পাকিস্তানের পরিস্থিতিতে চীন উদ্বিগ্ন
চীন পাকিস্তানের পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে, পাকিস্তান স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে । ৪ নভেম্বর পেইচিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিউ চিয়ান ছাও এ কথা বলেছেন ।
পাকিস্তানের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সংবাদদাতাদের প্রশ্ন উত্তর দেওয়ার সময় লিউ চিয়ান ছাও বলেন, চীন পাকিস্তানের পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন, তবে বিশ্বাস করে যে , পাকিস্তান সরকার ও জনগণ নিজেরাই স্বদেশের সমস্যা সমাধান করতে পারবে । পাকিস্তানে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ধারা বজায় থাকবে বলেও চীন আশাবাদী ।
৩ নভেম্বর বিকেলে পাকিস্তান সরকার দেশে জরুরী অবস্থা জারি করেছে। বর্তমান সময়ে যেসব চীনা পাকিস্তানে যাচ্ছেন তাদেরকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে বলেছে ।
যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সাহায্য দেবে কিনা নতুন করে চিন্তাভাবনা করবেঃ রাইস
মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিত্সা রাইস ৪ নভেম্বর জেরুজালেমে বলেছেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ সেদেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার পর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সাহায্য দেয়ার বিষয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করবে।
তবে তিনি পাকিস্তানে মার্কিন সাহায্য বন্ধ হবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন মার্কিন নীতির পরিপন্থী হলে যুক্তরাষ্ট্র কিছু সাহায্য প্রকল্প বন্ধ করে দিতে পারে।
উল্লেখ্য,৩ নভেম্বর পারভেজ মুশাররফ সারা দেশে জরুরী অবস্থা জারি করেছেন এবং একটি আপদকালীণ সংবিধান চালু করেছেন। সম্প্রতি পাকিস্তানে ধারাবাহিকভাবে আত্মঘাতী বোমা হামলার মুখে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে পারভেজ মুশাররফ টেলিভিশন ভাষণে উল্লেখ করেছেন।(লিলু)
পাকিস্তানের পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগ
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডাউনার ৫ নভেম্বর বলেছেন, পাকিস্তানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে মোতায়েন সশস্ত্র তালিবান ও আল-কায়েদা সদস্যরা আরো বেশি চরমপন্থী তত্পরতা চালাতে উদ্বুদ্ধ হবে। আফগানিস্তানে মোতায়েন অস্ট্রেলীয় বাহিনীর নিরাপত্তার জন্য বিপদজনক হবে।
এ দিন ডাউনার নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে এ সব বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে অনেক সশস্ত্র তালিবান লুকিয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া চায় একটি স্থিতিশীল পাকিস্তান।
একই দিন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড তথ্য মাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফের সন্ত্রাস দমনে নেয়া অবস্থানকে সম্মান করেন। উল্লেখ্য যে, ৪ নভেম্বর রাতে প্রেসিডেন্ট মুশাররফের সঙ্গে টেলিফোন করার সময়ে হাওয়ার্ড আশা প্রকাশ করেন যে, কঠিন পরিস্থিতি মুশাররফ সংযম বজায় রাখবেন এবং পাকিস্তানে শিগগির গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসবে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
নেপাল সংবিধান প্রণয়নের অধিবেশনের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবহার করবে
নেপালের অস্থায়ী পার্লামেন্ট ৪ নভেম্বর নেপালের মাওকদী কমিউনিষ্ট পার্টির উত্থাপিত একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী পার্লামেন্টের নির্বাচনে আনুপাতিক দেওয়া হবে।
নেপালের কমিউনিষ্ট পার্টি আরো ঘোষণা করেছে যে, তারা অস্থায়ী পার্লামেন্ট কর্তৃক দেশে প্রজাতন্ত্রী ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি ছেড়ে দিয়েছে।
পার্লামেন্টের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং অস্থায়ী পার্লামেন্ট কর্তৃক দেশে প্রজাতন্ত্রী ব্যবস্থা প্রবর্তন হচ্ছে নেপালের মাওবাদী কমিউনিষ্ট পার্টি ক্ষমতাসীন সাত পার্টির জোটের উত্থাপিত প্রস্তাবের প্রধান বিষয়বস্তু। তবে সাত পার্টি জোট এই প্রস্তাবে মতৈক্যে পৌঁছতে পারে নি বলে ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পার্লামেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।(লিলু)
জরুরী অবস্থা জারি করার লক্ষ্য হচ্ছে দেশ স্থিতিশীল করাঃ শওকত আজিজ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ ৬ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছেন, ৩ নভেম্বর থেকে সারা দেশে জরুরি পরিস্থিতি এবং একটি আপদকালীণ সংবিধান চালুর লক্ষ্য হচ্ছে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা। বিশেষ করে, কেন্দ্র-শাসিত উপজাতি এলাকা এবং উত্তরপশ্চিম সীমান্তের কিছু এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা। এর পাশাপাশি আইন প্রণয়ন, বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনের মধ্যে সুষম সম্পর্ক গড়ে তোলা।
ফিলিস্তিন সরকারের তথ্য বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা প্রেসিডেন্ট মুশাররফের নেওয়া ব্যবস্থার প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করে, এসব ব্যবস্থা গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার,প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দ্রুত সার্বিক গণতন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক হবে।(লিলু)
যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে জরুরী অবস্থা বাতিলে আহ্বান জানিয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কমিটির মুখপাত্র গর্ডন জনভ্লো ৯ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেন, যথা শীঘ্রই সম্ভব পাকিস্তানের জরুরী অবস্থা বাতিল করা উচিত।
এর পাশাপাশি মুখপাত্র বলেন, সহিংস তত্পরতা যাতে বেড়ে না যায় সে জন্যে পাকিস্তান সরকার ও বিরোধি দলগুলোর সংযম বজায় রাখা উচিত।
এশিয়া সফর শেষে ওয়াশিংটন ফিরে যাওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রর্বাট গেটস কলেন, পাকিস্তানের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সন্ত্রাসদমনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি উদ্বিগ্ন।
ভারত অন্যান্য দেশের সঙ্গে শর্তসালেপরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় : প্রলব মুখার্জি
১১ নভেম্বর ভারতের তথ্য মাধ্যমে জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রণব মুখার্জি মুকহেরজী বলেছেন, যদি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ও পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠিগুলো তাদের নিষেধাজ্ঞা বাতিল না করে তাহলে ভারত বিশ্বের কোন দেশের সঙ্গে পরমাণু শক্তি সম্পর্কিত সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করবে না।
১১ নভেম্বর থেকে ভারতের প্রধান মন্ত্রী মনমোহন সিং তাঁর দু'দিনব্যাপী রাশিয়া সফর শুরু করেছেন। সফরকালে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ৫টি চুক্তি স্বাক্ষর করবেন। জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ার সাহায্যে ভারত চাঁরটি পরমাণু শক্তি চালিত বিদ্যুত উত্পাদন কারখানা তৈরী করবে। কিন্তু ভারতের তথ্য মাধ্যমে বলা হয়েছে, মনমোহন সিংয়ের রাশিয়া সফরকালে দু"দেশের মধ্যে পরমাণু শক্তি সম্পর্কিত সহযোগিতামূলক কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না।
মুশাররফ ইতিবাচক ব্যবস্থা নিচ্ছেন : বুশ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ ১০ নভেম্বর টেকসাস অঙ্গরাজ্যে বলেছেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ জরুরি অবস্থা বাতিল করা, সেনা প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করা এবং যথাসময়ে পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। এসব হচ্ছে ইতিবাচক দিক।
এদিন বুশ সফররত জার্মানীর প্রধানমন্ত্রী এ্যান্জেলা মার্কেলের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, আল কায়েদাকে দমনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের লক্ষ্যমাত্রা অভিন্ন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলিতভাবে সন্ত্রাস দমন সম্পর্কিত পাকিস্তান সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাবান। তিনি বলেছেন, আল কায়েদার কয়েক জন নেতাকে আইন অনুসারে শাস্তি দেয়া হয়েছে। মুশাররফের প্রচেষ্টাকে বাদ দিলে এসব সম্ভব হতো না।
মুশাররফ ৩ নভেম্বর সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি এবং অস্থায়ী সংবিধান স্থগিত করেছেন। ৮ নভেম্বর তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচন আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের ফলাফলকে অনুমোদন দিলে তিনি হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। এখন তিনি তার সেনা প্রধান পদ ত্যাগ করবেন। (লিলি)
আগামী বছরের জানুয়ারীতে পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে
আগামী বছরের জানুয়ারীতে পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা হবে।
৩ নভেম্বর পাকিস্তানে জরুরী অবস্থা বলবত্ হওয়ার পর ১১ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ তার প্রথম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন ।
তিনি বলেন , পাকিস্তানে পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী , আগামী ১৫ নভেম্বর সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে । নতুন পার্লামেন্টের নির্বাচন আগামী বছরের জানুয়ারীতে অনুষ্ঠিত হবে ।
তিনি আরো বলেন , প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবার পর তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন । (থান ইয়াও খাং)
|