v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-11-07 20:26:14    
চুং সানের বিদেশিরা বললেন , চীনের জীবন খুব আনন্দের

cri

    চীনের কুয়াং তুং প্রদেশের ছোট্ট একটি শহর চুং সান । আয়তনে ছট হলেও বিদেশি বন্ধুদের দারুণ আকর্ষণের জায়গা এই চুং সান । কেন তাদের এই আকর্ষণ । কেমন কাটছে বিদেশী বন্ধুদের জীবন? আসুন , আজকের ভিন দেশির চোখে অনুষ্ঠানে তাদের কথা শুনি । পরিবেশন করছি আমি শুয়েই ফেই ফেই ।

    চুং সান শহরে ড্রাগন নাচের ইতিহাস অনেক প্রাচীন । সেখানে ড্রাগন নাচের একটি নারী দল আছে , তারা খুবই বিখ্যাত । কিছু বিদেশি বন্ধু তাদের সুনাম শুনে তাদের কাছ থেকে ড্রাগন নাচ শিখতে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠলেন । জোন তাদেরই একজন। তিনি কানাডা থেকে চুং সানে এসে সেখানে একটি বাতি কোম্পানী খুলে বসেছেন । অনেক দেশের ব্যবসায়ী এখান থেকে বাতি কেনেন । ৫ বছর আগে প্রায় ৬০ বছর বয়সী জোন কানাডায় তার কারখানা বন্ধ করে একা একাই চুং সান শহরে এসে নতুন এই কোম্পানীটি খোলেন । তিনি বলেন :

    এখানে আমি নিজের কোম্পানী খুলেছি । একাই একটি অপরিচিত দেশে থাকলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় । আমার জন্য প্রথম সমস্যা হল ভাষা । তবে এখানকার ব্যবসা বাণিজ্যের পরিবেশ সত্যিই ভালো ।

    চুং সানের সাংস্কৃতিক আবহ খুব বৈশিষ্টময় । সেখানে লোকেরা কুয়াং তুং অপেরা পছন্দ করে । অনেক কুয়াং তুং অপেরা অভিনয় দল এখনোও প্রাচীনকালের গল্প পরিবেশন করে । জোন ড্রাগন নাচ শেখার পাশা পাশি কুয়াং তুং অপেরাও শিখতে চান । তবে অপেরায় অভিনয় করা ড্রাগন নাচের চেয়ে বেশি কঠিন । দোভাষীর মাধ্যমে জোন অপেরার অর্থ বুঝে নেন । জোন হয়ত কুয়াং তুং অপেরা শেখার প্রথম বিদেশি ছাত্র। তাই অপেরা দলের পরিচালক তাকে অনেক সাহায্য করে । কুয়াং তুং অপেরা শেখার পর জোন মঞ্চে উঠে দর্শকদেরকে তার অভিনিত অপেরা দেখিয়েছেন । প্রথম অপেরা অভিনয় জোনের জন্য একটি বড় ঘটনা । সে দিনের কথা কখনোই ভুলবেন না তিনি ।

    জোন চুং সান শহরের জীবন খুব পছন্দ করেন , এখানে মানুষে মানুষে দূরত্ব কম , জীবনও খুব আরামদায়ক । তিনি বলেন :

    আমি এখানকার জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চাই এবং নিঃসঙ্গতা দূর করতে চাই । যখন একা একা অপরিচিত পরিবেশে থাকি , তখন নিঃসঙ্গ লাগে । আমি চুং সানে এসে শুধু নিজের কোম্পানী সফলভাবে খুলেছি তাই নই , আমি এখানে জীবনের অর্থও খুঁজে পেয়েছি । এখন আমি মাঝে মাঝে বাইরে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করি । আমি এখানে কাজ করি , তাই এখানকার সব কিছু জানতে চাই । চুং সান আমার দ্বিতীয় মাতৃভূমি হয়ে গেছে ।

    জোন ছাড়া আরেক জন বিদেশি বন্ধু চুং সানে থাকেন । তিনি সেখানে একটি পানশালা খুলেছেন। এটি চুং সানের একমাত্র পানশালা যার মালিক বিদেশি । এখানে অনেকে নিজের প্রিয়জনকে খুঁজে পেয়েছেন । পানশালার মালিক গেরি , তিনিও একজন ক্যানাডিয়ান । গেরি ও তার এখনকার স্ত্রীর পরিচয় হয় এই পানশালায় । ১৯৯৮ সালে পানশালা খোলার বছরেই গেরি দেখা পান তার ভাবী স্ত্রীর। এখন গেরি ও তার স্ত্রী দু'ছেলের জনক-জননী । গেরি সংবাদদাতাকে বলেন :

    এ বারে আমার অনেক বন্ধুর আমার মত ঘটনা ঘটেছে । তারা নিজের প্রিয়জনকে খুঁজে পেয়েছেন এখানে এবং পরে বিয়ে করেছেন । আমি আর আমার স্ত্রীর একটি পরিকল্পনা আছে , কয়েক সপ্তাহ পর আমরা একটি পার্টি দেবো , যে বন্ধুরা আগে আমাদের বারে এসেছেন বা এই বারে প্রেম শুরু করেছেন , তাদেরকে আমন্ত্রণ করে একসঙ্গে অনেক মজা করবো।

    বারের জানালায় বন্ধুদের ছবি টানিয়ে রেখেছেন গেরি । ছবিগুলো তাদের আনন্দের মুহূর্তে তোলা। গেরির ছোট ছেলে ছবি দেখে সবাইকে চিনতে পারে । চুং সানে গেরির এ বার একমাত্র বিদেশী মালিকের বার বলে চুং সানে থাকা বিদেশিদের খুব প্রিয় জায়গা এটি। তারা সময় পেলে এ বারে এসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারে , আয়েশ করে এবং নতুন নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হয় । তারা এ বারটিকে চুং সানে তাদের বাড়ি হিসেবে মনে করে । গেরির বন্ধু গ্লেন ম্যাকডোনাল্ড বলেন :

আমি চীনকে পছন্দ করি এবং ভালোবাসি । তবে মাঝে মাঝে আমার নিজের দেশের কথা খুব মনে পড়ে । তাই আমি এ বারে আসি । এ বারে আমি নিজের দেশের মত অনুভুতি পাই । এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে এবং অনেক বিদেশিও এখানে আসে । তাই আমি এখানে আসতে পছন্দ করি , এটা ঠিক যেন নিজের দেশের একটা বার ।

বার ছাড়াও গেরি চুং সান শহরে বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে একটি ফুটবল দল তৈরি করেছেন । চুং সানের কিছু প্রতিযোগিতায় তারা খুব ভালো করেছে। সবাই এই সাফল্যে খুব খুশি , এতে সবার মধ্যে দূরত্বও কমে গেছে । খেলায় জিতলে সবাইকে গেরির বারে গিয়ে উদযাপন করতে হয় । এটা যেন একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে । দলের সদস্যরা অনেক আগে থেকেই গেরিকে চুং সানের মানুষ হিসেবে মনে করে । এ দিকে গেরিও মনের আনন্দে সবার সঙ্গে তাদের অভিন্ন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন ।