v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-15 17:00:26    
আসিয়ান নিরাপত্তা কমিউনিটির প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত আসিয়ানের চেষ্টা

cri

    আসিয়ানের দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্মেলন ১৪ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আসিয়ানের দশটি সদস্য দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা আলোচনার পর একযোগে বলেছেন, ২০১৫ সালে "আসিয়ান নিরাপত্তা কমিউনিটি" প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আসিয়ানভুক্ত বিভিন্ন দেশ এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সহযোগিতার মাধ্যমে জোরালো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

    ১৯৬৭ সালে আসিয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়। বহু বছর ধরে উন্নয়নের পথে থাকায় রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে আসিয়ানের শক্তি নিরন্তরভাবে বেড়ে চলেছে। আঞ্চলিক বিষয়ে আসিয়ান অধিক থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আসিয়ানের নানা খাতের উন্নয়ন এখনো নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন।

    সবাই জানেন, প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগর সংলগ্ন মালাক্কা প্রণালী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত। বহু বছর ধরে জলদুস্যরা গুরুতরভাবে এই অঞ্চলের সামুদ্রিক পরিবহন উন্নয়নের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলা ঘটনার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, মাদকদ্রব্যের চোরাচালান ও পণ্য হিসেবে মানুষ বিক্রি করাসহ নানা ধরণের অঐতিহ্যিক নিরাপত্তার ওপর হুমকী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারী রোগের প্রকোপসহ বিবিধ সমস্যারও সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের সুনামী আসিয়ানের দেশগুলোকে দুর্যোগ কবলিত করে এবং বার্ডফ্লুর প্রকোপ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। এ সব কারণে আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ উপলব্ধি করেছে যে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আলোচনা ও সহযোগিতার অভাব আসিয়ানের সার্বিক স্বার্থের প্রতিকুল হবে।

    ২০২০ সালে "আসিয়ান কমিউনিটি" প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে আসিয়ান দেশগুলো মতৈক্যে পৌঁছায়। এই কমিউনিটির তিনটি স্তম্ভ হচ্ছে অর্থনৈতিক কমিউনিটি, নিরাপত্তা কমিউনিটি আর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কমিউনিটি। ২০০৬ সালের মে মাসে আসিয়ানের প্রথম প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলন মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালাপুরে অনুষ্ঠিত হয়। এবার হচ্ছে আসিয়ানের নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপুর্ণ অগ্রগতি। সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা একমত হয়েছে যে, তাঁরা ২০২০ সালের আগে আসিয়ানের নিরাপত্তা কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাবে, যাতে আসিয়ান দেশগুলোর আন্তঃদেশীয় অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের ওপর আঘাত হানা যায় এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও দুর্যোগকালীন উদ্ধার তত্পরতায় দক্ষতা বাড়ানো যায়। ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত আসিয়ানের সেবু শীর্ষ সম্মেলনে ২০১৫ সালে আসিয়ান কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

    এবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ানের দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনে আসিয়ানের দশটি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা নিজ নিজ দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা সমস্যা ও ভবিষ্যত উন্নয়নের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সম্মেলন শেষে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা একটি "যৌথ ঘোষণা" ও তিনটি দলিল স্বাক্ষর করেছেন।

    "যৌথ ঘোষণা"য় পরবর্তী আসিয়ানের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতার কাঠামো তৈরী করা হয়েছে। তিনটি দলিল হচ্ছে "প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনের কনসেপ্ট পেপার প্রটোকল", "প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্মেলনের তিন বছরের কর্ম পরিকল্পনা" এবং "প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্মেলনের সম্প্রসারিত কনসেপ্ট পেপার"। এর মধ্যে "প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্মেলনের কনসেপ্ট পেপার প্রটোকল" আসিয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্মেলনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংলাপ ও সিদ্ধান্ত নেয়ার কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। "প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনের তিন বছরের কর্ম পরিকল্পনা"য় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের প্রাধান্য অনুযায়ী সহযোগিতা প্রকল্প উত্থাপিত হয়েছে। "প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনের সম্প্রসারিত কনসেপ্ট পেপারে" আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ আর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের আসিয়ানের বাইরের দেশগুলোর প্রতিরক্ষা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার মূল নীতি ও পদ্ধতি নির্ধারিত হয়েছে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, এবারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনের সফলতা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ঐতিহ্যিক ও অঐতিহ্যিক নিরাপত্তার হুমকী মোকাবেলায় আসিয়ানের দেশগুলো পরস্পরের সহযোগিতাকে জোরদার করছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)