v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-12 13:50:10    
ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আশা-নিরাশা

cri
    ১১ নভেম্বর ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন । তিনি বলেন, ইরাকে বোমা বিস্ফোরণ ও আত্মঘাতী হামলাসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা অনেক কমে গেছে এবং ধর্মীয় সংঘর্ষও বন্ধ হয়ে গেছে ।

     ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীও মালিকির আশাবাদের সঙ্গে একাত্ম। গত সপ্তাহে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জোসেফ ফিল বলেন, জুন মাস থেকে ইরাকে সহিংস ঘটনা ক্রমশ কমে আসছে এবং বর্তমানে একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে । সংবাদমাধ্যমগুলো অবশ্য মার্কিন ও ইরাক কর্তৃপক্ষের মতো আশাবাদী নয় । তারা মনে করে, সহিংস ঘটনার সংখ্যা কিছুটা কমলেও এর উত্স নির্মূল হয়ে যায় নি । তারা বলেছে , ইরাকের ধারাবাহিক সহিংসতার প্রধান কারণ ধর্মীয় সংঘাত এবং এ সমস্যা এখনো চলছে । ইরাকের অধিকাংশ মানুষ শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত । কিন্তু সাদ্দামের শাসনামলে দেশের ক্ষমতায় ছিল সুন্নী সম্প্রদায় । দীর্ঘ সময় ধরে শিয়া সম্প্রদায় এবং কুর্দী নেতারা অত্যাচারিত হয়েছেন । মার্কিন -ইরাক যুদ্ধ সাদ্দামের রাজনৈতিক ক্ষমতার কাঠামো ভেঙ্গে দেয় । ফলে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকা সুন্নী সম্প্রদায় ক্ষমতা হারায় এবং শিয়া সম্প্রদায় এবং কুর্দী নেতৃত্ব ক্ষমতার অগ্রভাগে চলে আসে । বারবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ইরাকের অভ্যন্তরীণ ধর্মীয় সংঘাত এবং জাতীয় অসঙ্গতি চরম থাকার ধারণ করেছে । চলতি বছর ইরাক সরকারের ওপর তীব্র অসন্তোষের জের ধরে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা মোক্তাদা আল সাদরের সমর্থকরা, সুন্নী সম্প্রদায়ের ইরাকী অ্যাকোর্ডেন্স ফ্রন্টের ৬জন মন্ত্রী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী আয়াদ আলাভির নেতৃত্বাধীন 'ইরাকিয়া লিস্টের' ৫জন মন্ত্রী পরপর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার কথা ঘোষণা করেন । ফলে মন্ত্রিসভার ৪০জন সদস্যের মধ্যে প্রায় অর্ধেক নিজেদের কাজ বন্ধ করে অসহযোগিতা শুরু করেন । এ থেকে বোঝা যায়, ইরাকে ধর্মীয় সংঘাত পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয় নি এবং আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে ।

    এমন কি যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো ঘন ঘন সহিংস ঘটনা ঘটায় সেগুলোও নির্মূল হয় নি । যদিও ইরাকী এবং মার্কিন বাহিনী আল-কায়েদাসহ অন্য উগ্র সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে নির্মূল করতে বহুবার অভিযান চালিয়েছে , কিন্তু সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক মূল থেকে ভেঙ্গে দেয়া সম্ভব হয় নি । কিছু সন্ত্রাসী বিদেশে পেলিয়ে গেছে এবং অন্যরা ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে । গত মাসে বাগাদাদের কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার নেপথ্যে ছিল খুব সম্ভবত আল কায়েদা । পাশ্চাত্য সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, আল-কায়েদার বিদেশে থাকা সদস্যরা এখন সংগঠিত হয়ে পুনরায় সন্ত্রাসী হামলা চালানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

    তাছাড়া, ইরাকে বিদেশী বাহিনী মোতায়েন সেখানকার সহিংসতার আরেকটি কারণ । মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী ২০০৩ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘকে উপেক্ষা করে ইরাক যুদ্ধ সংঘটিত করে । এতে বহু নিরীহ ইরাকী মানুষ হতাহত হয় । এ থেকে ইরাকী জনগণের ভেতরে তীব্র ঘৃণা এবং প্রতিহিংসা জন্ম নিয়েছে । হয়তো এ ঘৃণা থেকেই বহু জাতিক বাহিনী বিশেষ করে মার্কিন বাহিনীর ওপর বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে । ইরাক থেকে বিদেশী বাহিনী প্রত্যাহার না হওযা পর্যন্ত ইরাকীদের প্রতিহিংসা থামবে না । সড়ক বোমা বিস্ফোরণ এবং আত্মঘাতী হামলা ঘটতেই থাকবে ।

    বর্তমানে ইরাক আরেকটি নিরাপত্তা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে । তা হল ১ লাখ সৈন্যের বিশাল তুর্কী বাহিনী তুরস্ক-ইরাক সীমান্তে ইরাকের ভেতরে আক্রমণের জন্য অপেক্ষায় আছে । তুরস্ক সরকারের নির্দেশনা পাওয়ামাত্র ইরাকের পি.পি.কে'র ওপর তারা হামলা চালাবে । এতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে এবং সেখানকার সংঘর্ষ ইরাকের অন্যান্য অঞ্চলের নিরাপত্তার ওপরেরও বড় ধরনের অবনতি প্রভাব ফেলবে । (ছাও ইয়ান হুয়া)