পিকেকে হচ্ছে কুর্দিশদের গেরিলা সংস্থা। এ সংস্থা ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ্য হচ্ছে সশস্ত্র উপায়ে তুরস্ক, ইরাক, ইরান ও সিরিয়ার সীমান্তে কুর্দিশ এলাকাকে একটি স্বাধীন 'কুর্দিস্তান প্রজাতন্ত্র' হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
১৯৮০ সালে তুরস্ক সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার পর পিকেকে তার গোপন তত্পরতা শুরু করে। ১৯৮৪ সাল থেকে এই সংস্থা দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে সরকার বিরোধী তত্পরতায় লিপ্ত হয় এবং তুরস্কের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে অনেকবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সব সংঘর্ষ ৩০ হাজারেরও বেশী লোকের প্রাণহানী ঘটে। গত শতাব্দীর ৯০-এর দশকের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ এই সংস্থাটিকে সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
বর্তমানে এ সংস্থার ৩ হাজার ৫শ' থেকে ৩ হাজার ৮শ' সদস্য প্রধনত উত্তর ইরাকে তত্পর রয়েছে। এই সংস্থার নেতা আবুদুল্লাহ ওকালান ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে তুরস্কের গোয়েন্দা তথ্য কর্মকর্তার হাতে গ্রেপ্তার হয়। পরে দেশদ্রোহের কারণে তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা কোর্ট তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়। তবে তা এখনও কার্যকর করা হয়নি। এখন তিনি তুরস্কের একটি কারাগারে আটক রয়েছেন।
তাকে আটক করার পর এই সংস্থা অনেক বার একতরফাভাবে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছে এবং তুরস্কে এই সংস্থার সরকার বিরোধী সশস্ত্র তত্পরতা ধীরগতিতে চলেছে। তবে তুরস্ক সরকার মনে করে এটা এক ধরনের কৌশল এবং অব্যাহতভাবে তাদের প্রতি নির্মূলীকরণ অভিযান চালানো। ইরাক যুদ্ধের আগে, তুরস্কের বাহিনী অনেকবার উত্তর ইরাক অঞ্চলে প্রবেশ করে সীমান্ত সামরিক অভিযান চালিয়েছে। তবে ইরাক যুদ্ধের পর তুরস্কের বাহিনী সীমান্তে বড় ধরনের কোন সামরিক অভিযান চালায় নি।
২০০৪ সালের মে মাসের শেষ দিকে, এই সংস্থা এক বিবৃতিতে প্রায় ৫ বছরব্যাপী যুদ্ধ বিরতি বন্ধ এবং তুরস্কের বাহিনীর ওপর হামলার কথা ঘোষণা করে। তারপরে, তুরস্কের হামলার ঘটনা অব্যাহতভাবে চলছে। বিশেষ করে এ বছর, কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির যোদ্ধারা ইরাকের উত্তরাঞ্চল থেকে ইরাক-তুরস্ক সীমান পার হয়ে তুরস্কের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ওপর আঘাত হেনেছে।
কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির হামলাকে দমন করার জন্য, তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী সশস্ত্র জংগীদেরকে নির্মূলের লক্ষ্যে তুরস্কের সামরিক বাহিনী ১২ এপ্রিল মাসে ঘোষণা করেছে যে, উত্তর ইরাকে এই সশস্ত্র সংস্থার ওপর তারা চরম আঘাত হানবে।
|