চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে অবস্থিত। স্থানটি তুষার আবৃত পাহাড় বিস্তৃত। সেখানে অকসিজেনের অভাব বলে উত্পাদনের ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে তিব্বত নিজের বৈশিষ্ট্যময় কৃষিজাত দ্রব্যের প্রক্রিয়করণ ও গ্রামীণ শিল্পকে প্রয়োগ করে স্থানীয় কৃষক ও পশুপালকদের আয় বাড়িয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রাকে উন্নত করেছে। এখন শুনুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতার একটি রির্পোট।
৪৪ বছর বয়স্ক সেওয়াং তিব্বতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গনবুডা জেলার লাংসে গ্রামের কৃষক। কয়েক বছর আগে, স্থানীয় সরকারের সাহায্যে তিনি একটি পাইন মাশরুমের প্রক্রিয়করণ কারখানা খোলেন। তিনি বলেন, প্রক্রিয়াকরণ শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে তার চার সদস্যেরপরিবার ৪০০ বর্গ মিটারের বাড়ীতে উঠেছে। পরিবারে নানা ধরনের ঘরোয়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি আছে। জীবনযাত্রা আগের চাইতে অনেক উন্নত হয়েছে।
অতীতে আমারর পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। শুধু আমার পরিবার নয় , গোটা গ্রামটি ছিল খুব গরীব। পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন অভিযান নীতি চালু হওয়ার পর আমাদের এখানে বড় বড় রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। সুতরাং আমি একটি দোকান । আমি গ্রামবাসীদের উত্পাদিত পাইন মাসরুম সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াকরণের পর বিক্রি করবো। বতর্মানে আমার পরিবারের আয় অধিক থেকে অধিকতর হয়েছে। "
সেওয়াং-এর মতো কৃষক তিব্বতের গ্রামাঞ্চলে আরও অনেক আছে। গত বছর লাংসে গ্রামের গ্রামবাসীরা পাইন মাশরুম বিক্রি করে বার্ষিক মাথা পিছু আয় বিপুল মাত্রায় বাড়িয়েছে। গত মে মাসে সারা গ্রামের বিদ্যুত, পানি , বেতার ও টেলিভিশন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের উত্পাদন ও জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে।
বতর্মানে তিব্বত স্বাযত্তশাসিত অঞ্চলে ৪ লাখ ৩০ হাজার কৃষক ও পশুপালক বৈশিষ্ট্যময় উত্পাদন শিল্পে নিয়োজিত হয়েছে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কমিউনিষ্ট পাটির কমিটির সম্পাদক জেন ছিন লি বলেন, বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কৃষি ও পশুপালন শিল্প তিব্বতী কৃষক ও পশুপালকদের আয় বাড়ার একটি নতুন পথে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন,
কৃষি ও পশুপালকদের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছি। যেমন কাঠামো পুনরদ্ধার করা এবং কৃষক ও পশুপালকদের গুণগতমান উন্নত করা। কৃষক ও পশুপালকদের জন্যে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণে প্রতি বছর তিব্বতের স্থানীয় সরকার তিন কোটিরও বেশী ইউয়ান রেন মিন পি ব্যয় করে।
চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য ছাড়া তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কৃষক ও পশুপালকদের জীবনযাত্রার উন্নতি কখনোই সম্ভব হতো না। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চেয়াম্যান ছিয়ানবা পুনখন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিব্বত উন্নয়নে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এ সব সাহায্যে ব্যাপক তিব্বতী কৃষক ও পশুপালকরা হিতকর হয়েছে। তিনি বলেন,
রাস্তার নির্মান, বিদ্যুত ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বিপুল পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ করেছে। এখন গ্রামবাসীরা বিনা পয়সায় চিকিত্সা নিতে পারেন । ছাত্র-ছাত্রীরা বিনা পয়সায় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। গত কয়েক দশকে তিব্বতে কোন কর আদায় করা হয় নি। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে জনসাধারণের জীবনযাত্রা অনেক উন্নত হয়েছে।
|