দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল ও চীনের মধ্যে দূরত্ব খুবই বেশি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ও ধাপে ধাপে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সংস্কৃতিতে তুলে ধরে "চীন দিবস" শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানটি বহু শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও শহরবাসীকে আকৃষ্ট করেছে। এতে ব্রাজিলের জনগণের চীনকে জানার আগ্রহ প্রতিফলিত হয়েছে।
এই সুন্দর গানের চীনা নাম হলো আমার বন্ধু, তুমি কোথায়? চীনে এই গানটি খুবই বিখ্যাত। এবার ব্রাজিলের ছোট মেয়ে মারিয়া এই গান গাইছে। সুন্দর গানের মাধ্যমে এদিন এই ছোট মেয়েটি অনুষ্ঠানের ছোট সুপার স্টারে পরিণত হয়েছে। এই নয় বছর বয়সী মেয়ে শুধু দু'মাস ধরে চীনা ভাষা শিখেছে।
চীনা ভাষা শিক্ষক আমাকে এই গান শিখিয়েছেন। চীনা ভাষা শিখতে আমি খুব আগ্রহী। শুধু দু'মাসেই, আমি বেশ কিছু চীনা ভাষা বলতে পারি। যেমন বাবা, মা, ছোট পশু ইত্যাদি। আমি চীনকে ভালবাসি।
মারিয়ার মত চীনকে পছন্দ এবং চীনের সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ রয়েছে এমন অনেক লোক ব্রাজিলের এ চীন দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী এবং শহরবাসীরা। তাঁরা সবাই চীনের সংস্কৃতি জানতে চান।
২২ বছর বয়সী টিয়াগো রিও ডি জেনেরিও ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চীন সংক্রান্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের খবর শুনার পর আনন্দের সঙ্গে প্রদর্শনী স্থানে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
4
এবারের অনুষ্ঠানের তাত্পর্য রয়েছে। চীনের সুন্দর ইতিহাস ও শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি রয়েছে। এ সংস্কৃতি বিষয়বস্তু, যেমন তার স্থাপত্য, তার চালচলন আধুনিক সমাজের কারিগরি উদ্ভাবনের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ। এছাড়া চীনের সংস্কৃতির কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। চীন জানে যে, কিভাবে এই সংস্কৃতি সুরক্ষা করা যায় এবং কিভাবে বিশ্বে এই সংস্কৃতিকে তুলে ধরা যায়। আমি মনে করি, এবারের অনুষ্ঠান খুবই মজার।
পরিদর্শনকারীগণ এদিনের অনুষ্ঠানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রদর্শনী স্থানে বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর ছবিতে চীনের সংস্কৃতির দীর্ঘকালীন ইতিহাস এবং চীনের জনগণের সুষম জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া চীনের ইতিহাসের জ্ঞান সংক্রান্ত বিশেষ কোর্স, চীনের রীতিনীতির উপর তৈরি প্রামান্য চলচ্চিত্র অংশগ্রহণকারীদের আকৃষ্ট করেছে। প্রদর্শনী স্থানে পরিবেশিত চীনা খাবারেরও অংশগ্রহণকারীগণ প্রশংসা করেছেন। এর পাশাপাশি চীনের জাতীয় নৃত্য ও সংগীত এবং কুংফু অংশগ্রহণকারীদের অবাক করেছে। কারণ সব প্রদর্শনকারীই হচ্ছেন ব্রাজিলের লোক।
রিওডি জেনেরিওয় চীনের কনসুলেট জেনারেল এবারের চীন দিবস অনুষ্ঠানকে ব্যাপক সমর্থন দিয়েছে। কনসাল জেনারেল ইয়ান সিয়াও মিন অনুষ্ঠানের আগে এক ভাষণে বলেছেন,
চীনের পাঁচ হাজারেরও বেশি বছরের ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাসের গতিধারায় চীনের সভ্যতা মানবিক সমাজের উপর সুদূর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করেছে। আমি আশা করি, আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনারা চীনকে আরো বেশি জানতে পারবেন। যাতে দু'দেশের জনগণের বিনিময় জোরদার এবং মৈত্রীকে গভীর ও ত্বরান্বিত করা যায়। এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের একটি বাস্তব দাবিও বটে।
এবারের চীন দিবস অনুষ্ঠান চলতি মাসে রিওডি জেনেরিও ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ফোরামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ফোরামের সংস্কৃতি ও প্রচার বিভাগের পরিচালক মারিয়া তিয়াস বলেছেন, প্রত্যেক বছর রিওডি জেনেরিও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সংগঠনের মাধ্যমে জনগণকে একটি দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
চলতি বছর আমরা চীনকে তুলে ধরছি। চীন হচ্ছে ব্রাজিলের অংশীদার। বাণিজ্যিক বা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতা রয়েছে। চীনের দীর্ঘকালীন ইতিহাসে বহু শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি রয়েছে। আজকে প্রদর্শনীর পণদ্রব্য ও অন্যান্য অনুষ্ঠান থেকে এটা বোঝা যাবে। আমি খুবই পছন্দ করি।
আচ্ছা, শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের "বিজ্ঞান বিচিত্রা" এখানেই শেষ করছি। আমাদের সঙ্গে থেকে অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শ্রোতাবন্ধুরা, বিজ্ঞান ও জীবন অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত আমাদের অনুষ্ঠানকে আরো সমৃদ্ধ করবে। আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকেন। (লিলু)
|