েছে । তা দিয়ে বীনকার্ড বা সয়া তৈরী করা যায় । এসব খাবার শরীরের স্লিম অবস্থা ধরে রাখার জন্য অনেক সহায়ক । মার্কিন পুষ্টি ইনস্টিডিউটের এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, প্রতিদিন সয়া খাওয়া লোক দূধ খাওয়া লোকদের চেয়ে আরো বেশি স্লিম । প্রতিদিন ২৫ গ্রাম ডাল খেলে, শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সহায়তা করবে ।
|