v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-06 18:54:24    
কবি শু ছাই

cri

    কিছু দিন আগে ৮৩ বছর বয়স্ক ফরাসী কবি ইভস বোনেফোয় ২০০৭ সালের ইউরোপের সাহিত্য ক্ষেত্রের বিখ্যাত "দি ফ্রানজ কাফকা প্রাইজ"পেয়েছেন। এ খবর শুনে ৪২ বছর বয়স্ক চীনা কবি শু ছাই খুব খুশি। কারণ, বহু বছর আগেই তিনি ইভস বোনেফোয়ের সাহিত্য কর্মের অনুবাদ চীনা ভাষায় করে চীনা জনগণকে তার সম্পর্কে জানাতে পেরেছেন।

    পেইচিংয়ের কেন্দ্রস্থলে একটি ভবনে কবি শু ছাই'র বাসা। তার টেবিল জুড়ে আছে ফ্রান্সের বিভিন্ন ধরনের সাহিত্যের বই ও ম্যাগাজিন।

    শু ছাই চীনের বিদেশী সাহিত্য গবেষণাগারে কাজ করেন। এর আগে তিনি আফ্রিকায় একজন কূনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তাছাড়া তিনি শিল্প কোম্পানিতেও ব্যবস্থাপনার কাজ করেছেন। সাহিত্যের প্রতি তা এতো আগ্রহ যে তিনি আবার গবেষণা ও অনুবাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। শু ছাই বলেন:

    "মিডল স্কুল থেকেই আমি কবিতা লিখতে শুরু করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর আমি সহপাঠী'র সঙ্গে একটি সাহিত্য কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করি। টেস্ট নামে আমাদের নিজেদের ম্যাগাজিনও ছিল। তখন থেকে আমি সিয়ারিয়াসলি কবিতা লিখতে শুরু করি।"

     ৪ বছর বয়সের সময় শু ছাই'র মা মারা যান। দুই বছর পর তার দাদীও মারা যান। এসব দুঃখের স্মৃতি শু ছাই'র জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ১৯৮৩ সালে শু ছাই পেইচিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। তিনি ফরাসী ভাষা শিখতে শুরু করেন। তখন চীনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের মাত্র শুরু । চীনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পেইচিংএ তখন বিদেশের প্রচুর সাহিত্য কর্ম আসতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের কবিতা লেখার আগ্রহও বেড়ে যায়। শু ছাই তখন থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেন। তিনি বলেন:

    "১৯৮৬ সালে আমার কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে পেইচিং নর্মাল ইউনিভার্সিটি "আধুনিক চীনের কম্পাস কবিতা সংগ্রহ" নামে একটি বই প্রকাশ করে। আমার কবিতা "দুটি পাখি" তারা বেছে নিয়ে প্রকাশ করে। আমি এই কবিতাটি খুব পছন্দ করি।"

    বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে শু ছাই চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগে চাকরি পান। ফরাসী ভাষা জানেন এই জন্য বিভাগ তাকে সেনেগালে পাঠিয়ে দেয়। সেনেগালে চীনা দূতাবাসে একজন কূটনীতিবিদ হিসেবে তিনি চার বছর কাজ করেছেন। এই অভিজ্ঞতা শু ছাই'র জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেনঃ

    "অনেকেই মনে করে আফ্রিকা খুব অনুন্নত। কিন্তু আসলে আমি মনে করি তা অনুন্নত নয়, বরং প্রাকৃতিক। সেখানে মানব জাতি'র আর্টিফেশল কাজ খুব কম এবং সভ্যতার নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ বেশি না। তাদের সংস্কৃতি খুব ইতিবাচক। তা আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। তা হলো বাস্তবতার ক্ষেত্রে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হলেও জীবনে কিছু আনন্দ পাওয়া।"

    চার বছরের কাজ শেষে তিনি ১৯৯৪ সালে চীনে ফিরে এসেছেন। পরে তার কবিতার বই "দান তু জা" অর্থাত "একা একা" প্রকাশিত হয়। এতে ১০ বছর ধরে লেখা শু ছাই'য়ের প্রায় ১৫০টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একজন কবি হিসেবে শু ছাই নিজের ভাবনা নিয়ে বেশ সতর্ক। তিনি বলেন:

    "জীবনের ওপরে ভালবাসা হলো আমার কবিতা । তাই আবেগের দিকে আমি বেশি দৃষ্টি দেই। আমি মনে করি, কবিতা দিয়ে জীবনের সব কথা বলা যায়। আমি কবিতার উপর খুব আশাবাদী। কবিতার সত্যতা থাকবে পরের কবিতায়। তাই সব সময় কবিতা লেখার আগ্রহ রয়েই যায়।"

    আরো মনোযোগ দিয়ে কবিতা লেখার জন্য তিনি তার চাকরি ছেড়ে দিয়ে চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমির বিদেশী সাহিত্য গবেষণাগারে গবেষণা করতে শুরু করেন। তিনি কবিতা লেখার পাশা পাশি অনুবাদের কাজও করছেন। তিনি ফ্রান্সের কিছু খুব বিখ্যাত সাহিত্য কর্মের অনুবাদ করেছেন। শু ছাই বলেন ফরাসী কবির কর্ম থেকে তিনি নিজের হৃদয়ের ভাবনার বেশ কিছ উপাদান খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেন:

    "আমি শুধু আমার প্রিয় কবির কবিতা অনুবাদ করি। আমি চাই আরো বেশি চীনারা তাদের কবিতা উপভোগ করতে পারুক। পাশা পাশি আমি নিজেও অনেক শিখতে পারছি।"

    শু ছাই বলেন, অবচেতনভাবেই তিনি কবিতার সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন। একটির পর একটি কবিতা লিখতে গিয়ে তিনি জীবনকে এতো উপভোগ করেন যে তার জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট তখন আর থাকে না। কেউ কেউ মনে করেন চাকরি ছেড়ে এতো মনযোগ দিয়ে কবিতা লেখা বোকার কাজ। কিন্তু শু ছাই মনে করেন একজন কবি হিসেবে তার জীবন দিয়ে কবিতা লিখতে পারলে নিশ্চয়ই এক দিন তার কবিতা প্রিয় পাঠকের সমর্থন পাবেই। (ইয়াং ওয়েই মিং)