v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-07 16:12:06    
আত্মঘাতি হামলায় আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের ৬জন সদস্য নিহত

cri
    ৬ নভেম্বর আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশে সংসদ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের ওপর আত্মঘাতি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কমপক্ষে ৬জন পার্লামেন্ট সংসদ সদস্যসহ শতাধিক লোক হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই ছিল শিশু। ২০০১ সালে তালিবানের ক্ষমতাচ্যুতির পর এবারই আফগানিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

    বাঘলান প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, এ বিস্ফোরণ প্রাদেশিক রাজধানী পুল-ই-খুমরি শহরের একটি চিনির কলের প্রধান ফটকে ঘটেছে। এ সময় স্থানীয় একটি স্কুলে ছাত্রছাত্রী, এলাকার লোকজন, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকই সেখানে আফগান পার্লামেন্টের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলকে সংবর্ধনা জানাতে মিলিত হয়েছিলেন। আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেন, এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩০জন নিহত এবং ৮০জনেরও বেশী লোক আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলের মুখপাত্র মুস্তফা কাজিমিসহ আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের ৬জন সদস্য। তবে বাঘলান প্রদেশের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানের প্রকাশিত এক অসমাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫০জন নিহত হয়েছে। আহতদের অবস্থা আশংকা হওয়ায় নিহতদের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

    বোমা বিস্ফোরণের পর পরই, প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ হতাহতদের উদ্ধারসহ সহায়তার কাজ শুরু করে দেয়। আফগানিস্তান সরকার হেলিকপ্টারের সাহায্যে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বাঘলানে মোতায়েন ন্যাটোর আন্তর্জাতিক বাহিনীও সক্রিয়াভাবে ত্রাণ কাজে তত্পরতা চালায়।

    এ দিন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটা হচ্ছে ইসলাম ও মানবজাতির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তত্পরতা এবং আফগানিস্তানের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি একটি চ্যালেন্জ। তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবিলম্বে হামলা ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

    আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী এক বিবৃতিতে এই 'সন্ত্রাসী হামলার' নিন্দা করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ৬ নভেম্বর এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানে এ আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছেন।

    এ পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি অথবা সংগঠন এ বোমা বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করে নি। আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর একজন মুখপাত্র মনে করেন, এবারের বোমা বিস্ফোরণ এবং এর আগে তালিবানের হামলা প্রায় একই ধরনের। নিরপরাধ জনগণ ও আফগানিস্তানের আইন প্রণয়ন সংস্থার বিরুদ্ধে এ হামলা হলো 'কাপুরুষোচিত তত্পরতা'। কিন্তু তালিবানের একজন মুখপাত্র এই সশস্ত্র হামলার কথা অস্বীকার করেছেন।

    বাঘলান প্রদেশ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তর দিক থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দীর্ঘকাল ধরেই আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে বাঘলান প্রদেশটি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ প্রদেশ হিসেবে বিবেচিত হতো। সেখানে সশস্ত্র জংগীদের তত্পরতাও তুলনামূলকভাবে কম ছিল। বিশ্লেষকগণ মনে করেন, এবারের আত্মঘাতি হামলা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, আফগানিস্তানের সম্মুখীন নিরাপত্তা হুমকি দক্ষিণ ও পূর্ব আফগানিস্তান থেকে ধাপে ধাপে উত্তরাঞ্চলেও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন হুমকির মুখে পর্যবসিত।

    এ বছর, যদিও রাজনীতি ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আফগানিস্তানে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবুও জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসী হামলা গত বছরের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ বছর কমপক্ষে ১২০টি আত্মঘাতি বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে ২শ'রও বেশি লোক নিহত হয়েছে। এবারের বিস্ফোরণের এক দিন আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬২তম অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাবে আফগানিস্তানে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অব্যাহতভাবে আফগান সরকারকে নিরাপত্তা সমস্যা সমাধানে সহায়তার আহ্বান জানায়।

    বিশ্লেষকগণ উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি আফগানিস্তানে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসী হামলায় প্রমান হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক অভিযানের পরও আফগানিস্তানের পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি হয়নি। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতির জন্য আফগান সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো অনেক কাজ করতে হবে।